দেড়শ প্রেক্ষাগৃহে প্রজেক্টর বসাচ্ছেন শাকিব, মামলার হুমকি জাজের

দেশের সচল দেড়শ প্রেক্ষাগৃহে প্রজেক্টর ও সার্ভার বসাচ্ছে চিত্রনায়ক শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2019, 11:15 AM
Updated : 6 August 2019, 11:30 AM

তাদের এই উদ্যোগে সায় রয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির। তবে জাজ মাল্টিমিডিয়া বলছে, ‘চুক্তিপত্র ভেঙে জোরপূর্বক’ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রেক্ষাগৃহগুলোতে প্রজেক্টর বসালে আদালতে যাবেন তারা।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরই) সংবাদ সম্মেলন করে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের উন্নত প্রজেক্টর ও সার্ভার বসানোর প্রস্তাব অনুমোদনের কথা জানায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।

সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, এ বিষয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে হল-মালিকদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হবে।

সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সচল প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা ১৭৪টি।

এর মধ্যে ১৫০টি প্রেক্ষাগৃহে প্রজেক্টর ও সার্ভার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন এস কে ফিল্মসের অন্যতম প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল।

অন্যদিকে জাজ মাল্টিমিডিয়া দাবি করছে, ইতোমধ্যে সচল ও বিভিন্ন উৎসবে চালু রাখা প্রায় ৩১২টি প্রেক্ষাগৃহের সঙ্গে চুক্তিপত্র করে সার্ভার ও প্রজেক্টর বসিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে তারা।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটির সিইও অলিমুল্লাহ খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চুক্তিপত্র ভেঙে জোরপূর্বক আমাদের প্রেক্ষাগৃহে প্রজেক্টর ও সার্ভার বসানো হলে মামলা করব।”

তার এই হুমকি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শাকিবের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইন আদালত কি শুধু তাদের একার আছে নাকি আমাদেরও তো আছে?”

“ব্যবসা কি ওরাই করবে, আর কেউ করবে না? আমরা তো আর বলছি না, জাজের মেশিন খুলে ফেল।…জাজের সঙ্গে তো আমাদের কোনো সম্পর্কই নাই, ওরা মামলা কী কারণে করবে? আমরা হল-মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি।”

৩১২টি প্রেক্ষাগৃহের সঙ্গে চুক্তি থাকার কথা স্মরণ করিয়ে খোকন বলেন, “ওনারা কিসের ভিত্তিতে কার হলে প্রজেক্টর মেশিন বসাচ্ছেন? আমাদের অনুমতি ছাড়া তারা কীভাবে প্রজেক্টর বসাবেন সেটা জানি না, আমাদের কাছে চুক্তিপত্র আছে।

“আমরা এখনও যে হলগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ওনারা যদি এখন জোরপূর্বক মেশিন উঠিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তো বলা যায় না।”

জাজ মাল্টিমিডিয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, “মাস তিনেক আগে হল মালিকদের চিঠি দিয়ে জাজ মাল্টিমিডিয়া জানিয়েছিল, তারা এখন আর প্রজেক্টর ভাড়া নেবে না কিন্তু বিজ্ঞাপনের পয়সাটা পুরোপুরি নিয়ে নেবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে দরকষাকষির জন্য সিইও খোকনের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছিলাম, কিন্তু তিনি আসেননি।”

তবে খোকন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নাহ, পুরোপুরি মিথ্যা কথা। আমাদের ডাকাই হয়নি।”

সুদীপ্ত বলেন, “পত্রপত্রিকায় জাজের মালিকের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ দেখে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম।…মাঝখানে অনেকেই প্রজেক্টর মেশিন বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু পরিস্থিতির পরিবেশের কারণে। পরে শাকিব আমাদের এই প্রস্তাবটি দেন।”

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সমিতির কার্যনির্বাহী সভায় শাকিবের প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয় বলে জানান তিনি।

তবে সেই সভায় সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ ছিলেন না; সংবাদ সম্মেলনেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। সাধারণ সম্পাদক কাজী শোয়েব রশীদ সেই সভায় উপস্থিত থাকলেও সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না।

সংবাদ সম্মেলনে এসকে ফিল্মসের কারিগরি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন হাওলাদার জানান, ১৫ বছরকে লক্ষ্য ধরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই প্রজেক্টর ও সার্ভার আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭টি প্রেক্ষাগৃহে তাদের প্রজেক্টর বসিয়ে ৩টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

শিগগিরই বাকি প্রেক্ষাগৃহগুলোতেও প্রজেক্টর বসানোর পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন, সহ-সভাপতি আর এন ইউনুস রুবেল, সহকারী সাধারণ সম্পাদক শরফুদ্দিন এলাহী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল।