বুধবার পরিবারের সদস্যরা তাকে এইচএন রিলায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রায় এক বছর যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারের চিকিৎসা শেষে গত সেপ্টেম্বরে দেশে ফিরেছিলেন ঋষি কাপুর। কিন্তু মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্ট বা সংক্রমণজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিনও শ্বাসকষ্ট নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
তার বড় ভাই আরেক অভিনেতা রণধীর কাপুর সংবাদমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর জানান বলে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।
“তিনি আর নেই। তিনি মারা গেছেন,” রণধীর কাপুর এমনটি বলেছেন বলে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
ক্যান্সারে আরেক খ্যাতিমান অভিনেতা ইরফান খানের মৃত্যুর একদিন পর ঋষি কাপুরেরও মৃত্যু হল।
তিনি বলেছেন, “সে চলে গেল! ঋষি কাপুর…চলে গেল…এইমাত্র চলে গেল…আমি বিপর্যস্ত!”
আরেক অভিনেতা রজনীকান্তের টুইট, “হৃদয়বিদারক…শান্তিতে ঘুমাও…আমার প্রিয় বন্ধু।”
এক বিবৃতিতে ঋষি কাপুরের পরিবার বলেছে, “দুই বছর লিউকেমিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করার পর আমাদের প্রিয় ঋষি কাপুর আজ সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে শান্তিপূর্ণভাবে চলে গেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি তাদের বিনোদন দিয়ে গেছেন।
“আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষতির এই সময়ে আমরা এই বিশ্ব যে কঠিন ও সমস্যাজনক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাও স্মরণে রেখেছি। প্রকাশ্যে চলাফেরা করা ও একত্র হওয়ার বিষয়ে বহু বিধিনিষেধ আরোপিত আছে। আমরা তার ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষি ও পরিবারের বন্ধুদের অনুরোধ জানিয়ে বলছি, বলবৎ থাকা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।”
ঋষির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতীয় কংগ্রেসের এমপি রাহুল গান্ধী, শশী থারুর।
এক টুইটে রাহুল বলেছেন, “আরেকজন কিংবদন্তি অভিনেতা ঋষি কাপুরও চলে গেলেন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের জন্য ভয়ানক একটি সপ্তাহ। একজন চমৎকার অভিনেতা, কয়েক প্রজন্ম ধরে বহু ভক্ত অনুরাগী আছে তার, তার অভাব খুব অনুভূত হবে। এই শোকের সময়ে তার পরিবার, বন্ধুদের ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি আমি।”
বাবার পরিচালিত ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে ঋষির যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাকে প্রথম দেখা যায় শ্রী ৪২০ ছবির জনপ্রিয় গান ‘পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া’য় শিশুশিল্পী হিসেবে।
১৯৭০ সালে বাবার নির্মিত ছবি ‘মেরা নাম জোকার’ এ রাজ কাপুরের শিশু বয়সের চরিত্রে অভিনয় করে সেরা শিশু শিল্পীর পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। এর তিন বছর পর ‘ববি’ চলচ্চিত্রে মূল ভূমিকায় অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি পান। এর পরের কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি ওই সময়ের শীর্ষ রোমান্টিক নায়কে পরিণত হন।
২০১২ সালে ‘অগ্নিপথ’ ও ২০১৮ সালে ‘মুলুক’ চলচ্চিত্রে নিজের ভূমিকায় অভিনয় তার জীবনের অন্যতম সেরা কাজ ছিল বলে ধারণা চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের।
স্ত্রী নীতু কাপুর, ছেলে রনবীর কাপুর ও কন্যা রিদ্দিমাকে রেখে চিরবিদায় নিলেন আজীবন দর্শকদের আনন্দ দেওয়া এই অভিনেতা।