’আগের মত বাসলেন না ভালো’ স্টিলার ব্যান্ডের লিটন

‘তুমি কী আমায় আগের মত বাসো ভালো’ - নব্বইয়ের দশকের এই সাড়া জাগানো গানে যে কণ্ঠ আলোড়ন ‍তুলেছিল দেশজুড়ে সেই  মাসুদুল হক লিটন বৃহস্পতিবার মাত্র ৪৬ বছর বয়সে ছেড়ে গেলেন পৃথিবী।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2020, 05:53 AM
Updated : 5 June 2020, 05:53 AM

স্টিলার ব্যান্ড, যা কিনা ২০০০ সালে বেনসন এন্ড হেজেস’র  বিজয়ী ছিল, তা চলে আসে রাতারাতি শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায়! আলোচনায় আসেন ভোকাল লিটন। কিন্তু তারপর? লিটনের চলে যাওয়ার বিকেলে মাথায় মেঘ নিয়ে আরাফাত শান্ত স্মৃতি ঘেটে নিয়ে এলেন নব্বইয়ের ব্যান্ড মিউজিকের সেই স্বর্ণযুগের কথা!

বাংলাদেশ অডিও ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে এখন আর কোথাও কোনো খবর নাই। অথচ আগে খবরে থাকতো নতুন সিডি ক্যাসেটের খবর, অডিও রিলিজ, রিভিউ, শিল্পীদের সাক্ষাৎকার। এখন কিছুই নেই। সমস্ত কিছুই এখন মিউজিক ভিডিও নির্মাণ ও ইউটিউবে কত ভিউ তাই নিয়ে। গান বাজনা এখন হয়ে গেছে শখের ব্যাপার। সবাই গায়, ফেসবুকে লাইভ করে।

অথচ ব্যান্ড মিউজিকের তীর্থস্থান ছিল একটা সময় চট্টগ্রাম। সোলসের হাত দিয়ে যাত্রা শুরু হয়ে প্রচুর ব্যান্ড সে শহরেই ছিল। সবাই গাইতো। বিয়ে, গায়ে হলুদ, হোটেলে সব দিকেই ছিল ব্যান্ড দলের আধিপত্য।

' স্টিলার   ' ছিল সেরকমই ব্যান্ড। ইংলিশ গান কাভার করতো, জিম মরিসন থেকে শুরু করে বন জভি, এইটিজ নাইনটিজের গান এসব গানই গাইতো বাজাতো।

তারা রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যায় আইয়্যুব বাচ্চুরে সুরে, তোমারই চোখেরও আঙ্গিনায় গেয়ে। এই গান ছিল চট্টগ্রামের সবচেয়ে আইকনিক গান। সবাই গাইতো। বাসে, শাটল ট্রেনে, কলেজ ফাংশনে এই এক গান। চট্টগ্রাম ছাপিয়ে এ গান একটা সময় গোটা বাংলাদেশের অনেকের প্রিয় হয়ে গেল। স্টিলার  এরপরেও কিছু গান গেয়েছে, সিডিও বের করেছে সেসব আর জনপ্রিয়তা পায় নাই। তাদের ব্যান্ড মানেই, তোমারো চোখের আঙ্গিনায়।

গত বছর এই ব্যান্ডের আরেক মেম্বার জিয়াউদ্দিন মারা যান ব্রেইন স্ট্রোকে। আজ শুনলাম তাদের ব্যান্ডের ভোকালিষ্ট, মাকসুদুল হক লিটন প্রয়াত হয়েছেন হার্ট অ্যাটাকে। এমনিতেই নানান কিংবদন্তির মৃত্যুতে আমাদের অডিও জগতে শুন্যতা আর স্থবিরতা ভর করেছে। লিটন ভাইয়ের মৃত্যু আমাদেরকে আরো মলিন করে দেয়। বাংলাদেশের বাংলা গান যতদিন থাকবে ততদিন, তোমারও চোখের আঙ্গিনায়। একটা গানই বাচিয়ে রাখবে স্টিলারকে। 

৪ জুন বিকাল   মাকসুদুল হক লিটন চট্টগ্রামে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।