ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি বরিশালে যাওয়ার পথে লঞ্চে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন এফডিসির প্রোডাকশন বয় সাদ্দাম। অভিযোগ ওঠে লঞ্চে মলম পার্টিদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতার প্রতিবাদ করায় লঞ্চকর্তৃপক্ষের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন তিনি। তাকে মেরে নদীতে ফেলে দেয়া হয় বলে অভিযোগ শিল্পীসমাজের।
ঘটনার দিন, ‘ফারহান-১০’ নামের একটি লঞ্চে করে বাড়ি ফিরছিলেন বলে গণমাধ্যমকে সাদ্দামের ভগ্নিপতি মো. মাইনুল। রাত আড়াইটায় সর্বশেষ তাকে লঞ্চকর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার বাক-বিতণ্ডার কথা মুঠোফোনে অবহিত করেন সাদ্দাম।
জানা যায়, পরবর্তিতে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সুগন্ধা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২ জুন দুপুরে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জর উপজেলার কেদারপুর গ্রামের লোকজন মরদেহটি নদীতে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
এর আগে ৩ জুন মগবাজারের মুক্তিযোদ্ধা গলির সামনে এক মানব্বন্ধন আয়োজন করে শিল্পী-কলাকুশলীরা।
বুধবার নিহত সাদ্দামের পরিবারসহ প্রায় পাঁচশতাধিক শিল্পী ও কলাকুশলীরা হাতে প্লে-কার্ড নিয়ে সাদ্দাম হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মানব্বন্ধনে অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যাদের কাঁধের উপর আমরা মিডিয়া কর্মীরা দাঁড়িয়ে থাকি, তাদেরই একজন সাদ্দাম। আমরা চাই এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার হোক।”
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, “নাটকের স্বার্থে দীর্ঘদিন যারা আমাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে তেমনই একজন সাদ্দাম। তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে, এটি সহ্য করার নয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হলো। আমাদের মিডিয়ার প্রত্যেকটি সংগঠনের প্রত্যেকটি সদস্য এখানে এ হত্যার বিচারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি। সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।”
তিনি বলেন, “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, এ সরকারের প্রতি আস্থাশীল, আমরা চাই দ্রুত সরকার এ হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করুক।”
প্রডিউসার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন দোদুল বলেন, “সাদ্দাম খুব কর্মঠ এবং ভালো ছেলে ছিলেন। তাকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। কষ্টে বুক ভেঙে যায়, তাকে এভাবে মেরে ফেলা হলো। এমন হত্যার বিচার কাজও যথাযথভাবে করা হচ্ছে না। হত্যাকারীদের হাত দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে যতোই লম্বা হোক, আমরা মিডিয়াকর্মীরা, দেশের সাধারণ মানুষ সে দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ভেঙে ফেলবো। আমরা আশা করছি, সরকার দ্রুত তার হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদক্ষেপ নিবেন।
অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, “শুধু সাদ্দাম বলেই নয়, আমরা শিল্পীসমাজ প্রতিটি হত্যকাণ্ডের বিরুদ্ধে, সমাজের প্রতিটা মানুষ ভালো থাকুক তাই চাই। সাদ্দামের হত্যাকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। দ্রুত এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।”
মানব্বন্ধনে বক্তব্য রাখেন নির্মাতা শিহাব শাহিন, মোস্তফা কামাল রাজ, নাট্যকার বৃন্দাবন দাস, অভিনেত্রী রোজি সিদ্দিকি, তানিয়া আহমেদ, মুনিরা মিঠু, রুনা খান অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, সাজু খাদেমসহ আরো অনেকে।