অনটন: ৭ কোটি টাকা ‘অনুদান’ পেল এফডিসি

লোকসানের মুখে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনকে (বিএফডিসি) কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৭ কোটি টাকা ‘অনুদান’ দিয়েছে সরকার।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2021, 08:15 AM
Updated : 4 Jan 2021, 09:04 AM

স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানটির ২৬১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে ১৮ কোটি টাকা চেয়ে গত বছরের মে মাসে আবেদন করেছিলেন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন।

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে এফডিসিকে ৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (বাজেট-১) মনিরুল ইসলাম জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেতন-ভাতা বাবদ এফডিসিকে এই সপ্তাহেই ৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে; ইতোমধ্যে সেই টাকা উত্তোলনও করেছেন তারা।”

জুলাইয়ে বেতন-ভাতা বাবদ ১৮ কোটি টাকার সঙ্গে অবসরে যাওয়া এফডিসির ৭২ কর্মীর আনুতোষিক (গ্রাচুইটি) ও ছুটির নগদায়ন বাবদ পাওনা ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল এফডিসি।

আবেদনের ব্যাখ্যায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, এফডিসির আর্থিক সঙ্কটের কারণে নিজস্ব অর্থায়নে বেতন পরিশোধ করতে না পারায় সরকারের কাছে অর্থ চাওয়া হয়েছে।

গত বছরের মে মাসের শুরুর দিকে অর্থ চেয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন পাঠিয়েছিলেন নুজহাত ইয়াসমিন; তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মনিরুল ইসলামের স্বাক্ষরে আবেদনটি ৮ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল।

এর আগে গত বছরের মে মাসেও ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ‘অনুদান’ নিয়ে মার্চ ও এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছে এফডিসি। অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে অগাস্ট পর্যন্ত বেতন দিতে পারলেও সেপ্টেম্বর থেকে ফের পুরানো সঙ্কটেই ধুঁকছে প্রতিষ্ঠানটি।

চলচ্চিত্রের শুটিং কমে যাওয়া ও অব্যবস্থাপনাসহ নানা জটিলতার জেরবারে গত পাঁচ বছর ধরে আর্থিক সঙ্কটের মুখে নিজস্ব তহবিল থেকে কর্মীদের বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে বছর বছর অনুদানের আশ্রয় নিয়েছে এক সময়ের লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি।

২০০৫ সালের দিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনও কোনও বছর ৮০ লাখ টাকার মতো আয়করই দিয়েছে এফডিসি।

২০০৬ সাল থেকে লোকসান শুরু হলেও কর্মীদের বেতন-ভাতা নিজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধের সামর্থ্য ছিল প্রতিষ্ঠানটি। তার এক দশকের মাথায় ২০১৫ সাল থেকে কর্মীদের বেতন পরিশোধে প্রায় পুরোপুরিই অনুদানের উপর নির্ভরশীল হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতি বছরই ঘাটতি মেটাতে ‘ইকুইটি’ হিসেবে এফডিসিকে এ অনুদান দেওয়া বলে বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

“ইকুইটি মানে অনুদান হিসেবেই এ অর্থ দেওয়া হয়। আমরা যেহেতু অটোনমাস বডিকে সরাসরি অনুদান দিতে পারি না। সেকারণে ইকুইটি হিসেবে দেওয়া হয়। যার ফলে এফডিসিতে সরকারের শেয়ার বাড়ল।”