নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের ‘নতুনের উৎসব’ যেসব কারণে সত্যি ‘নতুন’

নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সপ্তাহব্যাপী নাট্য উৎসবের আজ শেষ দিন। ‘নতুনের উৎসব’ শিরোনামের এই উৎসব শুরু হয়েছিল নভেম্বরের ২৯ তারিখে।

রুম্পা সৈয়দা ফারজানা জামানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2019, 06:58 AM
Updated : 5 Dec 2019, 06:58 AM

মোস্তাফিজ শাহীন পরিচালিত ‘লটারী’ নাটকটি দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে এই প্রাণের উৎসব।

উৎসবের বিভিন্ন দিন ঘুরে দেখা গেছে, নাটক-প্রেমী এবং অভিনয় শিল্পীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মত। উৎসবে শুধু নাটক দেখাই নয়, হয়ে উঠেছে মিলনমেলা। যত দিন গিয়েছে তত বেশি আগ্রহ বেড়েছে এই উৎসবের প্রতি। তার কারণও বললেন উৎসব সংশ্লিষ্টরা। বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন উৎসবটি আরও বড় ‘উৎসব’য়ে পরিণত হওয়ার কারন।

সাতটি নতুন নাটকের প্রিমিয়ার:

এই প্রথম কোনও উৎসবে সাতটিই নতুন নাটক মঞ্চায়িত করা হয়েছে। এই উৎসবের জন্যই খেটেছেন নাট্যকর্মীরা। ফলে নতুন নাটক দেখার একটি স্পৃহা কাজ করেছে আগত দর্শকদের মাঝে। একই সঙ্গে নতুন নাটক সামনে আনার আনন্দ এবং একাধারে উত্তেজনাও ছিল মঞ্চকর্মীদের মাঝে।

প্রণোদনায় মঞ্চনাটক:

এই প্রথম কোনও দলকে নয়, ব্যক্তি তথা নির্মাতা-নির্দেশককে প্রণোদনার মাধ্যমে নতুন নাটক সামনে আনার উৎসাহ দিয়েছে আয়োজককারী। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়েরর দুইজন সদস্য ছাড়া বাকীরা সবাই নিজ উদ্যোগে নিজের নাটকের শিল্পী থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিকল্পনা করেছে। যেমন, শামীম সাগর সুনামগঞ্জের বন্ধন থিয়েটার ও প্রসেনিয়াম থিয়েটারের সঙ্গে মিলিত হয়ে যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন ‘রাধারমণ’। যা ছিল একটি অন্যরকম আয়োজন।

সাজসজ্জায় ছিল নতুন সংযোজন:

সাধারণত দেখা গেছে মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে যেকোনও সাজ সজ্জার কাজ নিজেরাই করে ফেলে এই দলগুলো। কিন্তু এবার ছিল স্পন্সর। মুকিম ক্রিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিজেরা এই সাজ সজ্জার দ্বায়িত্ব নিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকল দলকে সহায়তা করেছে। যা আগে হয়নি।

বিনোদনের কেন্দ্র:

সাধারণত এরকম নাট্য উৎসবে কোনও রকমের আহার-স্টল পরিকল্পনায় থাকে না। যারা আসেন তারা নাটক দেখে আশেপাশে হয়তো নাস্তার আয়োজন খোঁজে। এবার উৎসবকে পূর্নাঙ্গ রূপ দিতে প্রাঙ্গনে ছিল টিস্টলের আয়োজন। ফলে যারা এসেছেন তারা ঘুরে ফিরে একেবারে মেলার মতই সম্পূর্ণ সময় উপভোগ করেছেন। এবং বসার আয়োজন করে উৎসব প্রাঙ্গনে তৈরি করা হয়েছে আড্ডার প্রাণবন্ত জায়গা।

ভিন্ন রকম সংযোজন:

সকল নাটক এবং নাট্য আয়োজনে ভিন্ন সংযোজন সবার চোখে পড়েছে। বিশেষ করে শেষ দিনের আয়োজনের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। শেষদিনে মঞ্চস্থ হচ্ছে ‘লটারী’, যেখানে অভিনয় করছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কলাকুশলী। এই নাটকটি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হচ্ছে ‘নতুনের উৎসব’। ভবিষ্যতে আরও নতুন কিছু সামনে আনার প্রত্যয়ে।

প্রসঙ্গত, ২৯ নভেম্বর এই উৎসবের উদ্বোধনে প্রধান অতিথি হিসেবে নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাসির উদ্দিন ইউসুফ। সভাপতিত্ব করেন নাগরিকের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসবের আহ্বায়ক অভিনেত্রী সারা যাকের।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিদের নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন অভিনেত্রী-নির্দেশক সামিনা লুৎফা নিত্রা, তনিমা হামিদ, আইরিন পারভীন লোপা, সাধনা আহমেদ, হৃদি হক ও সাধনা আহমেদ।