এবার বিদায় নিলেন মার্কিন অভিনেত্রী ক্লোরিস লিচম্যান

আটবার এমি অ্যাওয়ার্ড জয়ী অভিনেত্রী ক্লোরিস লিচম্যানের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2021, 10:18 AM
Updated : 28 Jan 2021, 10:18 AM

কমেডি কিংবদন্তি, টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দি ম্যারি টেইলার মুর শো’র জন্য আট বার এমি এবং ‘দি লাস্ট পিকচার শো’ ছবির জন্য অস্কার জয়ী অভিনেত্রী ক্লোরিস লিচম্যান বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার এনসিনিটাস’য়ে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।

লিচম্যানের মুখপাত্র জুলিয়েট গ্রিনের বিবৃতি থেকে রয়টার্স জানায়, তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

বিবৃতিতে গ্রিন বলেন, “ক্লোরিসের মতো অভিনেত্রী আর কেউ ছিলেন না। একদৃষ্টিতে তিনি যে কারও হৃদয়ে দাগ ফেলে দিতে পারতেন, আর যতক্ষণ না চোখের পানি আসে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি হাসাতেন। তিনি যে কি বলবেন তা কখনও আন্দাজ করা যেত না। তার এই অপ্রত্যাশিত গুণ সত্যি জাদুর মতো।”

মার্কিন পরিচালক মেল ব্রুকস’য়ের তিনটি কমেডি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ক্লোরিস নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পর্দায় কাপিয়ে বেড়িয়েছেন। ৮২ বছর বয়সে টেলিভিশন রিয়েলিটি শো ‘ড্যান্সিং উইথ দি স্টার্স’য়ে অংশ নেন। ২০১৯ সালে পুনরায় নির্মিত কমেডি ধারাবাহিক ‘ম্যাড অ্যাবাউট ইউ’তে অভিনয় করেন তিনি।

১৯৭৪ সালের ‘ইয়ং ফ্র্যাঙ্কেনেস্টাইন’ ধারাবাহিকে ফ্রাও ব্লুখার চরিত্রের কথা উল্লেখ করে ব্রুকস টুইটারে লেখেন, “ক্লোরিসের ‘ফ্রাও ব্লুখার’ চরিত্রটি কখনই ভোলার নয়। যতবার আমি এই নাম শুনবো ততবারই আমার কানে সেই ঘোড়ার ডাক ভেসে আসবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের ডে মোয়েন’য়ে বেড়ে ওঠা ক্লোরিস নিউ ইয়র্কের ‘অ্যাক্টরস স্টুডিও’তে মার্কিন পরিচালক এলিয়া কাজানের কাছে শিক্ষা লাভ করেন। যেখানে তার সহপাঠী ছিলেন আরেক কিংবদন্তি অভিনেতা মার্লোন ব্রান্ডো।

১৯৪০ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করা এই অভিনেত্রীর প্রথম দিকের উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আছে ক্যাথেরিন হেপবার্নের সঙ্গে ‘অ্যাজ ইউ লাইক ইট’ নাটকে মঞ্চে অভিনয়। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন ও সিনেমায় ছোটখাট চরিত্রে কাজ করা শুরু করেন সেই সময়ে।

১৯৫০ সালের টিভি সিরিজ ‘ল্যাসি’তে মা’য়ের ভূমিকায় অভিনয় করে ক্লোরিস খ্যাতি অর্জন করেন। ‘ম্যারি টেইলার মুর শো’র জন্য ১৯৭৪ ও ’৭৫ সালে জয় করেন এমি অ্যাওয়ার্ড।

১৯৯৮ সালের ‘প্রমিসড ল্যান্ড’য়ে অভিনয়ের জন্য একবার এবং ‘ম্যালকম ইন দি মিডল’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে ২০০২ ও ২০০৬ সালে দুবার এমি জয় করেন।

১২বার মনোনীত হওয়া এই অভিনেত্রী ‘ডে টাইম এমি’ জয় করেন ১৯৭২ সালে।

চলচ্চিত্র জগতেও তার রয়েছে দক্ষ পদচারণা। উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে ১৯৭১ সালে ‘দি লাস্ট পিকচার শো’তে অভিনয়ের জন্য তিনি জয় করেন অস্কার।

বয়সের কারণে তার কাজে গতি কিছুটা কমে যায় ২০০৮ সাল থেকে। বহুদিন ধরেই তিনি ছিলেন শাকাহারী। আর এই কারণে ১৯৯৭ সালে ‘অল্টারনেটিভ হেল্থ’ ম্যাগাজিনে তিনি নগ্ন হয়ে প্রচ্ছদ মডেল হয়েছিলেন, তবে তার দেহ বিভিন্ন রকম ফলের ছবি আঁকার মাধ্যমে ঢাকা ছিল।

২০১০ সালে এই বয়সেও ব্যস্ত থাকার রহস্য কী? নিউ ইয়র্ক টাইমস’য়ের এক সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেন, “ব্যস্ত’ শব্দটা আমি পছন্দ করি না। কারণ আমি সেভাবে জীবন চালাই না। কাজ আমাকে আনন্দ ও উত্তেজনা দেয়, সতেজ রাখে। তাই কাজকে কাজ হিসেবে ভাবি না।”

পরিচালক প্রযোজক রবার্ট ইংলান্ডের সঙ্গে ক্লোরিস বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৫৩ সালে। তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে ১৯৭৯ সালে। পাঁচ সন্তানের জননী এই অভিনেত্রী এরপর আর বিয়ে করেননি।