ক্যানসারের চিকিৎসায় ভারত যাচ্ছেন সুজেয় শ্যাম

প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত একাত্তরের যুদ্ধদিনের কণ্ঠযোদ্ধা সুজেয় শ্যাম ক্যানসারের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ভারতের ভেলোরের নারায়ণী হাসপাতালে যাচ্ছেন।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2019, 10:32 AM
Updated : 31 Oct 2019, 10:32 AM

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ৪ নভেম্বর মেয়ে রুপমঞ্জুরি শ্যামকে নিয়ে ভেলোরের উদ্দেশ্যে রওনা করবেন । টানা মাস দুয়েক চিকিৎসা শেষে ২ জানুয়ারির দেশে ফিরবেন। ক্যানসারের পাশাপাশি দাঁতেরও চিকিৎসা নেবেন।

তিনি বলেন, “মাস ছয়েক আগে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা নিয়েছিলাম। চিকিৎসকরা ২৮টির রেডিওথেরাপি ও ওষুধ দিয়েছিলেন। বর্তমানে ওষুধ বন্ধ আছে। ছয়মাস পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনে আবারও ওষুধ দেবেন।”

বছরখানেক আগে কিডনির জটিলতা নিয়ে নারায়ণী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ক্যানসার ধরা পড়ে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

১৯৪৬ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামকে সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি।

দশ ভাই বোনের মধ্যে সুজেয় শ্যাম ষষ্ঠ। তার বাবা, মা ও ভাই বোনেরাও বেতারে গান করতেন।

গিটার বাদক ও শিশুতোষ গানের পরিচালক হিসেবে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান চট্টগ্রাম বেতারে কর্মজীবন শুরু হয় সুজেয় শ্যামের।পরে তিনি ঢাকা বেতারে যোগ দেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থাকাকালে মোট নয়টি গানে সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম, যেগুলো একাত্তরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাওয়া হয়েছিল।

এর মধ্যে রয়েছে ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘ওরে শোনরে তোরা শোন’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আজ রণ সাজে বাজিয়ে বিষাণ’। ছিল বিশ্বপ্রিয়র লেখা ‘আহা ধন্য আমার’, কবি দিলওয়ারের লেখা ‘আয়রে চাষী মজুর কুলী’।

তার সুর করা গানের মধ্যে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’ এবং ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গান দুটি যে কোনো জাতীয় দিবসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে।

১৯৬৯ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সুজেয় শ্যাম। ঢাকাই চলচ্চিত্র সংগীতে অবদানের জন্য তিনবার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বাংলাদেশ বেতারের প্রধান সঙ্গীত প্রযোজক পদ থেকে ২০০১ সালে অবসরে যান সুজেয় শ্যাম।

এরপর ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত ৪৬টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান’ শিরোনামে একটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তিনি।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে আরও ৫০টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান-২’ নামে আরেকটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন শিল্পী।

‘টুনাটুনি অডিও’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।