সচেতনা বাড়াতে ‘বিচ্ছুজ’ নিয়ে নুহাশ হুমায়ুন- প্রীতম হাসান

বৈশ্বিক মহামারিতে সুরক্ষার প্রধানতম উপায় সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব নিয়ে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে চলচ্চিত্রনির্মাতা নুহাশ হুমায়ুন এবং শিল্পী ও সুরকার প্রীতম হাসানকে নিয়ে ক্রিয়েটিভ ক্যাম্পেইন নিয়ে এসেছে ওয়াটারএইড। 

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2020, 01:36 PM
Updated : 12 May 2020, 01:36 PM

আর এটি একটি ওয়েব সিরিজ। নাম ‘বিচ্ছুজ’।

সচেতনতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব বোঝানো দুরূহ এমন চার বন্ধুকে ঘিরে এ ওয়েব সিরিজের গল্প। এ ওয়েব সিরিজে ‘বন্ধু’ নামের পাপেট চলতি নানা উপায়ের বাইরে গিয়ে এ চার বন্ধুর স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এ সিরিজের চারটি চরিত্র রূপায়ণ করেছেন টোকাই থিয়েটারের সদস্যরা এবং ‘বন্ধ’ু চরিত্রে কণ্ঠদান করেছেন প্রীতম হাসান। এ পাঁচ চরিত্রের নানা কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে সিরিজের গল্প এগিয়েছে যেখানে দর্শক দেখতে পাবেন, এ চরিত্রগুলো কীভাবে হাস্যরস, ব্যঙ্গ ও বিদ্যমান নানা ট্যাবুর মধ্য দিয়ে হাতধোয়ার গুরুত্ব বোঝে।

নুহাশ ও প্রীতম শুধুমাত্র পরিচালক ও সুরকার হিসেবেই ‘বিচ্ছুজ’- এ কাজ করছে না পাশাপাশি, তারা ‘ইয়ুথ ফর এসডিজি ৬’ প্ল্যাটফর্মের উপদেষ্টা পর্ষদ সদস্য হিসেবে কাজ করছে। একসাথে এ সিরিজ নিয়ে কাজ করা ছাড়াও, এ জুটি সবার মধ্যে সবসময় হাতধোয়ার আজীবনের অভ্যাস গড়ে তুলতে ওয়াটারএইডের সচেতনতা কার্যক্রমে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে নুহাশ হুমায়ুন বলেন, তরুণদের মধ্যে কোনো কিছু করার অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদেরকে আগে বুঝতে হবে। শুধুমাত্র ঢালাও ভাবে সচেতনতার বার্তা দিয়ে প্রত্যাশা করা যাবে না তারা এটা বিশ্বাস করবে বা নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তুলবে। বর্তমানের তরুণরা কী করা উচিৎ, এটা শোনার চেয়ে উপলব্ধির ব্যাপারে বেশি মনোযোগী। আমাদের তাদের ভাষাতেই তাদেরকে বলতে হবে, সেটা হোক শুনতে বিল্পবী, অপ্রচলিত কিংবা অপ্রত্যাশিত। পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে নির্মাতা হওয়া ছাড়াও ‘ইয়ুথ ফর এসডিজি ৬’ প্ল্যাটফর্মের উপদেষ্টা হিসেবে থাকার কারণে এ প্রকল্পটি আমাদের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। আমার বিশ্বাস, এ প্রকল্পটি সুস্বাস্থ্যের অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে যা আমাদের মূল্য উদ্দেশ্য।’

প্রীতম হাসান বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত যা করেছি, প্রচলিত সে কাজের বাইরে গিয়ে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন ও ভিন্নধর্মী কিছু করতে চাইছিলাম আমি। এ সিরিজের পাপেট চরিত্র, যাকে আমরা ভালোবেসে ‘বন্ধু’ বলি, তার যাত্রা আমার কাছে খুবই রোমাঞ্চকর মনে হয়েছে। এ চরিত্রের জন্য নিবিড় নিষ্ঠা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়েছে। সঙ্গীত, হাস্যরস ও ব্যঙ্গের মাধ্যমে মানুষকে বোঝানোর ক্ষমতা আমাদের সবার রয়েছে। এর মাধ্যমে সবাইকে একত্রে করা সম্ভব। সবসময়ের মতোই নুহাশের সাথে এ ক্যাম্পেইনে কাজ করা রোমাঞ্চকর। আমরা একসাথে অনেক কাজই করেছি কিন্তু ‘বিচ্ছুজ’ আমাদের দু’জনের জন্যই বিশেষ কিছু হিসেবে বিবেচিত হবে। ‘বিচ্ছুজ’ মানুষের জন্য একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে, যাতে তারা ‘হাত ধোয়া’র বিষয়টি না ভুলে যায়। কেননা, আমাদের এবং আমাদের দেশকে করোনাভাইরাস মহামারি থেকে সুরক্ষায় সবচেয়ে কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা হচ্ছে হাত ধোয়া।’

১৯৮৬ সাল থেকে হাত ধোয়ার গুরুত্ব নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে ওয়াটারএইড। সংস্থাটি শহর ও গ্রামাঞ্চলে জনসাধারণকে বিশুদ্ধ পানি, ব্যবহারযোগ্য টয়লেট এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস তৈরিতে উৎসাহিত করে আসছে। সংস্থাটির তরুণদের নিয়ে শাখা ‘ইয়ুথ ফর এসডিজি ৬’ গতবছর যাত্রা শুরু করে। এবং বর্তমানে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী-স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে তাদের কমিউনিটি ও প্রতিষ্ঠানে সুস্বাস্থ্যবিধির অভ্যাস গড়ে তুলতে কাজ করছে সংস্থাটি।

এ উদ্যোগ নিয়ে ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি। দেশের তরুণদের কাছে পৌঁছাতে নুহাশ ও প্রীতমের সহায়তা পেয়ে আমরা আনন্দিত। শুধুমাত্র এখনই নয় বরং সব সময়ের জন্য হাত ধোয়াকে আজীবনের অভ্যাসে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে ওয়াটারএইড। তরুণরা পরিবর্তনের বাহক হিসেবে কাজ করে এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়াকে সামাজিক প্রথায় পরিণত করতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তারা তাদের পরিবার এবং সমাজের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে সুস্বাস্থ্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং দেশকে সুরক্ষিত করতে পারে।”

প্রথম এপিসোড মুক্তি পেয়েছে ১১ মে। এরপর থেকে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজ, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে এ ওয়েব সিরিজ দেখা যাবে।

দেশজুড়ে মানুষ ও বিভিন্ন কমিউনিটিকে সহায়তায় অনলাইনে ও মাঠপর্যায়ে সচেতনতা কর্মসূচি আয়োজনে গত মার্চে ওয়াটারএইড #ফাইটকরোনাইউনাইটেড ক্যাম্পেইন চালু করে। এ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবেই ‘বিচ্ছুজ’ ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। ওয়াটারএইডের তরুণদের নিয়ে প্ল্যাটফর্মের উপদেষ্টা হিসেবে এ ওয়েব সিরিজ নির্মাণে সহায়তা করেছে নুহাশ হুমায়ুন এবং প্রীতম হাসান।