প্রয়াত ইংরেজ গায়ক জর্জ মাইকেলের কালজয়ী গান ‘লাস্ট ক্রিস্টমাস’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৪ সালে। বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়তা পাওয়া গানটি কখনও তালিকার শীর্ষে আসেনি। তবে এবার সব রেকর্ড ভেঙে সবার ওপরে জায়গা করে নিয়েছে গানটি।
যুক্তরাজ্যের অফিসিয়াল চার্ট ডটকম’য়ের সূত্র ধরে গ্রিকসিটিটাইমস ডটকম জানায়, “প্রকাশ পাওয়ার ৩৬ বছর পর জর্জ মাইকেলের ‘লাস্ট ক্রিস্টমাস’ গানটি অবাক করে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে গত সপ্তাহ থেকে। সেই সঙ্গে হয়েছে ৯২ লক্ষ স্ট্রিমস।”
অফিসিয়াল চার্ট ডটকম আরও জানায়, এটা ছিল সেরা ব্যবসা সফল একটি গান। তারপরও এর আগে কখনই তালিকার শীর্ষে যেতে পারেনি।
এই গায়কের বহু জনপ্রিয় গান থাকার পরও খুব বেশি তিনি তালিকার শীর্ষে অবস্থান করেননি। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া তার ‘জেসাস টু এ চাইল্ড’ গানটির পর আবারও তিনি তালিকার শীর্ষে এলেনে। সেই হিসেবে বলা যায় ২৪ বছর পরেও এই ইংলিশ গায়কের জনপ্রিয়তা ফুরিয়ে যায়নি।
ক্রিস্টমাসকে কেন্দ্র করে বিরহ-ব্যথার গানটি ছিল ‘ওয়্যাম’ প্রজেক্টের অংশ। যা ছিল জর্জ মাইকেল ও তার বন্ধু অ্যান্ড্রু রিজলি’র দ্বৈত প্রয়াস। মাইকেল মাত্র ২৪ বছর বয়সে গানটি লিখেছিলেন।
১৯৮৪ সালে লন্ডনের অ্যাডভিশন স্টুডিওতে গানটি রেকর্ড করা হয়েছিল। সেখানকার শব্দ প্রকৌশলী ক্রিস পোর্টার একে ‘কষ্টসহিষ্ণু’ কাজ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। কারণ মাইকেল গানটিকে এককভাবেই তৈরি করার জন্য জোর দিয়েছিলেন। নিজেই সব বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন। এমনকি ‘ওয়্যাম’ বন্ধু রিজলিকেও তিনি সঙ্গে নেননি।
১৯১৭ সালে এই গানের সৃষ্টির গল্প করতে গিয়ে রিজলি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা জর্জে বাসায় টিভি দেখতে দেখতে টুকটাক খাওয়া দাওয়া করছিলাম। হঠাৎ জর্জ উপরতলায় চলে গেল। ঘণ্টাখানেক হয়ে গেল তার নামার লক্ষণ নেই।”
“তারপর যখন আসলো তখন সে খুবই উত্তেজিত। মনে হল সে যেন একটা সোনার খনি পেয়েছে।”
“সে আমাকে তার পুরানো ঘরে নিয়ে গেল। সেখানে আমরা ছোটবেলায় সময় কাটাতাম। সেই ঘরে একটা কিবোর্ড আর রেকর্ড করার যন্ত্র ছিল। সেখানেই সে গানটির প্রথম অংশ শোনায়, যা ছিল সত্যি ব্যাকুল করার মতো সুর।”
অবাক করার ব্যাপার হল ক্রিস্টমাসের দিনেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন এই বিখ্যাত গায়ক। ১৯১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিশ্বের ভক্তদের কাঁদিয়ে ৫৩ বছর বয়সে তিনি অন্য জগতে পাড়ি জমান।
‘লাস্ট ক্রিস্টমাস’য়ের বর্তমান সাফল্যের আগে রেকর্ড ধরে রেখেছিল গায়ক টনি ক্রিস্টি’র ‘ইজ দিস দি ওয়ে টু’ গানটি। যা প্রকাশের ৩৩ বছর পর তালিকার শীর্ষ স্থান দখল করে।
অ্যান্ড্রু রিজলি’র পাশাপাশি জর্জ মাইকেলের পরিবারের সদস্যরাও ‘লাস্ট ক্রিস্টমাস’য়ের সাফল্যে আনন্দিত।