বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৭ সালের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের জন্য ‘সেরা সম্পাদক’ হিসেবে মো. কালামের নাম ঘোষণা করেছে; যিনি একজন ভারতীয় নাগরিক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পুরস্কারের জন্য চলচ্চিত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল সেখানে জানানো হয়েছিল, ‘কেবল বাংলাদেশি নাগরিকগণ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবেন।’
তাহলে চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকায় কালামের নাম এলো কীভাবে?
বিষয়টি নিয়ে নিজেদের দায় এড়িয়ে একে অপরের দিকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক সানী সানোয়ার ও জুরি বোর্ডের সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজার।
২০১৭ সালের পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি গুলজার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি (কালাম) যে একজন বিদেশি সেটা তাদের জানাই ছিল না।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রযোজক সানী সানোয়ার।
তিনি বললেন, তারা আবেদনের তালিকায় মো. কালামের নামই দেননি। নাম জমা না দেওয়ার পরও তিনি কীভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন, তাও তিনি জানেন না।
“আমাদের যখন নামগুলো প্রস্তাব করতে বলা হলো, প্রত্যেকটা সদস্যের এনআইডি ও পাসপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। সেই হিসেবেই আমরা জমা দিয়েছিলাম। সেক্ষত্রে ওটা (উনার নাম) তো প্রস্তাবেই ছিল না। আমার যতটুকু মনে পড়ে।”
“যেহেতু এটাতে ন্যাশনালিটির একটা বাইন্ডিংস আছে। নট অনলি দ্যাট, একটা পেপারসও আমাদের দিতে হবে। সেখানে উনার নামটা দেওয়ার কথা না, সেটা কীভাবে হলো বা অন্য কোনোভাবে নামগুলো উনারা নিয়ে নেয় কি না..যে আমরা দিইনি।”
সানী সানোয়ারের বক্তব্য অবহিত করা হলে মুশফিকুর রহমান গুলজার পাল্টা প্রশ্ন করেন, “ওরা আবেদনে নাম না দিলে ওরা (সেন্সর বোর্ড) নাম পেল কোথায়?”
গুলজার বলেন, “নিরপেক্ষ বিচারের জন্য মার্কিংয়ের সময় কারও নাম আমাদের দেওয়া হয় না, শুধু পদবি দেওয়া হয়। সেভাবেই আমরা বিচার করেছি, কারও নাম দেখিনি।”
রোববার সেন্সর বোর্ডের অফিস খোলার পর বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা জানালেন গুলজার।
গুলজার বলেন, “আমরা না, প্রয়োজনে এটির বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। এটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না। আমাদের দায়িত্ব হলো ছবি দেখা। অফিশিয়ালি কাগজপত্র চেক করে মন্ত্রণালয়।”
কলকাতার বাসিন্দা কালাম বাংলাদেশের ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছাড়াও ‘পোড়ামন ২’, ‘দহন’সহ বেশ চলচ্চিত্র সম্পাদনা করেছেন। তার সম্পাদিত কলকাতার চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘বস’ ‘খোকা ৪২০’, ‘খোকাবাবু’, ‘বিন্দাস’, ‘পান্থার’, ‘কিডন্যাপ’, ‘শেষ থেকে শুরু’।
চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক এবারই প্রথম নয়; গত বছরও পুরস্কার ঘোষণার পরপরই বিতর্ক উঠেছিল।
২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘নিয়তি’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হিসেবে হাবিবের নাম ঘোষণা করা হলেও তিনি সেই ছবিতে কাজই করেননি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে হাবিব বলেছিলেন, “এর মাধ্যমে আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমি হাস্যকর পাত্র হয়ে গেলাম।”
সমালোচনার মুখে সেবার চলচ্চিত্র পুরস্কারের তালিকা থেকে ‘সেরা নৃত্য পরিচালক’র ক্যাটাগরিই বাদ দেওয়া হয়েছিল।