কোয়ারান্টাইনে, ক্লাসিক সিনেমাঃ 'আন্দাজ আপনা আপনা'

আরাফাত শান্ত নিজেকে দর্শক বলেই পরিচিতি দিতে পছন্দ করেন। কিন্তু তার আলোচনায় যেমন থাকে প্রশংসা তেমনই থাকে সমালোচনা। গ্লিটজের দর্শকের জন্য তিনি এবার বিশ্লেষণ করলেন ’আন্দাজ আপনা আপনা’ ছবিটির।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2020, 08:05 AM
Updated : 26 May 2020, 08:05 AM

এই করোনা দুর্দিনে অনেকেরই বাসায় থাকতে হচ্ছে। বাসায় বসে বসে দেখতে পারেন সময় কাটানোর মতো মুভি।  আজ থাকছে হিন্দি সিনেমা ‘আন্দাজ আপনা আপনা’র কথা। আমির খান ও সালমান খান অভিনীত ও রাজকুমার সন্তোষী পরিচালিত কমেডি সিনেমা ‘আন্দাজ আপনা আপনা’। এ সিনেমা নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।

১। এই সিনেমা করতে সময় লাগে তিন বছর।

২। এই সিনেমা `বিলো এভারেজ` ব্যবসা করেছিল। কিন্তু সময় যতো বেড়েছে এই সিনেমার আয় ততো বেড়েছে। অনেকের মতে গত ৫০ বছরের সেরা হিন্দি কমেডি সিনেমা মনে করা হয় এই সিনেমাটাকে। প্রযোজকের ঘরে গিয়েছে ৩০০ কোটি রুপীর বেশী অর্থ।

৩। এই সিনেমার বেশীর ভাগ কমেডি স্ক্রিপ্ট রাজকুমার সন্তোষীর আগে থেকে লেখা, সিনেমায় তা অন স্পট ইম্প্রোভাইসেশনের ফল। এই সিনেমার জোকসগুলো এতো ভালো ছিল যে তখনকার দর্শক এতো ভালো জিনিস ধরতেই পারেনি বলে পরে দাবী করেন সংশ্লিষ্টরা।

৪। সালমান খানের চুলের স্টাইল চার পাঁচ রকম। কারণ বিভিন্ন সময় শ্যুটিংয়ে তার অন্য সিনেমাগুলোর হেয়ার স্টাইল চলে এসেছে।

৫। এই সিনেমা রিয়েল লাইফ জোক আর পপ কালচারে ভর্তি। আমির যখন সিনেমায় জেলখানার ফিতা কাটে তখন বাজে- পাপ্পা ক্যাহতা বেটা নাম কারেগা, কিংবা যখন বলে শোলে দেখছো কিনা? সালমান জবাব দেয়, ১০ বার। আমির বলে. ‘হ দেখবেই তো ওর বাপের লেখা।’

আসলেই এটা সালমানের বাবা সেলিম খানের লেখা। জুহি চাওলার সাথে আমিরের লম্বা স্বপ্নের সিন সব তখনকার দিনের সিনেমার রেফারেন্স। কিংবা যখন ভিলেন বলে বাজাজ উচ্চারণ করে তখন টিপ্পনী কাটে আর জানায়, বিজ্ঞাপনের ভাষায়, ‘হামারা বাজাজ।’

৬। আমির সালমান দুইজনই এই সিনেমায় একে অন্যের চেয়ে বেশী স্ক্রিন উপস্থিতি চেয়েছেন। শেষে দুইজনকেই সমান দেয়া হয়। দীর্ঘদিন যাবত শ্যুটিংয়ের কারনে আমির, সালমান,কারিশমা, রাভিনা খুব ভালো বন্ধু হয়ে যায়। যার রসায়ন পাওয়া যায় সিনেমায়। যদিও সিনেমার কাজ শুরুর সময় কারিশমা রাভিনা একজন আরেকজনের সাথে কথাই বলতো না তেমন।

৭। এই সিনেমায় ভিলেনের  অ্যাসিটেন্ট যে থাকে ভাল্লা, সে তার বাবার(অজিত) সিনেম্যাটিক বাচনভঙ্গি নকল করে। মেহবুব খানের ‘ওয়াহ ওয়াহ‘ স্টুডিওর কথা বলা হয়, বাস্তব জীবনেই উনার এক প্রোডাকশন হাউজ ছিল এই নামে, যেখান থেকে একটা ফ্লপ সিনেমাও প্রযোজনা করা হয়।

৮। ‘দামিনী’ সিনেমার শুট্যিংয়ের সময় এরকম সিনেমার প্রোডাকশন নিয়ে আমির খানের সাথে আলোচনা হয়। আমির খান ও রাজকুমার সন্তোষী দুজন ধরে সালমানকে রাজী করায়।

৯। প্রতিদিন আমির খান কল টাইমে আসতো, সালমান দেরিতে আসতো, একে অন্যকে সব সময় মিমিক্রি করতো।

১০। রাজকুমার সন্তোষী এই সিনেমার সিক্যুয়েল নিয়ে ভেবেছিলেন। কিন্তু সেরকম ভালো স্ক্রিপ্ট ও আমির সালমানের শিডিউল পাওয়া যাবে না এই ভেবে আর সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি।

১১। এই সিনেমার ন্যারেটিভে ফোর শ্যাডোয়িং আছে, প্রচলিত ভারতের ছবিগুলোর গল্পের যে বৃত্ত তা ভাঙ্গা হয়েছে।

১২. শুধু আলাদা আলাদাভাবেই কমেডি স্কিটগুলো দেখলেই বোঝা যাবে কতো ভালো ডিটেইলিং করা হয়েছে এখানে।

১৩. মিষ্টার ইন্ডিয়া খ্যাত অভিনেতা এবং বলিউডের জনপ্রিয় খলনায়ক অমরেশ পুরীর রোলও এখানে ছিল। সে নিজেই নিজেকে মিমিক্রি করে ডায়লগে বলতো, ‘মোগাম্বো খুশ নেহি হুয়া’! পরে আর এটি রাখা হয়নি।