বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে: উদীচী

বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠি।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2019, 12:12 PM
Updated : 16 June 2019, 05:58 PM

দীর্ঘদিন যাবত বাজেটে সংস্কৃতিখাতে ন্যুনতম ১ শতাংশ বরাদ্দ দাবি করে আসছে সংস্কৃতিকর্মীরা। কিন্তু বরাবরের মতোই  জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সে দাবি প্রতিফলিত হয়নি। এ নিয়ে সারাদেশেই সংস্কৃতিকর্মীদের মনে হতাশা বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানা আলোচনা-সমালোচনায় সে সুর ফুটে উঠেছে। রোববার সংস্কৃতি সংগঠন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

বর্তমান সরকার নিজেদের সংস্কৃতিবান্ধব সরকার দাবি করে আসলেও ‘বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে বরাবরের মতোই উপেক্ষা করা হয়েছে’ বলে মনে করছেন তারা। তারা বলেন, “মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ নির্মুলে সারাদেশে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার কথা সরকারের দায়িত্বশীল লোকজনই বিভিন্ন সময় বলেছেন। অথচ সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে তাদের কথা বা প্রতিশ্রুতির কোনো প্রতিফলন চোখে পড়েনি। উপরন্তু গতবারের চেয়ে এবার এ খাতের বরাদ্দ কমেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

“একটি সমৃদ্ধ জাতি ও সভ্যতা বিনির্মাণে সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন যে প্রভাবক ভূমিকা রাখে, সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ কমিয়ে সরকার সে সত্যকে অস্বীকার করেছে। বাজেটের আকারের সঙ্গে সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অপ্রতুল। অথচ গোটা বাজেটে লুটেরা অর্থনীতিকে উৎসাহিত করতে নানা ধরনের প্রণোদনা ও সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব আনা হয়েছে।”- প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতের বাজেট ধরা হয়েছে ৫১২ কোটি টাকা। যা গতবারের বাজেট বরাদ্দের চেয়েও কম। এর মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি খাতকে চরম অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে বলে মনে করে উদীচী।

সংস্কৃতিখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দের যৌক্তিকতাও তুলে ধরেছে উদীচী। 

মানুষের মনোজগতে দেশাত্ববোধের জাগরণ, প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি, অসাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টি এবং কল্যাণমুখী বিশ্বমানস গঠনে সংস্কৃতি চর্চার ধারা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে তারা কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে সরকারের প্রতি।

“শিল্প-সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় পাঠ্য করা, স্কুলে স্কুলে সঙ্গীত, নৃত্য, নাট্যকলা, চারুকলার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি রয়েছে সংস্কৃতিকর্মীদের। সেইসঙ্গে জেলা-উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমিগুলোকে আরো শক্তিশালী করা, কাজের পরিধি বাড়ানো, জনবল নিয়োগ, মিলনায়তন নির্মাণ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করে সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। কেন্দ্র থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করতে হবে।”

দেশের প্রতিনিধিত্বশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংস্কৃতি কর্মী ও নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে অবিলম্বে সংস্কৃতি খাতের বরাদ্দ বাড়ানো এবং তা যথাযথভাবে খরচ করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।