গ্লিটজ: চলচ্চিত্রের মুক্তির আগে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন; কেমন লাগছে?
তিশা: খুবই ভালো লাগছে। আমার প্রতিটা সিনেমা মুক্তির আগেই প্রচারণায় বেশ সময় দেই। প্রচারণার সময়ই মূলত সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়। বাকি সময় আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
গ্লিটজ: নির্মাতা অরুণ চৌধুরীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘আলতা বানু’ আপনার করার কথা ছিল; তবে সেটা হয়ে উঠেনি। ওটা করতে না পেরেই কি ‘মায়াবতী’ চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন নাকি দুইটিই করতে চেয়েছিলেন?
তিশা: ‘আলতা বানু’র শুটিংয়ের সময়ে আরেকটি সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে আনফরচুনেটলি সিনেমাটি করা হয়নি। তারপর এই সিনেমার কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছিল তখনই অরুণ দাদা বলেছিলেন, ‘অনেক আগে আমি বলে রাখছি, এই সিনেমাটি করতেই হবে।’ তারপরে আমরা গল্প নিয়ে বসলাম; গল্পটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার।
গ্লিটজ: এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন আপনি; মায়া রূপে তিশার জার্নিটা কেমন ছিল?
পুরো টিম আছে, ক্যামেরার পেছনের যারা ছিলেন, দৌলতদিয়ার সেই মানুষগুলো ও সহশিল্পীদের সহযোগিতায় আমি কাজটা করতে পেরেছি। এক হাতে তালি বাজে না; একার পক্ষে একটি সিনেমা ভালো করা সম্ভব না। এটি একটি টিমওয়ার্ক।
এই চরিত্রটা নিয়ে আমি চিন্তা করেছি, ওরা এভাবে হাঁটে, এভাবে কাঁদে, এভাবে হাসে, ওদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা এই রকম হবে।
গ্লিটজ: এ চলচ্চিত্রে আপনার বিপরীতে পেয়েছেন নবীন অভিনেতা ইয়াশ রোহানকে; অনস্ক্রিন রসায়ন দর্শকরা পর্দায় দেখবে। অফস্ক্রিন রসায়ন কেমন আপনাদের?
গ্লিটজ: ইয়াশের অভিনয় নিয়ে আপনাকে যদি মূল্যায়ন করতে বলা হয়…
তিশা: আমার কাছে মনে হয়েছে, ও শতভাগই দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অভিনয় কেমন করেছে, সেটা দর্শকদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। অভিনয়ের ক্ষেত্রে ওর কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। এই সিনেমায় ও একদম ন্যাচারাল অভিনয় করেছে। ও যা সেটাই পর্দায় তুলে এনেছে। চলচ্চিত্রটির জন্য ও যে খাটুনি করেছে সেটা দর্শকরা দেখে আপ্রিশিয়েট করবে।
গ্লিটজ: হলিউড, বলিউডে প্রায়ই নারীপ্রধান চরিত্রের চলচ্চিত্র দেখা মিললেও ঢালিউডে এই ধরনের চলচ্চিত্রের সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। কারণ হিসেবে কী দেখছেন?
তিশা: এটা অনেক কঠিন প্রশ্ন। কম হওয়ার কারণ আমি জানি না। কিন্তু এখন হচ্ছে, আগামীতে আরও হবে এটা নিয়ে আমি আশাবাদি। বাকিটা কেন, কি কারণে বিশদ আলোচনায় যাব না। আমি বলব, বাংলাদেশে এখন বিভিন্ন ধরনের সিনেমা হচ্ছে। সেটার ফিমেইল ওরিয়েন্টেড হোক কিংবা মেইল ওরিয়েন্টেড হোক। সুন্দর সুন্দর গল্পের চলচ্চিত্রে দর্শক হলমুখী হচ্ছেন।
গ্লিটজ: পাশ্ববর্তী দেশে সোনালী বোস, জয়া আখতারদের মতো নির্মাতারা আছেন; পুরুষপ্রধান চরিত্রের বিপরীতে নারী চরিত্রগুলোও সমান সুযোগ পাচ্ছে…
তিশা: তাদের কাছে আসলে গল্পটাই আসলে নায়ক। সেই গল্পটার উপর নির্ভর করেই চরিত্রগুলো ভাগ করা হচ্ছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশেও এই বিষয়গুলো হচ্ছে। সুন্দর একটি গল্পকে কেন্দ্র করেই চরিত্র সাজানো হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা আরও বাড়বে। দেশের যে সিনেমাগুলো পাইপলাইনে আছে সবগুলোই কনটেন্ট বেসড।
গ্লিটজ: ‘মায়াবতী’ দর্শকদের কী বার্তা দিচ্ছে?
তিশা: ‘না মানে না’।
গ্লিটজ: ‘মায়াবতী’র প্রেক্ষাপটে এর ভাবসম্প্রসারণ কেমন?
গ্লিটজ: ‘নো মিনস নো’ ট্যাগলাইনে নির্মাণ করা হয়েছে ‘মায়াবতী’। একই ধরনের বার্তা নিয়ে বলিউডে ‘পিঙ্ক’ চলচ্চিত্র হয়েছে। ওটার সঙ্গে কোনো অ্যাসোসিয়েশন আছে?
তিশা: ওটার সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন আছে এটা আমি বলব না। কারণ ‘পিঙ্ক’ আমি দেখেছি আর এই সিনেমায় অ্যাক্টিং করেছি। ওটার সঙ্গে এটা একেবারেই মিল নেই। তবে মেসেজটার মিল আছে। সেই মেসেজটা পৃথিবীর সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য; ইউনিভার্সাল ট্রুথ। মেসেজের মিল থাকতে পারে কিন্তু গল্পের কোনো খুঁজে পাওয়া যাবে না।
গ্লিটজ: আপনার চরিত্রের প্রয়োজনে দৌলতদিয়ার দৃশ্যধারণ হয়েছে সিনেমার; সেখানে শুটিংয়ের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল?
তিশা: টানা দশ-বারোদিন শুটিং হয়েছে সেখানে। শেষদিন শুটিংয়ের সময় পাশেই একটি মার্ডার হয়েছিল। পরে পুলিশ এসে আমাদের নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়। সেদিন আমরা দ্বিধায় ছিলাম, শুটিং করতে পারব কি না। প্রশাসনসহ ওখানকার জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সেইদিনের শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফিরি আমরা।
গ্লিটজ: ‘মায়াবতী’ মুক্তির পর কোন চলচ্চিত্রের শুটিং করবেন?