অনলাইন প্লাটফর্ম হৈচৈ-এ সম্প্রতি অবমুক্ত হলো নতুন ওয়েব সিরিজ ‘একাত্তর’য়ের টিজার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে হৈচৈ-এর অরিজিনাল এই ওয়েব কন্টেন্টটি অবমুক্ত করা হবে।
কিন্তু টিজার অবমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে - তা আলোচনার বিষয়ও বটে। ইরেশ যাকের, রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা, নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং মনোয়ারের মত শক্তিশালী শিল্পীদের পাশে আরেকজনকে নিয়ে আলাপ হচ্ছে - যার নাম মোস্তাফিজ নূর ইমরান।
শিরোনাম দেখে মনেই হতে পারে - তিনি ‘এক্সট্রা’ থেকেই লাইমলাইটে কিনা!
বিষয়টা তার থেকেও “এক্সট্রা অর্ডিনারি”।
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ’ইতি তোমারই ঢাকা’ চলচ্চিত্রে যে ১১টি গল্প ছিল সেই গল্পগুলোর একটিতে তিনি ছিলেন। এক্সট্রা হিসেবে নয়- একেবারে প্রধান চরিত্রে। গল্পটির নাম ‘এক্সট্রা’ এবং সেটির পরিচালনা করেছেন নুহাশ হুমায়ূন।
’এক্সট্রা’তে ইমরানের অভিনয় সমাদৃত হয়েছে আগেই। তার চরিত্রের সঙ্গে মিশে যাওয়া, অভিনয় শৈলী চোখে পড়ে সবার। হঠাৎ করেই যেন চোখে পড়ে যান ইমরান।
কিন্তু এই যাত্রাটির সূচনা মাত্রই হয়নি। হয়েছে সেই ২০০৯ সালে। ২০০৯ এ এনটিভির সুপার হিরো সুপার হিরোইন রিয়্যালেটি শো দিয়ে তিনি মিডিয়াতে যাত্রা শুরু করেছেন। কাঠখড় পুড়িয়ে নিজের যোগ্যতা দিয়েই আজকের আসন শক্ত করেছেন বলে জানান এই অভিনেতা।
প্রতিটি চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করেন নতুন করে। তাই তাকে দেখলে তাক লেগে যায় তো বটেই। প্রতিবার ‘নবাগতও’ মনে হতে পারে!
স্মিতভাষী ইমরান বলেন, ‘আসলেই চেষ্টা করি নিজেকে অন্যভাবে তুলে ধরার। তা না হলে তো দর্শক চর্রিত গুলিয়ে ফেলবে।
ব্যাচের সেরা শিক্ষার্থী হয়ে ইমরান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্বে স্নাতক এবং অভিনয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। একারণেই হয়তো অভিনয়ের প্রতি তার যে ভালোবাসা তা নিতান্তই কাজ করার জন্য ‘কাজ করা’ নয়।
’একাত্তর’য়ে তাকে দেখা গেছে ‘সিরাজ’ চরিত্রে। ট্রেইলারে তার বলিষ্ঠ উপস্থিতি চোখে পড়ার মতন।
এই সিরিজে অভিনয় করা প্রসঙ্গে ইমরান বলেন, ‘দারুণ অনূভূতি। টিমটাই অসাধারণ। আর পরিচালক তানিম নূরের কাজ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রতিটা কাজই আমার কাছে শিক্ষণীয়- এই সিরিজে কাজ করতে গিয়েও শিখেছি অনেক কিছু। “
এমনকী মঞ্চে উঠে কিছু বলার সময়েও ‘অমায়িক’ ইমরান কৃতজ্ঞতাই জানান।
ইমরান অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিয়েছেন তো বটেই। কিন্তু কাজ করছেন এমনভাবে যেন মনের খোড়াকটা ‘চাহিদার’ আড়ালে হারিয়ে না যায়।
তার এই একাগ্রচিত্ততার কারণেই হয়তো সম্প্রতি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে একটু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় হতে যাওয়া এই বায়োপিকে কোন চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন তিনি?
এই প্রশ্নের উত্তরে স্মিত হেসে ইমরান বলেন, “সব ঠিক থাকলে শেখ মণির চরিত্রে দেখা যাবে হয়তো আমাকে।”
অতএব বোঝাই যাচ্ছে, এক্সট্রা থেকে শেখ মণির চরিত্রে অভিনয় করার সম্ভাবনা যার মাঝে - তিনি আর যাই হোক- নবাগত নয়।
ইমরান জানালেন, ইতিহাস নিয়ে কাজ করা এই শেষ নয়। তাকে আরেকটি শর্টফিল্মে দেখা যাবে ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে নির্মিত একটি শর্টফিল্মে। যেটির স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন তানিম নূর। মুজিব-বর্ষ উপলক্ষে এই শর্টফিল্মটি অচীরেই মুক্তি পাবে।
ইমরান বলেন, ‘এই শর্টফিল্মটি নির্মিত হয়েছে তাদের নিয়ে যারা ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ভিডিও করেছিল। বিষয়টি অন্যরকম।”
ছোট্ট আলাপের শেষে ইমরান বলেন, ‘আমার কাছে ভালো কাজ মানে আশীর্বাদ। তাই সারাজীবন এই আশীর্বাদই চাই।”
আর তাই এমন ভাবেই অভিনয় করতে চান মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, যেন তার জীবন ছেয়ে থাকে সকলের আশীর্বাদের চাদরে। আর তাই ১১ বছরের যাত্রার পর আজ তিনি পরিচিত অভিনেতা হিসেবেই।
থাকতে চান অভিনেতা হয়েই।