এটা আমার বাংলাদেশের মিডিয়ায় প্রথম সাক্ষাৎকার: পলাশ সেন

সম্প্রতি জিফাইভ-এর একটি অনলাইন কনসার্ট আয়োজন সুপারমুনে শ্রোতাদের জন্য গান করেছেন পলাশ সেন। মাতিয়েছেন শ্রোতাদের এই লকডাউনের সময়েও।

রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2020, 05:13 AM
Updated : 8 June 2020, 05:13 AM

পলাশ সেন সর্বাধিক পরিচিত নিজের ব্যান্ড ইউফোরিয়ার গায়ক, কম্পোজার, গীতিকার এবং সুরকার হিসেবে। আবার এর পাশাপাশি তিনি চিকিৎসকও বটে।

পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী একহাতে স্টেথসস্কোপ ছিল বটে- কিন্তু আরেক হাতে সবসময়ই ছিল গানের কথা।

ওদিকে বাঙালি রক্ত ধমনীতে ধাবমান বলে পরিবারের সবাই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ছিল সবসময়। তাই শরীরবিদ্যা এবং সুরবিদ্যা নিয়ে এগিয়ে যেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাকে। বরং বেগটা বেড়েই গেছে ক্রমাগত।

ফলে নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে কভার করা শুরু করে ইউফোরিয়া ব্যান্ড। ইংরেজি গান নিয়ে তখন যাত্রা চললেও পরে মনে হল- এবার নাহয় নিজেদের গান হোক।

১৯৯৮ সালে প্রকাশিত হয় ভারতের ইউফোরিয়া ব্যান্ডের অ্যালবাম ‘ধুম’। সেই সময়ে মিউজিক ভিডিওর রমারমা যুগ চলছিল। সেখানে ছক্কা পেটায় ইউফোরিয়ার ধুমের মিউজিক ভিডিও। কারণ তাতে ছিল গল্প- আবার একটু বাঙালিয়ানাও।

গ্লিটজের সঙ্গে আলোপে সেই গল্পই বললেন আরেকবার। কারণ প্রতিটি গানই তার কাছে গল্প। আর সত্যি সত্যি গানগুলোর পেছনে আছে কারও না কারও সত্যিজীবন। এইজন্যই তখন থেকে ইউফোরিয়ার গানে শ্রোতারা নিজেদের খুঁজে পেতেন বলে মনে করেন পলাশ।

তার আগে জানালেন, লকডাউনে শিল্পীদের অবদান।

পলাশ বলেন, “লকডাউনে শিল্পই বাঁচিয়ে রেখেছে। কেউ চর্চা করে বেঁচে আছে কেউ বা শুধু উপভোগ করে। কোনোভাবেই শিল্পর অবদান উপেক্ষা করার মতন নয়।”

প্রযুক্তির কাছ থেকে যুক্তির কাছে ফিরে আসা নিয়ে পলাশ বলেন, “আমরা হয়ত কোনও কারণে খুব বেশি যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছিলাম। এই সময়টা বলে দিল- মনের খোড়াক নিয়েও ভাবতে হবে।”

তবে প্রযুক্তির আবশ্যিকতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই তার। কারণ এর মাধ্যমেই জিফাইভের প্লাটফর্মে কনসার্ট করতে পারছেন তিনি ঘরে বসে। আর সেটা তার ভক্তরা দেখতেও পারছেন।

চিকিৎসক পলাশ সেন আড্ডা মাঝখানে তুলে ধরেছেন নানা বিষয়। স্বাধীনভাবে সঙ্গীত করা এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের জন্য সঙ্গীত করার যে পার্থক্য সেটাও। এজন্যই হয়ত তিনি নিজেকে বলিউড সিঙ্গার বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।

এর আগে অন্যান্য জায়গায় উল্লেখ করলেও গ্লিটজকে আরেকবার বলেন, “আমরা মনের আনন্দে গান করি। বলিউডটা অনেকাংশেই ব্যবসায়িক পরিসর। আমাদের মতো ব্যান্ড মিউজিশিয়ানদেন জন্য তা হজম করা কষ্টের। আর এ ব্যাপারে আমি সবসময়ই কথা বলি।”

ব্যান্ড প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যান্ড আসতেই মাইলসের প্রতি ভালোবাসা জানালেন। জানালেন জেমসের প্রতি অনুরাগের কথাও। তবে বাংলাদেশে আসা হয়নি। এই নিয়ে তার বড্ড আক্ষেপ।

বলেন, “অবশ্যই বাংলাদেশে আমি আসতে চাই। ইউফোরিয়া নিয়ে কনসার্ট করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে সুর ও সাধনা মিশে আছে।”

এই আড্ডায় তার চিকিৎসক জীবন এবং সুরের জীবনের অনেকটাই উঠে আসে গ্লিটজের মাধ্যমে।

পলাশ সেন শেষ করেন সবাইকে ভালো থাকার অনুরোধ করে। এই সময়ে ব্যক্তিগত সচেতনতাই মূল বলে তিনি সেটা মানার পরামর্শ দেন গ্লিটজের পাঠকদের।

বাংলাদেশে বসেও সুপারমুনের ‘সুপার’ সেই পারফরমেন্স উপভোগ করেছেন অনেকেই। সেই সুবাদেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফেরের গ্লিটজের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকারে অংশ নেন পলাশ সেন।