ঐশীর চরিত্রটি ‘মরুভূমির মাঝে ঝর্ণার মত’

জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের মুকুট জিতে যিনি নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছিলেন ২০১৮ সালে। যেদিন মাথায় উঠেছিল সুন্দরীর মুকুট সেদিন থেকেই সিনেমার অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন ঐশীর। একারণে কয়েকটি বিজ্ঞাপনে তাকে দেখা গেলেও নাটক কিংবা টেলিফিল্মে দেখা যায়নি তাকে।

রুদ্র রুদ্রাক্ষবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2021, 06:42 AM
Updated : 8 April 2021, 06:42 AM

এরপর প্রত্যাশামত ডাক পান ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমায়। এটিতে তার তার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন আরিফিন শুভ। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল  গতবছরের রোজার ঈদে। কিন্তু অভিষেকেই তিনি মুখোমুখি হলেন অতিমারির।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সিনেমাটি মুক্তি দেয়া সম্ভব হয় নি। এরপর কেটে গেছে এক বছর। টিম মিশন এক্সট্রিম প্রস্তুতি নিচ্ছিলো আসন্ন রোজার ঈদে সিনেমাটি মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু বাংলাদেশে আবারও বেড়ে গেছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। দৈনিক শনাক্ত রোগির সংখ্যা পৌঁছে গেছে ৭০০০ এর ঘরে। এই অবস্থায় সাত দিনের পরীক্ষামূলক লকডাউন দিয়েছে সরকার। মিশন এক্সট্রিমের মুক্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে আবারও সংশয়। জীবনের প্রথম সিনেমা তাই স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়ার কথা ঐশীর। ঐশীর ভাবনা জানালেন নিজেই গ্লিটজকে!
নবাগতা ঐশীকে এই বাস্তবতা কতটা মানসিক চাপে ফেলল? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “প্রথম সিনেমা, প্রত্যাশাও অনেক। পরীক্ষার আগে যেমন চাপ থাকে তেমন  চাপ মুক্তির তারিখ ঘোষণার পরে অনুভব করেছি। কিন্তু বারবার তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই একটু মন খারাপ হয়েছে ঠিকই কিন্তু সময়টাতো মহামারির। এখন অনেক কিছুই আগের মত হবে না। অনেক কিছুই নানাবিধ সংশয় ও সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাবে। মেনে নিয়েছি। সিনেমা মুক্তির চেয়ে স্বাভাবিক পৃথিবীতে ফেরার আকুতি এখন অনেক বেশি। অন্য কোন কারণে মুক্তির তারিখ পেছালে হয়ত ভেঙে পরতাম। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি তো প্রতিটি মানুষের সংকট। সঙ্কটে স্বপ্ন ভাঙলে খুব বেশি চাপ লাগে না’’।
আসন্ন ঈদে মিশন এক্সট্রিমের মুক্তি নিয়ে এখনও আশাবাদি ঐশী। বললেন, ‘আমার বিশ্বাস মানুষ সচেতনতা দিয়ে করোনাভাইরাসকে জয় করবে। আমরা সবাই সচেতন হলে আসুন রোজার ঈদের আগেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তখন হয়ত মুক্তি পেতেও পারে সিনেমাটি’।
কিন্তু উল্লেখযোগ্য প্রচারণা ছাড়া সিনেমা মুক্তি পেলে তা কতটুকু সাড়া ফেলতে পারবে?

এ প্রশ্নে ঐশী বলেন, “প্রচার মাধ্যমের সোনালী যুগে এসে প্রচারণা অবশ্যই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লকডাউনের আগে সিনেমার প্রযোজকের সাথে কথা হয়েছিল। তিনি দেশের বাইরে আছেন। বলেছিলেন দেশে ফিরে পুরোদমে প্রচারণার কাজ শুরু হবে। কিন্তু শুরু হয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধকতা আরেকবার।।

এ অবস্থায় আসন্ন রোজার ঈদে সিনেমাটি মুক্তি পেলেও খুব বেশি প্রচারণার সুযোগ থাকছে না। কিন্তু আমার বিশ্বাস এরপরেও এটি দর্শকদের হলে টানতে পারবে। কারণ মিশন এক্সট্রিমের গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনয় সব মিলিয়ে দুর্দান্ত কিছু একটা হয়েছে। এই সিনেমার প্রচারক হবে দর্শকরাই। একবার যিনি সিনেমাটি দেখে বের হবেন তার মুখের গল্পে আরও দশজন এটি দেখতে আসবেন’’।
মিশন এক্সট্রিমে ঐশীকে কেমন রূপে দেখা যাবে- এমন প্রশ্নে ঐশী হাসলেন। বললেন, “আমার পরিচালক বলেছিলেন আমার চরিত্রটি মরুভূমির মাঝে ঝর্ণার মত। ঝর্ণা কি মারদাঙ্গা না শান্ত এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে মিশন এক্সট্রিম দেখতে হবে’’।
অভিষেকে অতিমারির ধাক্কা সহ্য করার মত সাহস কীভাবে জন্মালো সেটি জানেন না ঐশী। বললেন, “সিনেমাটি মুক্তির জন্য এক বছরের এই অপেক্ষা আমাকে মানসিকভাবে একটুও দুর্বল করে নি। এটা ভেবে অবাকও হয়েছি মাঝে মাঝে। এই সাহস কীভাবে জন্মালো জানি না। তবে এটা আমার জীবনের জন্য একটা ধৈর্যের পাঠ। আশা করছি যেদিন দর্শকের সামনে মিশন এক্সট্রিমের পর্দা উন্মোচিত হবে সেদিন জন্ম নেবে এক অন্য ঐশী’’।