হাসপাতালের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, সৌমিত্রর রক্তে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রায় তারতম্য ঘটেছে। বয়স ও নানা আনুষঙ্গিক রোগের কারণে শুরু হয়েছে পারিপার্শ্বিক সংক্রমণ। রক্তে অণুচক্রিকা কমছে, বাড়ছে ইউরিয়া।
রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণে তারতম্য হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার কথা ভাবছেন চিকিৎসকরা। কিডনি ও স্নায়ুরোগের জটিলতাও সৌমিত্রকে ভোগাচ্ছে ।
করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় গত ৬ অক্টোবর কলকাতার বেল ভিউ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছিল ৮৫ বছর বয়সী এ অভিনেতাকে। প্রায় দশ দিন চিকিৎসার পর ১৬ অক্টোবর তার করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে, শরীরিক অবস্থারও কিছুটা উন্নতি হয়।
কিন্তু অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতা থাকায় তার অবস্থার আবার অবনতি হতে শুরু করেছে। কোভিড এনসেফ্যালোপ্যাথির কারণে তার চেতনা হ্রাস পাচ্ছে বলেও চিকিৎসকের বরাতে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
এদিকে সৌমিত্রের প্রস্টেটের পুরনো ক্যান্সারও আবার ফিরে এসেছে, যা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।
সত্যজিত রায়ের অপু ও ফেলুদা চরিত্রের রূপায়ন করে চলচ্চিত্র সমালোচকদের মনে স্থায়ী আসন নিয়ে আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অনেকে তাকে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করেন।
সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার মধ্যে ১৪টিতেই তিনি অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন মৃণাল সেন, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও।
১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘অপুর সংসার’-এ প্রবেশের পর অক্লান্তভাবে অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন সৌমিত্র। পাশাপাশি বহু নাটকেও অভিনয় করেছেন; লিখেছেন গান ও নাটক, এই বয়সেও আবৃত্তি করেন প্রায়ই।
চলচ্চিত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ছাড়াও ফ্রান্স সরকারের ‘লিজিয়ন অব দ্য অনার’ পদকে ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা। ২০০৪ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতাবে ভূষিত করে ভারত সরকার।