নৃত্যের মুদ্রায় চিত্রিত হল বৃন্দাবনে রাধা-কৃষ্ণের অমর প্রেমলীলা, সবশেষে শুদ্ধ-সুন্দর ও মঙ্গল কামনায় প্রকৃষ্টতার সাথে আহ্বান জানাল হল সর্বশক্তিমানকে ।
নৃত্য সংগঠন কল্পতরু আয়োজিত ভরতনাট্যম উৎসব ‘রঙ্গার্পনে’ তিন নৃত্যশিল্পী জুয়েইরিয়াহ মৌলি, শাম্মী আকতার,শুদ্ধা শ্রীময়ী দাসে ভরতনাট্যমের আদি ধারার এমন গল্প চিত্রিত করেছেন ছায়ানট মিলনায়তনে।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এই নৃত্য উৎসব ‘রঙ্গার্পন’ শেষ হয় গত বুধবার।
বুধবার সন্ধ্যায় জুয়েইরিয়াহ মৌলি তার পরিবেশনা শুরু করেন ‘পুষ্পাঞ্জলীর’ মাধ্যমে।
রাগ আরাভি ও তাল আদিতে জগতের সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে শুভ কর্মে সফলতা প্রার্থনায় দেবতা শ্রীগণপতির বন্দনা উপস্থাপিত হয় এই নৃত্যে।
পরে রাগ আরাভি আর তাল মিশ্র চাপুতে তিনি পরিবেশন করেন ভরতনাট্যমের অন্যতম প্রাচীন ধারা ‘আলারিপু’; যাতে বন্দিত হন দেবতা মুরুগা।
দেবরাজ নটরাজের বিচ্ছেদ বেদনায় কাতর ক্রোধান্বিত নায়িকা ‘ভার্নামে’ ফুটিয়ে তুলেন তার প্রতীক্ষার কথা। ভার্নামের রাগ মালিকা, তাল আদি।
মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণের বাল্যকাল ফুটে উঠল ভরতনাট্যম ‘দেভার্নামায়’। এর রাগ বৃন্দাবানী, তাল আদি।
মৌলির পরিবেশনায় নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন কীর্তি রামগোপাল, ব্রাঘা বেসেল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাম্মী আকতার তার পরিবেশনা শুরু করেন ‘তোড়িয়া মাঙ্গালাম’ এর মাধ্যমে। রাগ মালিকা, তাল মালিকায় এই মাঙ্গলামে সর্বশক্তিমানকে প্রকৃষ্টতার সাথে আহ্বান জানানো হয়। এতে তিন জগতের সুদর্শন এবং মহিমান্বিত প্রভু
রামের প্রশংসা করা হয়।
ভরতনাট্যম আবৃত্তির কেন্দ্রীয় অংশ ‘ভার্নাম’। এ নাচে প্রিয় ভগবান শানমুখা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার নায়িকা ফুটিয়ে তুলেন তার বিরহযন্ত্রনা। এ নৃত্যের রাগ কাম্বোধি ও তাল আদি।
রাগ বৃন্দাবানা সারাংগ,তাল আদিতে শাম্মী পরিবেশন করেছিলেন ‘ভজন’। এই ভজনে ফুটে উঠে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম।
ভরতনাট্যম আবৃত্তিতে আনন্দ এবং সমাপ্তির নাচ ‘তিল্লানা’ আর দ্রুত গতিময়তার ‘থিলানা করুণা’ও পরিবেশন করেন তিনি। এ নাচের রাগ বৃন্দাভানি ও তাল আদি।
শাম্মীর প্রতিটি নাচ পরিচালনা করেন
সোমবার উদ্বোধনী সন্ধ্যায় শুদ্ধা শ্রীময়ী দাস পরিবেশন করেন ‘ভার্নাম’, ‘কৌতুভূম’।
তিন শিল্পীর সঙ্গে মঞ্চে নাট্টুভঙ্গমে ছিলেন কীর্তি রামগোপাল, কণ্ঠসঙ্গীতে নন্দকুমার উনিকৃষ্ণ, মৃদঙ্গে জনার্দন রাও, বাঁশিতে নিতিশ কংকল।