মঞ্চ ও পর্দা কাঁপানো শতবর্ষী এই অভিনেতা ১৯৬০ সালের ধ্রুপদী চলচ্চিত্র ‘স্পার্টাকাসে’ শিরোনাম ভূমিকাসহ নানামাত্রিক চরিত্রের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।
অভিব্যক্তি ও চরিত্র ফুটিয়ে তোলায় মুনশিয়ানার জন্য পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে কার্ক ডগলাস হয়ে উঠে ছিলেন অদ্বিতীয়।
‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাভ অব মার্থা আইভারস’ দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেন কার্ক ডগলাস। এই সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন বারবারা স্ট্যানউইক।
১৯১৬ সালে নিউ ইয়র্কে জন্ম নেওয়া কার্ক হলিউডের স্বর্ণযুগে খ্যাতির চূড়ায় উঠেছিলেন। ১৯৪৯ সালের ‘চ্যাম্পিয়ন’ চলচ্চিত্রে বক্সারের চরিত্রের জন্য প্রথমবারসহ মোট তিনবার অস্কারের জন্য মনোনীত হলেও পুরস্কার পাননি তিনি।
তার অভিনীত খ্যাতনামা পরিচালক স্ট্যানলি কুবরিকের স্পার্টাকাস চারটি অস্কার পেলেও তার ভাগ্যে জুটেনি। তবে ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে ৫০ বছরের অবদানের জন্য তাকে সম্মানসূচক অস্কার দেওয়া হয়।
“কার্ক ডগলাসকে সবাই মনে রাখবে তার কাজ দিয়ে। তার অবদান অসীম।”
নিউইয়র্ক রাজ্যের আমস্টারডাম শহরে এক দরিদ্র ইহুদি অভিবাসীর ঘরে জন্ম নেওয়া কার্কের নাম বাবা-মা রেখেছিলেন ইসার ড্যানিয়েলোভিচ ডেমস্কি। জারের সেনাবাহিনীতে জোরপূর্বক ভর্তি এড়াতে রাশিয়া থেকে পালিয়ে এসেছিলেন।
পিতা-মাতার সাত সন্তানের মধ্যে অন্যতম কার্ক খাবারের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ যোগাতে স্থানীয় কারখানায় শ্রমিকদের কাছে স্ন্যাক্স বিক্রি করেছিলেন। তিনি ৪০টিরও বেশি চাকরি করেছেন বলে আত্মজীবনীতে দাবি করেছেন।
স্কুলজীবনে মঞ্চে অভিনয় থেকেই তিনি অভিনয়কে ধ্যানজ্ঞান বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আত্মজীবনীতে কার্ক বলেন, “জীবনের একটি জিনিস আমি সবসময় জানতাম, যার কোনো নড়চড় হয়নি- তা হলো আমি অভিনেতাই হতে চেয়েছিলাম।”
কার্ক ডগলাস হলিউডের সেইসব মহারথীদের অন্যতম ছিলেন যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে খ্যাতির চূড়ায় উঠার যাত্রা শুরু করেন। তিনি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে অপ্রতিরোধ্যদের একজন।
একবার তিনি বলেছিলেন, “আমাকে ‘অভিনেতা’ হিসেবে সনদ দেওয়ার জন্য কোনো সমালোচকের দরকার নেই। নিজের পথ আমি নিজেই তৈরি করি। কেউ আমার বস নয়। কেউ কখনোই আমার বস ছিল না।”
কার্ক ডগলাসের অন্তিম প্রস্থানের মাধ্যমে শেষ হয়ে গেল হলিউডের একটি যুগের অবসান। তবে তিনি ও তার পরিবার সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করে আসছিলেন তা অব্যাহত থাকবে বলে তার পরিবার নিশ্চিত করেছে।