পোশাক কারখানা, বিপণি বিতান খুলে দেওয়ার সরকারি ঘোষণার পর লোকসানের মুখে থাকা চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখতে সিনেমা হলগুলোও খুলে দেওয়ার দাবি তুলেছে প্রযোজকদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত ১৮ মার্চ থেকে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে; পরবর্তীতে চলচ্চিত্রের শুটিংও স্থগিত রেখেছে চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো।
দেড় মাসে প্রায় ১৫টি চলচ্চিত্র মুক্তি না পাওয়ায় চলচ্চিত্র শিল্পের ‘প্রায় ২০০ কোটি টাকা’ ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু; চলচ্চিত্রের চলমান অচলাবস্থা কাটাতে ঈদের আগেই সিনেমা হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তবে ব্যবসার বাইরে গিয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনের ঝুঁকিকেই প্রাধান্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে কোনো সিনেমা হল খোলা হবে না বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি কাজী শোয়েব রশীদ।
হল খোলা কিংবা না খোলা নিয়ে প্রযোজক ও হল মালিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে তাদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতির প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল।
সিনেমা হল বন্ধ থাকায় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির লোকসানের কথা স্বীকার করলেও স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রসঙ্গ তুলে কাজী শোয়েব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিনেমা হলের ভেতরে বদ্ধ পরিবেশ; আলো-বাতাস কাজ করে না। দর্শকদের খুব কাছাকাছি বসতে হয়। দর্শকদের মধ্যে একজন আক্রান্ত হলে সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
ঈদে হল খুলে দেওয়ার পর দেখা গেল, আনন্দের বদলে শোকের মাতম করতে হবে আমাদের। আগে তো জীবন তারপর ব্যবসা।”
হল খুলতে চাওয়ার পেছনে প্রযোজকরা নিজেদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ এ হল মালিক নেতার।
“তাদের (প্রযোজক) বেশ কিছু সিনেমা পাইপলাইনে আছে। তাদের তো কোনো লস নাই, তারা টেবিল ম্যানি নিয়ে নেবে। তারা তো আর পারসেন্টেজে ছবি চালাবে না। সিনেমা না চললে তো প্রযোজকের লস নাই, হল মালিকদের লস।”
তাহলে প্রযোজক ও হল মালিকদের মধ্যে সমন্বয় হবে কীভাবে?-এমন প্রশ্নের জবাবে শোয়েব বলেন, “আগামী সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আগেই প্রযোজকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”