বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শেষ শয্যায় আলাউদ্দিন আলী

সংগীত জগতের দীর্ঘদিনের সহকর্মী, পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের শেষ শ্রদ্ধা নিয়ে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। 

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2020, 11:29 AM
Updated : 10 August 2020, 11:29 AM

সোমবার দুপুর ১২টায় পৈতৃক ভিটা খিলগাঁওয়ের নূর-ই-বাগ মসজিদে ও বেলা আড়াইটার পর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) জানাজা শেষে সোয়া ৪টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।

কয়েক বছর ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত এ সুরস্রষ্টা রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মারা যান। মৃত্যুর পর তার মরদেহ বারডেম হিমঘরে রাখা হয়।

সেখান থেকে খিলগাঁওয়ে জানাজা শেষে দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তার মরদেহ এফডিসিতে রাখা হয়।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস শ্রদ্ধা নিবেদন করে এফডিসিতে।   

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে এ সুরস্রষ্টাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শেষবারের মতো আলাউদ্দিন আলীকে দেখতে এফডিসিতে এসেছিলেন পার্থ বড়ুয়া, এসআই টুটুল, বাপ্পা মজুমদার, ফরিদ আহমেদ, জাহিদ হাসান, ওমরসানিসহ আরও অনেকে।

১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে আলাউদ্দিন আলীর জন্ম। তার বাবা ওস্তাদ জাদব আলী ও মা জোহরা খাতুন।

১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন। আলতাফ মাহমুদের সঙ্গে বেহালাবাদক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় তার।

সেসব দিনে আনোয়ার পারভেজসহ প্রখ্যাত অনেক সুরকারের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করেন আলাউদ্দিন আলী। চলচ্চিত্রের সংগীতে বেহালা বাজাতে গিয়ে তার সংগীত পরিচালনার আগ্রহ তৈরি হয়।

১৯৭২ সালে দেশাত্মবোধক গান ‘ও আমার বাংলা মা’ গানের মাধ্যমে জীবনে প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। পাঁচ দশকের সংগীত ক্যারিয়ারে নিজস্ব একটি সংগীতের ধারা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন আলাউদ্দিন আলী।

‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’, ‘প্রথম বাংলাদেশ- আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়’, ‘দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়’, ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’- সহ কালজয়ী অসংখ্য গানে পেছনের কারিগর আলাউদ্দিন আলী।

গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৭৯ সালে, সুন্দরী সিনেমার জন্য ১৯৮০ সালে এবং কসাই ও যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার পান তিনি।

 ১৯৮৫ সালে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আলাউদ্দিন আলী।