গান-গল্পে ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহারের প্রত্যয়

গুজবের জঞ্জালে ভরা ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের শপথ করালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2019, 04:37 PM
Updated : 12 Dec 2019, 04:37 PM

তৃতীয় ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডার ইউনাইটেড সিটি মাদানী এভিনিউয়ের ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনসার্টে উপস্থিত হাজারো তরুণ এ শপথে শামিল হন।

মন্ত্রীর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তরুণরা উচ্চারণ করেন, …“ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে যাব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে জানব, মানব ও অন্যদের উদ্বুদ্ধ করব। …সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রাখবো। ভিন্ন মতামত, বিশ্বাস, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি অবমাননাকর পোস্ট শেয়ার করা থেকে বিরত থাকব।”

যেকোনো তথ্য শেয়ারের আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার প্রত্যয় করেন তরুণরা।

“সচেতন নাগরিক হিসেবে ইন্টারনেটে ব্যবহারে আগামীর বাংলাদেশ গঠনে দায়িত্ব পালন করে যাব। একেকটি সঠিক ক্লিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ কনসার্টে আমন্ত্রিত সংগীতশিল্পীরাও শপথে অংশ নেন।

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ কনসার্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “সবাই ডিজিটাল বাংলাদেশকে ভালোবাসে। বাংলাদেশের গান-সংস্কৃতিকে ভালোবাসে। ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা না দিলে আমরা এখনও অন্ধকারেই থাকতাম।”

ভোলা, রামুতে গুজব ছড়িয়ে সহিংসতার কথা স্মরণ করিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা সত্য মিথ্যা যাচাই না করে ইন্টারনেটে কোনো কিছু শেয়ার করব না।”

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।

এর আগে বিকেলে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে কনসার্টের মূল আয়োজন শুরু হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি এক মিনিট নিরবতা পালনের পর মঞ্চে আসে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে গঠিত ব্যান্ড ‘স্পন্দন’।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ও আনোয়ার পারভেজের সুরে কালজয়ী গান ‘জয় বাংলা’ গানের মধ্য দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডটি।

এরপর স্পন্দনের ‘স্কুল খুইলাছে রে’ এর মতো শ্রোতাপ্রিয় গানের তালে কণ্ঠ মেলাতে থাকেন দর্শকরা।

এরপর মঞ্চে আসেন তরুণ প্রজন্মের উঠতি সংগীতশিল্পী ঐশী। ‘তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব’ দিয়ে পরিবেশনা শুরুর পর কণ্ঠে তোলেন ‘ছেড়ে দে নৌকা আমি যাব মদিনা’, ‘তোমার দিল কী দয়া হয় না’, ‘দমা দম মাসকালান্দার’।

ঐশীর পরিবেশনার পর প্রার্থনার বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির পর মঞ্চে উঠে তরুণ সংগীতশিল্পী ইমরান। তার পরিবেশনার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়।

‘জানালা’ নিয়ে মঞ্চে উঠে ‘বীর’, ‘অবচেতন’সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করে নেমেসিস।

নেমেসিসের পরিবেশনার পর শপথ করান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এরপর মঞ্চে উঠে ওয়ারফেইজ; ব্যান্ডটি একে একে পরিবেশন করে ‘না’, ‘মহারাজ’র মতো শ্রোতাপ্রিয় গান।

তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদের পরিবেশনার পর সমাপনী শিল্পী হিসেবে ‘লোকাল বাস’ নিয়ে মঞ্চে উঠেন সংগীতশিল্পী মমতাজ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে সরকারের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন-এটুআই প্রকল্প, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি।

আয়োজকদের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর বাইরে রাজশাহী ও সিলেটেও অনুষ্ঠিত হবে কনসার্ট ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ। সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে এ কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস’ পালন করা হলেও এক বছর পর দিবসের নাম পরিবর্তন করা হয়। এখন ১২ ডিসেম্বর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ পালন করছে সরকার।