‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে খুললো স্টার সিনেপ্লেক্স

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্টার সিনেপ্লেক্স খুললো পর্দায় ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ নিয়ে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2020, 11:46 AM
Updated : 23 Oct 2020, 02:43 PM

অন্যসব বিনোদন কেন্দ্রের মত ঢাকার বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের জনপ্রিয় থিয়েটার হল স্টার সিনেপ্লেক্সও বন্ধ ছিল সাত মাস।

স্টার সিনেপ্লেক্সে একটি সিনেমা শেষ হওয়ার পর আর একটি সিনেমা শুরুর আগে পুরো সিনেমা হলে ছিটানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

সরকার প্রেক্ষাগৃহ খোলার অনুমতি দেওয়ায় ঢাকার বেশ কিছু সিনেমা হল গত ১৬ অগাস্ট থেকে আবার ‘শো’ শুরু করে। স্টার সিনেপ্লেক্স খুললো তার এক সপ্তাহ পর। 

আপাতত ৪০ শতাংশ আসনের টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই হলে সিনেমা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দশর্করা।

শুক্রবার দুপুরে প্রবল বর্ষণের মধ্যে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের স্টার সিনেপ্লেক্সে দর্শক ছিল অনেক কম।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সব ধরনের সুরক্ষা নিয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। প্রবেশের সময় প্রত্যেক দর্শকদের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

দুপুর ১টায় হল-১ এ মাসুদ হাসান উজ্জ্বল পরিচালিত ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ মুক্তি পায়। হল-৩ এ দেখানো হচ্ছে হলিউডের সুপারহিট সিনেমা ব্লাডশট, হল-৫ এ চলছে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘টেনেট’। আর হল-৬ এ ডিজনির অ্যাকশন মুভি ‘মুলান’ দেখানো হচ্ছে।

প্রথম দিন টিকেট কাউন্টারে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। মাস্ক ছাড়া যে ঢোকা বারণ, সে কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন কর্মীরা।

প্রবেশ পথে দেখা গেল স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যবিধি সকলে মানছেন কিনা তা দেখভাল করতে সার্বক্ষণিক নজরদারি চলছে।

একজন কর্মকর্তা জানালেন, প্রতিটি শো শেষে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। চেয়ার থেকে কার্পেট- সব জীবাণুমুক্ত করার চেষ্টা করছেন তারা।

বৃষ্টির মধ্যেও সিনেপ্লেক্সে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া চার বন্ধু ফারজানা হাসান, ফরিদা আখতার, মিলি চৌধুরী ও ফরিদা কানিজ লিপি।

ফারজানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহামারীতে একরকম ঘরেই বন্দি থাকতে হয়। ভাইরাসের ভয়ে বাসা থেকে বের হতে মানা ছিল। স্টার সিনেপ্লেক্স খুলেছে বলে আম্মু-আব্বুকে রাজি করিয়েছি।”

চারজনে নতুন সিনেমা ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ দেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রেমের গল্প, খুব যে আনন্দ হয়েছে তা বলব না। একরকম বিনোদন হয়েছে আর কি।”

মিলি চৌধুরী বলেন, “সিনেপ্লেক্স পরিচ্ছন্ন থাকে বলেই ছবি দেখতে আসা। নইলে আমাদের গার্জিয়ানরা কিছুতেই রাজি হতেন না।”

তিনি জানালেন, টিকেট ছিল একই সিরিয়ালে, কিন্তু বসতে হয়েছে দূরত্ব রেখে।

সিনেপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরে প্রথম শোতে ‘উনপঞ্চাশ বাতাস’ ছবির টিকেট বিক্রি হয়েছে ১০০টি। অন্য দুটি বিদেশি সিনেমায় তুলনামূলক বেশি দর্শক হয়েছে। দুপুরে মুলানের শোতে টিকেট বিক্রি হয়েছে ১২৪টি।

মুলানের টিকেট কেনার পর রিফাত নেওয়াজ বললেন, সিনেমা হল খুললেও ‘খুব ভালো’ সিনেমা এ সময় মুক্তি পাচ্ছে না। তাই বন্ধুদের নিয়ে হলিউডি সিনেমাই দেখতে এসেছেন। 

“ঘরের ভেতরে আর ভালো লাগে না, বাইরেও করোনাভাইরাসের ভয়। তারপরও ভয় কাটিয়ে চলে এসেছি।”

বসুন্ধরা মলে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের আনাগোনাও ছিল স্টার সিনেপ্লেক্সের সামনে। ফুড কোর্টে বসে অনেকে দুপুরের খাবারও খাচ্ছিলেন।

বেসরকারি একটি কোম্পানির কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে এসেছেন কেনাকাটা করতে। তাদের সঙ্গে কথা হল বসুন্ধরার ফুড কোর্টে। 

নজরুল বললেন, “মার্কেটে দেখেন অনেক মানুষ। বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশন। তারা স্ন্যাকস খাচ্ছে, কিন্তু সিনেমা হলে দর্শক কম। কারণ কী জানেন? এখন ভালো ছবি মুক্তি পাচ্ছে না।

“আমারও ইচ্ছা ছিল একটা ছবি দেখব। কিন্তু আমার মিসেস রাজি হলেন না। কি আর করব। কেনাকাটা সেরে বাসায় ফিরব।”

২০০৪ সালে স্টার সিনেপ্লেক্মের যাত্রা শুরু হয় পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি থেকে। রাজধানীতে তাদের আরো তিনটি মাল্টিপ্লেক্স আছে ধানমণ্ডির সীমান্ত স্কয়ার ও মহাখালীর এসকে টাওয়ারে।