এফডিসি ভবন: নকশায় দেড় বছর, দরপত্র ‘দুই মাসের মধ্যেই’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ‘বিএফডিসি ভবন’ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদনের দেড় বছরেও বেশি সময়ক্ষেপণের পর চলতি মাসে ভবনের নকশা হয়েছে; নকশা অনুমোদনের দুই মাসের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2020, 04:33 PM
Updated : 18 June 2020, 04:33 PM

২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ ভবন নির্মাণে ৩২২ কোটি ৭০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ প্রকল্পের আওতায় এফডিসির ভেতরে ৩ ও ৪ নম্বর শুটিং ফ্লোর, এডিটিং ভবন, ব্যবস্থাপক সমিতির কক্ষ ভেঙে ৯৪ কাঠা জায়গাজুড়ে ১২ তলা বিশিষ্ট ভবন গড়ে তোলা হবে।

শুরুর দিকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে এসেছিলেন আবদুল মতিন; কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে।

গত বছরের অক্টোবরের দিকে এ প্রকল্পের দায়িত্বে আনা হয় জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরীকে।

প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক জিজ্ঞাসায় বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “তিন-চারদিন আগে প্রকল্পের নকশা আমরা হাতে পেয়েছি। শিগগিরই নকশাটি তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেবো; অনুমোদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করতে পারব।”

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পাওয়া ডেস্টারাস কনসাল্টিং ফার্ম নকশাটি প্রস্তুত করেছে; চলতি বছরের এপ্রিলে তাদের নকশা হস্তান্তরের কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে অফিস বন্ধ থাকায় বিলম্ব হয়েছে বলে দাবি জাহাঙ্গীরের।

নকশা প্রস্তুতেই দেড় বছরের বেশি সময়ক্ষেপণ হলো কেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে কাজে বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে আগের প্রকল্প পরিচালকের দিকে দায় চাপালেন তিনি।

জাহাঙ্গীরের দাবি, তিনি দায়িত্বে আসার আগে এক বছর এ প্রকল্পের কোনো কাজ হয়নি। তিনি দায়িত্বে নেওয়ার পরপরই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু মাঝখানে করোনাভাইরাসের বাগড়ায় কাজের গতি খানিকটা কমেছে।

“করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাস পিছিয়ে গেলাম। অফিস বন্ধ না থাকলে এতদিনে নকশার অনুমোদন নিয়ে টেন্ডারে চলে যেতে পারতাম। এবার আশাকরি দুই মাসের মধ্যেই টেন্ডার হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ভবনের কাজ শুরু করে দিতে পারবে।”

তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা শেষ করা সম্ভবপর নয় বলে মনে করেন তিনি।

“আগে এক বছর নষ্ট হয়েছে। মাঝে করোনার কারণে আরো ৩ মাস চলে গেল। মনে হয় না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব। হয়তো সময় বাড়াতে হবে।”

চলচ্চিত্র শিল্পের মন্দার মধ্যে লোকসানের মুখে ধুঁকতে থাকা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন মূলত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুদানের অর্থেই চলছে।

কর্মীদের বেতন পরিশোধ করতেও অর্থ মন্ত্রণালয়ে কাছ থেকে অনুদান পেতে ধর্ণা দিতে হয় এফডিসিকে; সবশেষ ঈদের আগে কর্মীদের বেতন দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা অনুদান নিয়েছে।

অনুদানের চাপ কমিয়ে এফডিসিকে ‘স্বাবলম্বী’ করে তুলতেই বিএফডিসি কমপ্লেকের প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

এ ভবনে সিনেমা হল, শুটিং ফ্লোর, সুইমিংপুল, আবাসিক হোটেল, স্টুডিওসহ বিভিন্ন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

সেখান থেকে আয়কৃত অর্থে এফডিসির কর্মীদের বেতনাদিসহ অন্যান্য খাতের ব্যয় মেটানো হবে; ভবনটি নির্মিত হলে এফডিসির আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে পুরোনো জৌলুশ ফিরবে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।