রাজধানীর গুলশানে বুধবার সন্ধ্যায় দ্য ব্রিটিশ এইড গেস্ট হাউস অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবের প্রামাণ্যচিত্রটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ক্লাবের নিবেদনে নির্মাণ করা হয়েছে এটি; এতে মুক্তিযুদ্ধকে কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করা বিদেশি সাংবাদিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, কূটনৈতিকরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই সেই দিনগুলোর কথা তুলে এনেছেন।
প্রায় আধাঘণ্টা ব্যাপ্তির প্রামাণ্যচিত্রে মুক্তিযুদ্ধকালীন লন্ডনের ডেইলি ট্রেলিগ্রাফের সাংবাদিক সাইমন ড্রিং-এর অভিজ্ঞতা উঠে আসে। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের রাতে ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করে দুইদিন পর ঢাকার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ‘ট্যাংকস ক্র্যাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’ শিরোনামে সংবাদ লিখেন।
সেই দিনগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনেছিলাম। আমি বাংলা না বুঝলেও মানুষের উপস্থিতি আর উদ্দীপনা আমাকে আগ্রহী করে তুলেছিল। বঙ্গবন্ধু বলছিলেন, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। জয় বাংলা।”
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের শরণার্থী শিবিরে বাংলাদেশির জন্য কাজ করে বাংলাদেশের বন্ধু হয়ে উঠে যুক্তরাজ্যের সমাজকর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিসের যুদ্ধদিনের অভিজ্ঞতাও উঠে আসে প্রামাণ্যচিত্রে। অন্যান্যদের মধ্যে তিনিও প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে বিদেশি বন্ধুর সম্মাননা দেওয়া হয় জুলিয়ান ফ্রান্সিসকে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সমর্থনে এবং পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় জুলিয়ান ফ্রান্সিস এ দেশে বাস করছেন ১৯৯৮ সাল থেকে।
প্রামাণ্যচিত্রে ডেনমার্কের রাষ্টবিজ্ঞানী ক্রিস্টেন ওয়েস্টাগার্ড যুদ্ধদিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “একটি রিসার্চ প্রজেক্টে কাজের জন্য ১৯৭১ সালে প্রথম বাংলাদেশের কুমিল্লায় এসেছিলাম। কাজের জন্য ফিল্ডে যাওয়ার আগে আমরা রেডিওতে রেসকোর্সে শেখ মুজিবের ভাষণ শুনছিলাম। রেসকোর্সের। তখন ঢাকায় এসে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম সেই দিনগুলো।”
মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবিরে ক্যামেরা কাঁধে চষে বেড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র নির্মাতা লেয়ার লেভিনও তুলে আনেন সেই সময়ের দিনলিপি।
প্রামাণ্যচিত্রটির প্রদর্শনীর পর মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা দর্শকদের সঙ্গে ভাগ করে নেন জুলিয়ান ফ্রান্সিস।
এর আগে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’র ভিডিওচিত্র দেখানো হয়।