সুজেয় শ্যাম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর নমুনা পরীক্ষায় একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা সুজেয় শ্যামের করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ' এসেছে।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2020, 10:27 AM
Updated : 12 June 2020, 08:07 AM

এ সুরকার ও সংগীত পরিচালককে শনিবার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস পজিটিভ আসার পরই তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো।”

এর আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মঙ্গলবার রাতে কু্র্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সুজেয় শ্যামকে। পরদিন বুধবার বিকালে তার নমুনা সংগ্রহের পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়। দুইদিন পর শুক্রবার রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসায় রাতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।

দুই বছর ধরে মূত্রনালীর ক্যানসারে ভুগছেন এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক।

১৯৪৬ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামকে সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি।

গিটার বাদক ও শিশুতোষ গানের পরিচালক হিসেবে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান চট্টগ্রাম বেতারে কর্মজীবন শুরু হয় সুজেয় শ্যামের। পরে তিনি ঢাকা বেতারে যোগ দেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থাকাকালে মোট নয়টি গানে সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম, যেগুলো একাত্তরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে রয়েছে ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘ওরে শোনরে তোরা শোন’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আজ রণ সাজে বাজিয়ে বিষাণ’। ছিল বিশ্বপ্রিয়র লেখা ‘আহা ধন্য আমার’, কবি দিলওয়ারের লেখা ‘আয়রে চাষী মজুর কুলী’।

তার সুর করা গানের মধ্যে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’ এবং ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গান দুটি যে কোনো জাতীয় দিবসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে।

১৯৬৯ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সুজেয় শ্যাম। ঢাকাই চলচ্চিত্র সংগীতে অবদানের জন্য তিনবার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বাংলাদেশ বেতারের প্রধান সঙ্গীত প্রযোজক পদ থেকে ২০০১ সালে অবসরে যান সুজেয় শ্যাম।

এরপর ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত ৪৬টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান’ শিরোনামে একটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তিনি।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে আরও ৫০টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান-২’ নামে আরেকটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন শিল্পী।

‘টুনাটুনি অডিও’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।