এন্ড্রু কিশোরের অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’

নন হজকিনস লিম্ফোমায় (রক্তের ক্যানসার) আক্রান্ত কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর সিঙ্গাপুরে নয় মাসের চিকিৎসায় ‍সুস্থ হয়ে উঠলেও মাসখানেক আগে তার দেহে আবারও ক্যানসার ফিরেছে; তার শারীরিক অবস্থা এখন সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন পারিবারিক চিকিৎসক।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2020, 09:44 AM
Updated : 6 July 2020, 10:29 AM

সিঙ্গাপুর জেনারের হাসপাতালে নয় মাস ধরে চিকিৎসা নিয়ে ১১ জুন দেশে ফিরে জন্মস্থান রাজশাহীতে বোন শিখা বিশ্বাসের ক্লিনিকে ভগ্নিপতি ও চিকিৎসক প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের তত্বাবধানে আছেন এন্ড্রু কিশোর।

প্যাট্রিক বিশ্বাস গ্লিটজকে জানান, এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। লিম্ফোমা ফিরে আসায় তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। তার জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া আর উপায় নেই।

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ১১ জুন তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও ১০ জুন এক পরীক্ষায় তার শরীরে আবারও লিম্ফোমার অস্তিত্ব মিলেছে বলে চিকিৎসকের বরাতে তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু জানান।

এন্ড্রু কিশোরের ফেইসবুক পেইজে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ১৩ মে দেশের ফেরার কথা থাকলেও কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্লেনে উঠতে এন্ড্রু কিশোর ভয় পাচ্ছিলেন বলে টিকিট বাতিল করা হয়।

১০ জুনের টিকিট কাটার পর ২ জুন তার শরীরে জ্বর আসে। ৪ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে লিম্ফোমা ফিরেছে কিনা জানার জন্য পিইটি স্ক্যানের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

“আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, মনে মনে শুধু ঈশ্বরকে ডেকেছি। কারণ শুরুতে ডাক্তার বলেছিলেন, লিম্ফোমা যদি একবারে নির্মূল না হয়, যদি ব্যাক করে তাহলে সেটা দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে ফিরে আসে। আর খুব দ্রুত ছড়ায়। কোনোভাবেই সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।”“…কিশোর আমাকে বলল, ‘ডাক্তারকে বলবা, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে, আমরা দেশে ফিরবো।’ আমি ভয়ে চুপ করে বসে আছি, শুধু বললাম দেখি ডাক্তার লিম কী বলে। কিছুক্ষণ পরে একজন নার্স এসে আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে গেল, বললো ডাক্তার ডাকছে। লিম আমার সামনে এসে একটাই কথা বললো, ‘লিম্ফোমা ব্যাক করেছে।”

লিপিকা লিখেছেন, “…চোখের জল ঠেকাতে পারছিলাম না, অনেক কষ্টে ডাক্তারকে বললাম, ‘হোয়াট নেক্সট?’ ডাক্তার বললেন, ‘আই অ্যাম স্যরি, আমার আর কিছুই করার নাই।’ আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি, চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়ে যাচ্ছে। নিজেকে এত অসহায় লাগছিল যে, কী করব বুঝতে পারছিলাম না।

ডাক্তার কিশোরকে বলে, লিম্ফোমা ফিরেছে। কিশোর ডাক্তারকে বলে, ‘তুমি আজই আমাকে রিলিজ করো। আমি আমার দেশে মরতে চাই, এখানে না। আমি কালই দেশে ফিরব।’

আমাকে বলে, ‘আমি তো মেনে নিয়েছি, সব ঈশ্বরের ইচ্ছা। আমি তো কাঁদছি না, তুমি কাঁদছ কেন?’ কিশোর খুব স্বাভাবিক ছিল, মানসিকভাবে আগে থেকে প্রস্তুত ছিল, যেদিন থেকে জ্বর এসেছিল সেদিন থেকে। কিশোর তখনই বাংলাদেশ হাই কমিশনে ফোন করে বলে, ‘কালই আমার ফেরার ফ্লাইট ঠিক করে দেন। আমি মরে গেলে আপনাদের বেশি ঝামেলা হবে, জীবিত অবস্থায় পাঠাতে সহজ হবে।’

১০ জুন বিকালে হাসপাতাল থেকে ফিরি এবং ১১ জুন রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরে আসি আমরা।”