প্রথম ‘কোয়ারেন্টিন’ প্রোডাকশন নিয়ে শাওন-টয়া দম্পতি

করোনাভাইরাসের এই সময়ে বন্ধ হয়ে আছে নাটকের শুটিং! থমকে গেছে মিডিয়া পাড়া। হারিয়ে গেছে ঈদের আগে সেই রমরমা মিডিয়ার পরিচিত মুখ। তবুও কীভাবে নতুন কাজ নিয়ে - পরিকল্পনা নিয়ে সামনে আসা যায়- সেটা নিয়ে ভাবছেন অনেকেই। তারমধ্যে নতুন পরিচালক পুলক অনিল অন্যতম। তারসঙ্গে নতুন কিছু করার মিশনে সহযোদ্ধা হয়েছেন নব দম্পতি টয়া-শাওন।

রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2020, 10:04 AM
Updated : 19 May 2020, 10:04 AM

গ্লিটজের আয়োজনে ‘কোয়ারেন্টিন’ অবস্থাতেই  জানালেন কী করে তারা যে যার বাসায় বসে ঈদের নাটক নিয়ে নতুন উদ্যোগ নিয়ে ভাবছেন। এবং কাজ এগিয়ে নিয়েও যাচ্ছেন। কেমন করে হচ্ছে এই আয়োজন।

করোনাভাইরাসের এই সময়ে নাটকের শুটিং হবে কি হবে না- এই দ্বন্দ্ব যখন চারপাশে তখন এসময়েই পরিচালক হিসেবে ঘরে বসে পরিচালনার খাতায় নাম লিখালেন পুলক অনিল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন বিনোদন জগতে। একজন বিজ্ঞাপন কর্মী হিসেবে তিনি পরিচিত মুখ। এছাড়াও তিনি কবি এবং গীতিকার। এবার নাটক পাড়ার চির পরিচিত মুখ ফিরিয়ে আনতে অনেক আগে থেকেই ভাবছিলেন কী করা যায়। ফলশ্রুতিতে কাছের আসার গল্প কনসেপ্ট নিয়ে তার চিন্তা ভাবনার খেয়া পাড়ে পৌঁছায়।

ভালোবাসা দিবসে বেশ কয়েক বছর ধরেই এই কনসেপ্টে নাটক নিয়ে হাজির হয় ইউনিলিভার বাংলাদেশ। এবার ঈদে যখন যে যার ঘরে সময় কাটাচ্ছে- তখন একই রকমের কনসেপ্ট নিয়ে তাদের মাধ্যমেই নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখেন পুলক। তিনি তার পরিকল্পনা জানান। যা প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করে।

এরপরেই আসে শাওন ও টয়ার পর্ব।

এ বছরের শুরুতে এবং লিপইয়ারের চমক নিয়ে টয়া ও শাওন আগেই খবরের শিরোনামে পরিণত হন।

মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া এবং সায়েদ জামান শাওন ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে ঘরোয়া আয়োজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এখন তারা কাছেই আছেন- ঘরে বসে নিজেদের সময়কে রাঙিয়ে তুলছেন নিজেদের আপন ক্যানভাসে।

সেই ক্যানভাসের রং এখন ছড়িয়ে পড়েছে তাদের কাজের উঠোনেও। পুলক অনিলের সঙ্গে কথা বলার একফাঁকে তারা জানালেন কীভাবে কাটছে তাদের সময়।

টয়া বলেন, “আমি কখনও ভাবিনি আমরা এতটা সময় একসঙ্গে কাটাতে পারবো।”

শাওনও বলেন, “এটা একটা সুযোগ বটে সত্যিকারের কাছে আসার জন্য। খুব অতর্কিতে সব হলেও সুযোগটা দারুণ।”

সুযোগের সদ্ব্যহার তারা করছেন কাজের ক্ষেত্রেও। দীর্ঘদিন ধরে পুলকের সঙ্গে কাজ করা এবং পরিচয়ের কারণে পুলকের চিন্তা ভাবনার সঙ্গে নিজেদের তাল মেলাতে পেরেছেন এই দুই তরুণ অভিনয় শিল্পী।

কিন্তু কীভাবে হচ্ছে এই নাটকের কাজ। তারা কী বের হবেন বাসা থেকে?

উত্তরে পুলক জানান, ‘একদমই না। আমরা যে যার ঘরে বসে আছি। আমি ঘরে বসে ফ্রেম ঠিক করে দিচ্ছি। বলে দিচ্ছি। আর অনস্ক্রিনের প্রেমের ক্যামিস্ট্রিটা ঠিকঠিক তুলে আনছেন শাওন ও টয়া।”

এই মনোরসায়নের যোগসুত্রই অন্যতম কারণ এই দম্পতির সঙ্গে কাজ করার বলে জানান- পুলক।

ওদিকে শাওন এবং টয়াও নিজেরাই লাইট-ক্যামেরা-সেটাআপ নিয়ে কাজ করছেন। মেইকআপ নিয়ে ভাবছেন। এটাও এই সময়ের অন্যরকম প্রাপ্তি বলে ভাবছেন এই তিনজন।

শাওন বলেন, “বিপদই বিপদ থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজে দেয়, আমরা এখন বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মোকাবেলার চেষ্টা করছি।”

বসে থাকা বা অবসাদে সময় কাটানো কোনো ভাবেই কাম্য নয়- বলে পুলক যোগ করেন, “এরমাঝেই কাজ করতে হবে।”

এজন্য পুলক, টয়া এবং শাওন ধন্যবাদ জানান ইউনিলিভারকে তাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য এবং অন্যভাবে ঈদে নতুন কিছু উপহার দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

পুলক আরও বলেন, “কাজ শুরু করতেই হবে, সেটা সব সেক্টরেই। কিন্তু তাতে জীবনের নিরাপত্তা থাকতে হবে। এজন্যই নতুন করে আবার আয়োজন করতে হবে।”

এই ঈদের বেশ কয়টি চ্যানেলে এই নাটক যাবে যেখানে দূরে বসে কাছের আসার - থাকার আকাঙ্ক্ষা ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। ক্লোজআপ প্রেজেন্টস ‘দূরে তবু কাছাকাছি’ নাটকটি অন্তত বারোটি চ্যানেলে দেখানোর সম্ভাবনা আছে।

এই সম্ভাবনাই বলে দেয়- নতুন কিছু করার বা নতুন কিছু দেখার, দুটোরই সম্ভাবনা আছে। আছে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে আবার কলরব ফিরিয়ে আনার।

শাওন যোগ করেন, “এই অবস্থাকে আমরা ইতিবাচক ভাবে ভাবলে সুযোগ আছে দর্শককে টিভিমুখী করার - আরেকবার।”

কেউ টিভি দেখেনা- এমন এক আলোচনার প্রসঙ্গে পুলকও বলেন, “এখন কিন্তু টিভি মিডিয়াই মানুষকে বিনোদন দিচ্ছে অনেকাংশে। তার বড় প্রমাণ বহুব্রীহি, কোথাও কেউ নেই- এর জন্য দর্শকের আরেকবার অপেক্ষা করা।”

সব বৈরীতা থেকে ভালো কিছু অর্জনের উদ্দেশ্যেই এক হয়েছেন ঘরে বসে নিজের দক্ষতা বাগানোর মিশনে এই নাটকের কলাকুশলীরা। নতুন কিছু করার জন্য পুলক অনিল, টয়া এবং শাওনও নিজেদের মেধাতে শান দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যরকম কিন্তু আনন্দের ঈদ উপহার দেওয়াই তাদের মিশনের অন্যতম অংশ।