চেহারার জন্য কেউ এমন চরিত্রে ডাকেনি: সব্যসাচী

ফাখরুল আরেফিন খানের পরিচালনায় নির্মিত হচ্ছে চলচ্চিত্র ‘গণ্ডি’। যেটার প্রথম ধাপের চিত্রায়ণ শেষে দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হল সোমবার। তার আগে রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে এক জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে কলাকুশলীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন নির্মাতা।

রুদ্র হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2019, 11:53 AM
Updated : 3 Sept 2019, 09:05 AM

চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করছেন কলকাতার অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার এই চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। তাদের দু’জনকে ঘিরেই এগিয়েছে গল্প।

পরিচিতি সভায় চলচ্চিত্রটিতে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কিছুটা স্মৃতিকাতর ও বিনয়ী হয়ে পড়েন ‘ফেলুদা’খ্যাত সব্যসাচী।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ কমই এসেছে জানিয়ে তিনি বললেন, “আরেফিন ভাই যে আমাকে এ ছবির জন্য ভাবলেন, এটাই আমার কাছে আশ্চর্য লেগেছে। কেননা আমি সারাজীবন হয় পুলিশ, নয় গুণ্ডা, নইলে গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করে যতদূর আসা সম্ভব হয়েছে, এগিয়েছি। প্রথম জীবনে হয়ত দু’একটা করেছি। তবে চেহারার কারণে আমাকে আর কেউ এমন চরিত্রে ডাকেনি।”

ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে অভিনেতা হিসেবে সবার আগে নির্মাতার আগ্রহ, মানসিকতা ও সততাকেই গুরুত্ব দেন সব্যসাচী। গণ্ডি’র ক্ষেত্রেও নির্মাতার সেদিকটিই তাকে আকৃষ্ট করেছে।

“আমার কাছে মানুষটা বড়, যে সিনেমাটা বানাতে যাচ্ছে।”

১৯৯২ সাল থেকে সিনেমায় অভিনয় করছেন সব্যসাচী। বাংলা সিরিয়ালেরও পরিচিত এই মুখ অভিনয় করেছেন শতাধিক বাংলা, হিন্দি ও তামিল ছবিতে।

‘গণ্ডি’ সন্ধ্যায় স্মৃতিকাতর সব্যসাচী বললেন, “আমার যা চেহারা, আমার তো অভিনেতা হওয়ার কোনো চান্সই ছিল না। আমার অভিনয় গুণ অনেক কম ছিল। কিন্তু আমি জানি না কেমন করে হয়ে গেল। অনেক মার খেয়েছি, বকা খেয়েছি, অনেক ঘাম ঝরিয়েছি, পরিশ্রম করেছি। যতখানি শিখেছি তা আমার শিক্ষক, বাবা-মা, পিসে মশাই এবং পরিচালকদের কাছ থেকে শিখেছি! প্রত্যেকের গাইডেন্স নিয়মিত অনুসরণ করেছি।”

ভারতের কলাকার ও আনন্দ পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেতা বললেন, “আমিতো উঁচুমাপের অভিনেতা নই। দয়া করে লোকে কাজ দেয়। কয়েকটা জায়গায় আমাকে ভালো লেগে গেছে বলেই লোকে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে অনেক এক্সাইট ফিল করে, অনেক অটোগ্রাফ নেয়। তার মানে যে, আমি খুব ভালো অভিনয় করতে পারবো তার কোন গ্যারান্টি নেই।”

“অনেকে আমাকে বলে আমার গলা বেশ ভারি। আমার নাকি আবৃত্তির গলা। ভারি গলা হলেই যে আমি ভালো আবৃত্তি করতে পারব তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তাহলে আজকে যদি আরেফিন ভাই মনে করেন, আমি সাংঘাতিক জানি এবং আমার নামেই ছবি চলবে এটা কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না। এই ছবিটা চলবে এর পেছনে যে টিমটা আছে তাদের প্রত্যেকের পরিশ্রমের ফলে,” বললেন এই অভিনেতা।

সহঅভিনেতা হিসেবে সুবর্ণা মুস্তাফাকে পেয়েও দারুণ উচ্ছ্বাসিত তিনি।

তার কথায়, “আমার সৌভাগ্য যে, আমি এমন একজন অভিনেত্রীর বিপরীতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি যিনি অসম্ভব জনপ্রিয়, অসম্ভব জানেন। আরও একজন আছেন আমার সহ-অভিনেতা হিসেবে। তাদের সঙ্গে কাজ করে আমি এতটুকু বুঝেছি যে, আমি হ্যাঁ বলে ভুল করিনি।”

৮ সেপ্টেম্বর সব্যসাচী অভিনেতার জন্মদিন। এই উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে আগেই কেক কেটে তার জন্মদিন উদযাপন করে ‘গণ্ডি’ টিম। জন্মদিনে বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতার প্রশংসায় মেতে ওঠেন তিনি। দুই দেশের চলচ্চিত্রের বিনিময় নিয়েও নিজের আক্ষেপ জানান।

সব্যসাচী বলেন, “কেনো যে এখানকার ছবি ওখানে যাচ্ছে না, ওখানকার ছবি এখানে আসছে না জানিনা। হয়ত কোনো রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে। এই সীমান্তের বাধা যদি দূর হয়ে যায় আমরা একসঙ্গে অনেক ভালো ছবি বানাতে পারবো।”