গণ্ডি ছবির শুটিংয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতেই এবার বিশাল হৈ চৈ। কারণ, প্রথমটি অবশ্যই সব্যসাচী চক্রবর্তী নিজে। ফেলুদা বলে কথা! দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের আরেক সদাসবুজ অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে অভিনয়। এবং যা না বললেই না, তা হল- জন্মদিনের উৎসব।
Published : 10 Sep 2019, 06:19 PM
এসব বিষয়ের ছিটেফোঁটা চলে এল তাকে শুটিং স্পটে পেয়েই। ছোটখাটো আড্ডার মাঝে সব্যসাচী বলে দিলেন তার এবারের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা।
৯ সেপ্টেম্বর ছিল এবারের মতো গণ্ডির শুটিংয়ের শেষ দিন। যদিও ইউনিটের ইচ্ছা রাত দশটার মধ্যে প্যাক আপ করার। তবে কাজ মনে মতো করার জন্য সময় গুনলে তো আর হয় না।
পরিচালক ফখরুল আরেফীন খানের নির্দেশনায় সব্যসাচী শট দিয়ে যাচ্ছেন যখন, তখন ঘড়ির কাঁটা এগারো ছুঁই ছুঁই। তারপরেও শুটিংবাড়িতে উত্তেজনার কমতি নেই। কারণ এটি ছিল গণ্ডির তৃতীয় পর্যায়ের শুটিংয়ের সব্যসাচীর উপস্থিতির শেষদিন। পরদিন তিনি উড়াল দেবেন নিজের ঘরে।
গ্লিটজও পৌঁছে গেল সব্যসাচীর ব্যস্ত শিডিউলের দিনে।
শুটিং শেষে মুখোমুখি হতেই গ্লিটজের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছিল- এবারের ভ্রমণ এবং কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে। বিশেষ করে জন্মদিন পালন নিয়ে।
সব্যসাচী চক্রবর্তী হেসে বলেন, “এবারের শুটিং এবং বাংলাদেশে আসা অবশ্যই স্পেশাল। কারণটা আমার জন্মদিন। এর আগে আর মাত্র একবারই কোনো সেটে আমার জন্মদিনের কেক কাটা হয়েছিল। তাও ফেলুদার সেটে। মজার ব্যাপার হল- আমার আর সন্দীপ রায়ের জন্মদিন একই দিনে। তাই সেবার বেশ ঘটা করেই জন্মদিন করা হল। আর এবার। সেই ৩ তারিখ থেকে কেক কাটছি। ৮ তারিখ – মানে আমার জন্মদিন পর্যন্ত কত যে কেক কাটলাম। কেক খেতে খেতে একেবারে দাঁতের বারোটা বাজিয়ে দিলাম একরকম।”
গণ্ডির ছবির সেটে কলাকুশলীসহ সব্যসাচী
সিনেমার কাজ করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন এই উত্তরে তিনি বলেন, “অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। ইউনিটের চেহারা নতুন। অনেককে নতুন করে চিনলাম। কাজ করলাম। ভালো লাগলো। তরুণদের উপস্থিতি দেখে সিনেমা নিয়ে আশা বেড়ে গেছে আমার কয়েকগুণ। যতটুকু কমতি আছে, তা মনে করি কাজ করতে করতে আরেকটু ‘ঘষামাজা’ হলে ঘাটতি মিটে যাবে। কারণ অভিজ্ঞতাই তো দক্ষতাকে পোক্ত করে।”
সব্যসাচীর এই কথা বলার ফাঁকেও তখন ছবি তোলার ধুম। সারাদিন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে, তারপরে শুটিং সেরেও যখন ক্লান্তি নেই, স্বাভাবিক ভাবেই ফেলুদার আলাপ আসতে পারেই।
তার সঙ্গে ফেলুদার পরে পর্দার তোপসে চরিত্রে অভিনয় করা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়-ও ফেলুদা হয়েছেন। বাংলাদেশের আহমেদ রুবেলও হয়ে গেছেন ফেলুদা।
কেমন লাগল তাদের ফেলুদা হওয়া?
এ প্রসঙ্গে তিনি আবারও হাসিমুখে বললেন, “একটা সময় জায়গা ছেড়ে দিতেই হয়। সৌমিত্র ফেলুদা করার পরেই আমি করেছি। আমার পরে পরমব্রত করেছেন। বাংলাদেশে ফেলুদা হয়েছে। কেউ জায়গা না ছাড়লে তো নতুনরা আসতে পারবে না। অবশ্যই এই বিষয়টি ইতিবাচক যে যুগ যুগ ধরে ফেলুদা কারও না কারও মাঝে বেঁচে আছে এবং থাকবে।”
এবার সীমানার এপাড়ে ওপাড়ে অভিনয় করা বা কাজের কোনো পার্থক্য চোখে পড়ার না পড়া দিয়ে শেষ করলেন ছোট্ট আলাপটি।
সব্যসাচী বললেন, “তেমন কোনো পার্থক্যই নেই। কারণ কাজ সবাই মন দিয়েই করছেন। কারও কাজের ক্ষেত্রে ঘাটতি নেই। যে যত নিজেকে বিলিয়ে দেবে তার কাজ তত ভালো হবে। আমি আশা করি, সীমানা যাই হোক। প্রতিটা কাজই ভালো হোক, সুন্দর হোক।
‘ভুবন মাঝি’ খ্যাত ফাখরুল আরেফীন খানের দ্বিতীয় সিনেমা গণ্ডির সেট থেকে আপাতত এইখানেই গ্লিটজকে বিদায় জানালেন দুই বাংলায় অন্যতম জনপ্রিয় ‘ফেলুদা’ সব্যসাচী চক্রবর্তী। তখন ঘড়ির কাঁটা অপর তারিখে পৌঁছে গেছে প্রায়।
এরপরের শিডিউলে আরেকবার আড্ডার আমন্ত্রণ জানালেন এবারই।
উল্লেখ্য, এর আগেও বাংলাদেশে সব্যসাচী এসেছেন আরেকটি সিনেমার শুটিংয়ের জন্য। আফসানা মিমি পরিচালিত সেই অসম্পূর্ণ সিনেমাটির নাম ‘রান’।
তবে গণ্ডির পরিচালক জানালেন, নির্ধারিত সময়েই সিনেমাটির কাজ শেষ হবে।
এই সিনেমায় সব্যসাচী চক্রবর্তী, সূবর্ণা মোস্তফার সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন অপর্ণা ঘোষ, মাজনুন মিজানসহ অনেকেই।