চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে ‘বাদ পড়ছেন’ সেই ভারতীয়

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের চিত্র সম্পাদক মো. কালাম, যার ভারতীয় পরিচয় ‘গোপন করা হয়েছিল’।    

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2019, 03:08 PM
Updated : 8 Nov 2019, 03:09 PM

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সভাপতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মিজান উল আলম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একজন বিদেশি নাগরিক কোনোক্রমেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবেন না। তাকে অবশ্যই বাদ দেওয়া হবে।

“তাকে বাদ দিয়ে তার জায়গায় নতুন কাউকে নেওয়া হতে পারে আবার সেই জায়গা শূন্যও থাকতে পারে। এটা তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।”

বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৭ সালের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘সেরা সম্পাদক’ হিসেবে কালামের নাম ঘোষণা করা হয়, যিনি ভারতীয় নাগরিক।

কেবল বাংলাদেশি নাগরিকরাই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও পুরস্কারজয়ীদের তালিকায় ভারতীয় নাগরিকের নাম আসায় সমালোচনা শুরু হয়।

চলচ্চিত্রটির প্রযোজক কালামের আসল পরিচয় গোপন করে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে পুরস্কারের জন্য আবেদন করেছিলেন বলে জানান জুরি বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার।

বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কোনো বিদেশিকে দিইনি। ওখানে ফরমে উল্লেখ থাকে কে কোন দেশের। প্রযোজক তার পরিচয় গোপন করেছে। সে বলেছে, সে বাংলাদেশের নাগরিক। যেহেতু সে বাংলাদেশের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছে সেহেতু আমরা ধরে নিয়েছি, সে বাংলাদেশের নাগরিক।

“কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সে বাংলাদেশের নাগরিক না। সে ভারতীয় নাগরিক হয়ে বাংলাদেশের ঠিকানা ব্যবহার করায় আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

কালামের ছবিটি তার ফেসবুক থেকে নেওয়া

চলচ্চিত্র পুরস্কারের আবেদনে ‘ভুলে’ বাংলাদেশি হিসেবে ভারতীয় নাগরিক কালামের নাম পাঠানোর কথা স্বীকার করে জুরি বোর্ডের সভাপতিকে পাঠানো চিঠিতে ক্ষমা চেয়েছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক সানী সানোয়ার ও পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি।

বিষয়টি নিয়ে জুরি বোর্ডের সভাপতি মিজান উল আলম বলেন, “সে (কালাম) যদি বিদেশি নাগরিক হয়ে থাকে তাহলে তাকে তো আর দেওয়া সম্ভব না। আমাদের নীতিমালায় এটি নাই। শুধু বাংলাদেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের উৎসাহিত করার জন্যই এই পুরস্কার।

“বিদেশিদের দিলে দেখা গেল, বিদেশিরাই সব পেয়ে গেল কিন্তু বাংলাদেশের কেউ পেল না। বেসরকারি পুরস্কার বিদেশিরা পেতে পারে, কিন্তু জাতীয় পুরস্কার মানেই নিজেদের।”

পুরস্কার বিভ্রাটের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার পর জুরি বোর্ডের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়; সোমবার অফিস খোলার পর মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জুরি বোর্ডের সদস্যদের বৈঠক হতে পারে বলে জানা গেছে।

কালামের জায়গায় নতুন কাউকে পুরস্কার দেওয়া হবে নাকি ২০১৭ সালের পুরস্কারে ‘সেরা সম্পাদক’ ক্যাটাগরিই বাতিল করা হবে, তা তথ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান জুরি বোর্ড সভাপতি।

এর আগে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘নিয়তি’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হিসেবে হাবিবের নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি সেই চলচ্চিত্রে কাজই করেননি। পরে সমালোচনার মুখে হাবিবকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। হাবিবের জায়গায় নতুন আর কাউকে পুরস্কার না দিয়ে সেই ক্যাটাগরিই বাতিল করা হয়েছিল।