কনসার্ট মানেই ওপেন এয়ার: দোজা এলান

যারা কনসার্টের মঞ্চের পেছনে কাজ করেন, তাদের নিয়ে খুব বেশি আলাপ হয় না বটে। কিন্তু লাইট, সাউন্ড বা ক্যামেরার কাজ ঠিক না হলে দায়টা তাদের ওপরেই আসে। যেমন আসে স্কাই ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী দোজা এলানের ওপর।

রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2019, 01:41 PM
Updated : 26 Dec 2019, 01:59 PM

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দোজা এলান কনসার্টের আয়োজন করে চলছেন। এবার গ্লিটজের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে জানালেন রকফেস্ট ২০১৯’য়ের আয়োজন এবং কনসার্ট নিয়ে কিছু কথা।

দোজা এলান যখন গ্লিটজের ক্যামেরার সামনে তখনও ফোনে ব্যস্ত কনসার্টের আয়োজন নিয়ে। তিনি শুরু করলেন আলাপ। আলাপ যখন রকফেস্ট নিয়ে তারিখ নিয়ে আলাপ উঠবেই। ফুয়াদের কনসার্টের পর থেকেই তার ইচ্ছা ছিল একটি কনসার্ট করবেন যেখানে আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডরা পারফর্ম করবে। আর সেটা যদি হয় বছর শেষে হয় – তাহলে তো কথাই নেই। কারণ বছর শেষে শীতের আমেজে কনসার্টের উত্তাপ ভক্তদের উষ্ণতায় আগলে রাখে।

এবারও সেই ইচ্ছা থেকে কনসার্টের আয়োজন শুরু হয়। প্রথমে আয়োজকদের ইচ্ছা ছিল ডিসেম্বরের ২১ তারিখে কনসার্টটি করতে। কিন্তু মাইলস এবং আর্টসেলের যথাক্রমে চল্লিশ বছর পূর্তি ও বিশ বছর পূরণের বড় দুটো কনসার্টের কথা বিবেচনা করে তিনি তারিখ পিছিয়ে আনেন ২৭ তারিখে। তাতে কী দর্শক কমে যাবে কিনা এই ধরনের কথার উত্তরটা তার সাদামাটা।

তিনি বলেন,“ কনসার্টের দর্শক সবসময় ছিল, সবসময় থাকবে। আর ওপেন এয়ার হলে তো কথাই নেই।”

ওপেন এয়ারের প্রসঙ্গ উঠতেই ’ইনডোর’ কনসার্ট এবং ‘ওপেন এয়ারকনসার্ট’ নিয়ে নিজের মতামত দেন দোজা এলান।

বলেন, “কনসার্ট মানেই ওপেন এয়ার। যে সাউন্ড, যে আয়োজন থাকে তা আসলে ইনডোরের আয়োজনে পরিপূর্ণ করা সম্ভব নয়। তবে এজন্য দরকার ভেনু।”

ভেন্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের কনসার্টের জন্য আলাদা কোনো ভেনু নেই। যা আছে তা হল মাঠ। আর্মি স্টেডিয়ামটা। তাও এখন পাওয়া যায় না। আগে আমরা কমলাপুর স্টেডিয়ামেও করতাম। এখন সেখানে চাইতেও খারাপ লাগে। খেলার একটা জায়গা আটকে রাখা। নির্ধারিত একটা স্থান থাকলে হয়ত ভেনু নিয়ে ভাবতে হত না। বা ওপেন এয়ার করা নিয়েও ভাবতে হত না।”

দোজা এলান আরও বলেন, “বাইরের দেশে কনসার্ট বলেন বা যে কোনো আয়োজন বলেন তা নির্ধারিত হয় অন্তত এক বছর আগে। আমাদের এখানে সেই সুযোগটা কম। এখানে খুব সংক্ষিপ্ত নোটিসে একটা আয়োজন হয়ে যায়। তাই ভেনুর জন্য তৈরি হওয়া বা অনুমতি নেওয়ার ব্যাপারটায় আর সময় দেওয়া যায় না।”

তবে তিনি বারবার বলেন “কনসার্টের আনন্দ কখনই চার দেয়ালের মাঝে পাওয়া সম্ভব নয়।”

কনসার্টের আয়োজন আর টিকিট নিয়ে কথা হবে না – তা তো হতেই পারে না। এবারের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হল টিকেট দেখে কনসার্ট ৈদেখার রব ওঠা।

আর্টসেলের বিশ বছর পূর্তি বা মাইলসের চল্লিশ বছর পূর্তির কনসার্টের টিকেট কাটার হুলুস্স্থুলটা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতন। এবার রকফেস্টেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বেশ।

দোজা এলান বলেন. “বিশ্বের আর কোথাও সঙ্গীত বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। একমাত্র বাংলাদেশে সঙ্গীত ‘ফ্রি’। ভাবা যায়! অথচ দর্শক কিন্তু চায়। তাই সবাইকে অনুরোধ ভালো সঙ্গীতের জন্য টিকেট কেটে খরচ করে একটি আয়োজন উপভোগ করার।”

আয়োজনের প্রসঙ্গে নিজের ভূমিকা নিয়ে বেশ সোজা সাপটা এই ডিজুসের সময় থেকে কনসার্ট নিয়ে কাজ করা মানুষটি।

তার মতে, “একবার ভালো কাজ করলে দর্শকই পরের বারের জন্য অপেক্ষা করবে। ফুয়াদের কনসার্টের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ফুয়াদের সার্বিক আয়োজন নিয়ে কারও কোনো বিরূপ মন্তব্য পাইনি। তাই আজ সবাই রকফেস্টের জন্য অপেক্ষা করছে।”

আয়োজকদের ভূমিকা অনেক বড় একটি আয়োজনকে সফল করতে – এটাই তার বিশ্বাস। ফোনের বারংবার আহ্বানে তাড়ায় দোজা এলান যখন উঠি উঠি করছেন তখন বললেন চমকের কথা। অর্ণব যেমন খোলা যাদু এই কনসার্টে তেমনই থাকছে আরও কিছু চমক যা পাওয়া যাবে মাঠে তখনই।

আর অর্ণবের প্রসঙ্গে আরও বেশি উৎফুল্ল তিনি। কারণে অনেকদিন পরে এমন খোলা আকাশের নিচে অর্ণবের সুরে কণ্ঠ মেলাতে পারবেন ভক্তরা। পাশাপাশি আছে বেশ কয়েকটি আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড, আছে অজানা চমক।

“মন্দ হবে না”- বলে মুচকি হাসলেন দোজা এলান।

২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা রক ফেস্ট ২০১৯। বাংলা ব্যান্ড মিউজিক ফ্যানদের জন্য এই ফেস্টিভ্যাল নিয়ে আসছে গান-বাংলা টিভি, বাংলালিংক, আয়োজনে রয়েছে স্কাই ট্র্যাকার লি. এবং পি আর পার্টনার হিসেবে রয়েছে মিডিয়া কোয়েস্ট বাংলাদেশ।

বছরটিকে দারুণ একটি বিদায় দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয়েছে ঢাকা রক ফেস্টের। এর লাইন-আপে রয়েছে অর্ণব, নেমেসিস, আর্বোভাইরাস, অ্যাভয়েডরাফা, পাওয়ারসার্জ, বে অফ বেঙ্গল, ট্রেইনরেক, ওন্‌ড, কনক্লুশনএবং সিন।

স্কাই ট্র্যাকারের এ বছরের আরেকটি সাড়া জাগানো আয়োজন ছিল ফুয়াদ অ্যান্ড ফ্রেন্ডস কনসার্টটি। এরপরেই তারা আযোজনে নামে ঢাকা রকফেস্টের। যেটিকে সহযোগিতায় আছে গান বাংলা এবং বাংলালিংক।