বুকে জ্বালা-পোড়া নিয়ে ১৪ নভেম্বর থেকে দ্বিতীয়বারের মতো থেকে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন এ চিত্রশিল্পী।
অধ্যাপক একিউএম রেজার নেতৃত্বে গঠিত এ মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- মো. সাদিকুল ইসলাম, চন্দ্র প্রকাশ, এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ফাহমিদা বেগম।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় এক বৈঠকে মুর্তজা বশীরের শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা।
বোর্ডের বরাতে চিত্রশিল্পীর মেয়ে মুনীরা বশির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবার হার্ট ও কিডনির অবস্থা স্থিতিশীল আছে কিন্তু ফুসফুস সাংঘাতিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে। এটা কিউরেবল না, এটাকে বুস্টআপ করা সম্ভব না। বাকি জীবনটা অক্সিজেনের ওপরই নির্ভর করতে হবে। “
চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতাল থেকে তাকে দিন তিনেক পর বাসায় নেওয়া হবে বলে জানান মুনিরা।
“বাসায় নিয়ে খুব সীমিত পরিসরে উনাকে চলাফেরা করতে হবে। বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। উনার ন্যূনতম অক্সিজেন লেভেল ৮৫ মিলিমিটার রাখতে হবে। অন্যথায় যে কোনো সময় পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।”
এর আগে শ্বাসকষ্ট নিয়ে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে মুর্তজা বশীরকে। বছর দুয়েক আগেও একবার আইসিইউতে নেওয়া হয়েছিল তাকে।
বহু ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছোট ছেলে মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালে ঢাকার রমনায় জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
বিমূর্ত বাস্তবতার চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ শিল্পী মুর্তজা বশীরের ‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘পাখা’ ছাড়াও অনেক উল্লেখযোগ্য চিত্রমালা রয়েছে।
‘রক্তাক্ত ২১শে’ শিরোনামে ভাষা আন্দোলন নিয়ে ‘লিনোকাট’ মাধ্যমে এঁকেছেন প্রথম ছবি। পেইন্টিং ছাড়াও ম্যুরাল, ছাপচিত্রসহ চিত্রকলার বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি কাজ করেছেন।
‘টাটকার রক্তের ক্ষীণরেখা’ শিরোনামে বইতে নিজের লেখা কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন মুর্তজা বশীর। ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা উপন্যাস ‘আলট্রামেরিন’। মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও গবেষণা করেছেন তিনি।
চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ১৯৮০ সালে একুশে পদক পেয়েছেন তিনি; স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন ২০১৯ সালে।