বিটিভিতে রোজ ৮টার সংবাদের পর ‘কোথাও কেউ নেই’ ও ‘বহুব্রীহি’

করোনাভাইরাসের কবলে ‘ঘরবন্দি’ দর্শকদের একঘেয়েমি কাটাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সোমবার থেকে টানা একমাস ধরে প্রতিদিন প্রচার করা হবে নন্দিত দুই ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ ও ‘বহুব্রীহি’।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2020, 10:58 AM
Updated : 5 April 2020, 12:26 PM

রাত ৮টার বিটিভির সংবাদের পর ‘কোথাও কেউ নেই’ প্রচার শুরু হবে; শেষ হওয়ার পরপরই ‘বহুব্রীহি’র প্রচার করা হবে বলে গ্লিটজকে নিশ্চিত করেছেন টিভি চ্যানেলটির পরিচালক (অনুষ্ঠান ও পরিকল্পনা) জগদীশ চন্দ্র এষ।

পর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ধারাবাহিকের একটি করে পর্ব প্রচার করা হবে বলে জানান তিনি।

বিটিভির জেনারেল ম্যানেজার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নাসির মাহমুদ গ্লিটজকে জানান, মাসজুড়েই ধারাবাহিক দুইটি প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধারাবাহিক ২৬ পর্বের; সেটি আগেই শেষ হবে।

প্রচার শুরুর আগেরদিন রোববার বিকালে বিটিভির মহাপরিচালক এস. এম. হারুন-অর-রশীদসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এ শিডিউল চূড়ান্ত করা হয়েছে। 

সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিদিনই প্রচারের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে; তারপরও বেশ পুরোনো ভিডিও বিবেচনায় যান্ত্রিক কারণে মাঝে দুই-একদিন প্রচার করা সম্ভব না হলে দর্শকদের তা জানানো হবে বলে গ্লিটজকে জানান টিভি চ্যানেলটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।

করোনাভাইরাসের কবলে ‘ঘরবন্দি’ দর্শকদের একঘেয়েমি কাটাতেই নব্বই দশকের জনপ্রিয় ধারাবাহিক দুটি প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান বিটিভির মহাপরিচালক।

এর আগে রোববার তিনি গ্লিটজকে বলেন, “আমাদের দর্শকদের কাছে সিরিয়াল দুটি খুবই জনপ্রিয়। করোনাভাইসের এই ‘ঘরবন্দি’ অবস্থায় মানুষ যেন একটু স্বস্তিতে থাকেন, বিনোদন খুঁজে পান সেই কারণেই এগুলো প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের রচনায় ১৯৯২-৯৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিকের নির্দেশনা দেন বরকত উল্লাহ; নাটকের ‘বাকের ভাই’ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।

বাকের ভাইয়ের ফাঁসি আটকাতে সাধারণ মানুষ রাজপথে মিছিল করে প্রতিবাদ করে; সমসাময়িক পত্রপত্রিকায় এ খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারও করা হয়। ফাঁসির বিপক্ষে জনমত থাকা সত্ত্বেও চিত্রনাট্য অনুযায়ী বাকের ভাইয়ের ফাঁসিই দেওয়া হয়।

এতে মুনা চরিত্রে সুবর্ণা মুস্তফা, বদি চরিত্রে আবদুল কাদের, মজনু চরিত্রে লুৎফর রহমান জর্জ, মতি চরিত্রে মাহফুজ আহমেদ, বকুল চরিত্রে আফসানা মিমি, উকিল চরিত্রে হুমায়ুন ফরিদীসহ আরো অনেকে অভিনয় করেন।

এর আগে ১৯৮৮-৮৯ সালের দিকে বিটিভিতে প্রচারিত আরেক ধারাবাহিক ‘বহুব্রীহি’ও লিখেন হুমায়ূন আহমেদ; এটি প্রযোজনা করেন নওয়াজিশ আলী খান।

সামরিক শাসনের সেই সময়ে এ ধারাবাহিকে পাখির মুখ দিয়ে বলানো ‘তুই রাজাকার’ সংলাপটি স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতি ঘৃণার প্রকাশভঙ্গি হিসেবে মুখে তুলে নেয় বাংলাদেশের মানুষ; পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন আন্দোলনে শ্লোগান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এ সংলাপ।

একটি পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, আলী যাকের, আফজাল হোসেন, লুৎফরনাহার লতা, লাকী ইনাম, আবুল খায়ের, আফজাল শরীফসহ আরো অনেকে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ: