দুই বাংলার পরিচিত মুখ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অনেক আগে থেকেই সরব এই প্লাটফর্মে। এমনকী বাংলাদেশের ওয়েব কন্টেন্টেও কাজ করছেন তিনি।
সম্প্রতি জিফাইভে মুক্তি পেয়েছে তার ছবি ‘টিকিটাকা’। ক্রিকেট উন্মাদনার মাঝে ফুটবল নিয়ে ফুটবল প্রেমী পরমের আবির্ভাব বেশ মন্দ হয়নি- তার প্রমাণ অনলাইনে কাটতি করা ছবিটি।
অনলাইনে ছবি মুক্তি বা কন্টেন্ট নিয়ে তাই জম্পেশ আড্ডা হয়ে গেল গ্লিটজ আর পরমব্রতের।
প্রথমেই জানালেন ছবিটি নিয়ে। ‘খেলেছি আজগুবি’ নাম থেকে ‘টিকিটাকা’ নামে চলে যাওয়ার গল্পটা পুরানো হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। নামটাকে সার্বজনীন করার জন্যই এই নামে এসে শেষ অবধি থামলেন বলে জানান।
পরমের সঙ্গে আগেও গ্লিটজের আলাপটা মুখোমুখি হওয়ায় আর বর্তমানে মহামারীর সময় প্রযুক্তির কারণে অনলাইন আড্ডা হওয়ার বিষয়টার সঙ্গে অনলাইনে ছবি মুক্তি দেওয়ার ক্ষাণিকটা মিলও পেলেন এই অভিনেতা।
সব কিছুরই আলাদা ইমেজ থাকে বলে জানালেন তিনি। তবে প্রয়োজনে অনেক কিছু বড় হয়ে দাঁড়ায়।
পরম বলেন, “ওটিটি প্লাটফর্ম আগেও ছিল, এখনও আছে। এমন নয় যে লকডাউনের কারণেই ওটিটি নিয়ে চর্চা হচ্ছে। ওটিটির জন্য আগেও কাজ হয়েছে এখনও হচ্ছে।”
“তবে এখন আর উপায় নেই বলেই হয়ত অনলাইনে ছবি মুক্তি কথা বেশি ভাবা হচ্ছে।” যোগ করেন পরমব্রত।
প্রযোজক হিসেবে পরম ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে ভাবছেন আগে থেকেই। বিশেষ করে লগ্নি নিয়ে। কারণ এটি একটি ভিন্ন পদ্ধতি। বিশেষ করে একেকটি প্লাটফর্ম একেকভাবে চিন্তা করে। সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে কন্টেন্ট পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়িত হয়। আর তা করতে গেলে অনেকের মতামত নিতে হয়- যেটা অনেকাংশে ভালো বলে মনে করেন এই নির্মাতা।
কারণ হিসেবে তিনি বললেন, “এমনও হতে পারে আমরা নিজের খেয়ালে অনেককিছু বানাই। কিন্তু সমালোচনা নিতে পারি না। বা সেটার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ভাবতে পারি না। ওটিটি প্লাটফর্মে এই চুলচেড়া বিশ্লেষণটা ভালো হয়।”
আর মন্দ দিক বলতে যেটি বললেন তিনি, “শিল্পীদের স্বাধীনতা খর্ব হয় বা হতে পারে।”
কারণ হিসেবে তিনি শিল্পের ভাবনার সঙ্গে প্লাটফর্মের নিজস্বতার পার্থক্যকে উল্লেখ করেন। তবে সব মিলিয়ে ওটিটি প্লাটফর্মে আরও অনেকের জন্য কাজ করা যায় বলে তিনি মনে করেন।
“একটি প্রপার প্রফেশনাল ওটিটি প্লাটফর্মের সঙ্গে কাজ করা আর একটি প্রপার হলিউড স্টুডিওর সঙ্গে কাজ করার শিক্ষাটা একই রকম।” বললেন পরমব্রত।
এই শিক্ষায় বাংলাদেশের ওটিটি প্লাটফর্ম কেমন দীক্ষা নিচ্ছে সে ব্যাপারে পরম বলেন, “আমি কিছু কাজ দেখেছি। ভাবনার জায়গাগুলো থেকে বাংলাদেশের কন্টেন্ট অনেক এগিয়েছে। যেমন ‘একাত্তর’। এই সিরিজের ভাবনাটা চমৎকার ছিল।”
তবে ‘এক্সিকিউশনে’ আরও সময় দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে জানান তিনি।
পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন, “অনেক ওয়েব সিরিজ দেখে টিভি প্রোডাকশন মনে হয়েছে। টিভি প্রোডাকশন আর ওয়েব কন্টেন্ট এক নয়।”
ওয়েবে অনেক ভালো এবং বিস্তৃতভাবে কাজ করার সুযোগ বাংলাদেশের নির্মাতা এবং উদ্যোক্তার আছে- বলে মনে করেন পরম।
বাংলাদেশকে নিজের মাটি মনে করা এই অভিনেতার তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার আশায় এখনও থাকলেও - থেমে নেই কাজ করা।
‘অন্তর্ধান‘, ‘হাপজিগাবজি‘ এবং নিজের পরিচালনার ছবি ‘বনি‘ নিয়ে অপেক্ষাতে থাকলেও ওয়েব সিরিজের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। হিন্দি ভাষায়।
বাংলাদেশের শবনম ফেরদৌসীর ‘আজব কারখানা’র ডাবিং শেষ হয়েছে লকডাউনের আগে। ২০২১ সালে মুক্তি পাবে ছবিটি বলে আশা করছেন এই অভিনেতা।
পরমব্রত নিজেও ছবিটির জন্য অপেক্ষা করে আছেন বলে জানান গ্লিটজকে।