ঘরে বসে শাফায়েতের শুটিং

ঈদের সময় ‘হচ্ছেনা’ বা ‘হবে না’ বলেও টিভি পর্দায় দেখা গেছে ঈদের নতুন নাটক। ‘ঘরবন্দী সময়ের গল্প’ সিরিজে তেমনভাবেই যুক্ত হয়েছেন শাফায়েত মনসুর রানার নাটক ‘মধ্য নায়ক’।

রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2020, 06:53 AM
Updated : 31 May 2020, 07:27 AM

কীভাবে ঘরে থাকার সময়ে হল নাটকটির শুটিং- শাফায়েত জানালেন গ্লিটজকে।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলানোই যেন মানুষের পরম ধর্ম। করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে ঘরে বসে থাকা বিশ্ববাসী তাই এর মাঝে থেকেই খুঁজে নিয়েছে নিজেদের স্বস্তির উপায়। সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন সৃজনশীল মানুষরা।

বাংলাদেশে ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণার পর থেকেই থমকে গিয়েছিল নাটক পাড়া। যেখানে গমগমে অবস্থা থাকার স্মৃতি এখনও চাঙা- সেই স্মৃতিতে এখন নিশ্চুপ নীরবতা। বিশেষ করে ঈদের সময়টিতে।

তবুও নাট্য নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরা ঘরে বসেই শুরু করেন চিন্তা ভাবনা। বের হয় ‘ঘরবন্দী সময়ের গল্প’-এর ফর্মুলা।

ঈদের সাতদিনে সাতটি গল্প নিয়ে সাত নির্মাতার শুরু হয় অন্য রকম এক যুদ্ধ। কীভাবে নাটক তৈরি হবে- কারা অভিনয় করবেন- সে নিয়ে এক বিশাল মেধাশ্রম। এই প্রজেক্টের অংশ নির্মাতা শাফায়েত মনসুর রানা।

“কোয়ারেন্টিনের সময়ের গল্পটি লিখে ফেলা যত সহজ পর্দায় তা নিয়ে আসা ততটাই কঠিন।” বললেন গ্লিটজকে।

শাফায়েত বলেন, “ঘরে বসে কীভাবে পরিচালনা করবো- সেটার কৌশল বের করাই ছিল প্রথম চ্যালেঞ্জ।”

তবে একই সঙ্গে কাজ করার সুবাদে ফখরুল বাশার মাসুমের পরিবারের সঙ্গে অনেকটাই পারিবারিক বন্ধুত্ব তার। মিলি বাশার, নাজিবা বাশারসহ সবাই একই বাসাতে থাকাতে এভাবেই নাটকের শুটিং-এর পরিকল্পনা করে ফেললেন শাফায়েত।

প্রথমেই শুটিংএর জন্য বাশারের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারা সানন্দে রাজি হয়। কিন্তু ক্যামেরা সেট করা, বাসায় আয়োজন- এইসবের ঝক্কি তো ছিলই।

আর শুটিং মানেই বাইরের লোকের আনাগোনা। প্রতিবেশিরে আশ্বস্ত করা হয়- কোনো বাইরের মানুষ দালানে আসবেন না। অনলাইনে পরিচালক পরিচালনা করবেন- আর ওপাশে তা শুনে অভিনয় করে যাবেন নাটকের পাত্র-পাত্রী।

এক্ষেত্রে বাশারের পরিবারকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান পরিচালক। সম্পর্কের ইথার সংযোগ ছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছে বলে পরিচালক জানান গ্লিটজকে।

বিশেষ করে বাশারের পরিবারের ছোট্ট সদস্য আনাইশা হোসেইনের উপস্থাপনায় নাটকটি নতুন প্রাণ পেয়েছে। আনাইশা নাজিবা বাশারের বড় বোনের সন্তান। বড় বোন নাবিলা বাশার এবং আনোয়ার হোসেইন সবুজের একমাত্র সন্তান আনাইশা।

শুটিং পর্ব শেষে আবারও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন পরিচালক। কারণ সাধারণত একই সঙ্গে বসে এডিটের কাজটা করা হয় স্বাভাবিক সময়ে। যেহেতু অস্বাভাবিকতাই নতুন স্বাভাবিক রূপ- তাই এডিটটাও হল অনলাইনেই। এডিটর এবং পরিচালক নিজ নিজ বাড়িতে বসে শেষ করেন সম্পাদনার কাজ।

কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?

প্রশ্নের উত্তরে শাফায়েত বলেন, “বিষয়টি কঠিন। একসঙ্গে থাকলে অনেক দ্রুত কাজ শেষ হয়। দুই জায়গায় বসে করলে সময় লাগবে - এটাই স্বাভাবিক। তবে আমার টিমের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বোঝাপোড়ার কারণে অতটা বেগ পেতে হয়নি।”

সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতাটিকে একেবারে ফেলে দিতে চান না।

শাফায়েত বলেন, “এই অবস্থা দ্রুত চলে যাবে না। এর সঙ্গে তাল মিলাতেই হবে। এখন মাঠে শুটিং করলে পিপিই পরতে হত। সেটা খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যের হত না নিশ্চিত। প্রথম প্রথম সবকিছুই ঝামেলার মনে হলেও এটাকে রপ্ত করতে পারলে ভালো।”

তিনি আরও যোগ করেন, “জীবনের চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। জীবন ও জীবিকার লড়াইয়ে টিকতে হলে কৌশল রপ্ত করতেই হবে। ‘ঘরবন্দী সময়ের গল্প’ একটি এক্সপেরিমেন্ট। দেখা যাক - এর ফলাফল কেমন হয়।”

শাহরিয়ার শাকিলের প্রযোজনায় তাই নাটক নির্মাণ নিয়ে নিজের কৌশল ও দক্ষতা বাড়াতেই শাফায়েত মনসুর রানা নির্মাণ করেছেন ‘মধ্য নায়ক’।

করোনাভাইরাসের এই সময়ে এই ‘এক্সপেরিমেন্ট’ উপস্থাপনাই হতে পারে ‘নতুন স্বাভাবিকতা’র নতুন দৃষ্টান্ত।