সুবীর নন্দীর গান সংরক্ষণের আশ্বাস

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর গান সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2019, 04:52 PM
Updated : 22 May 2019, 04:52 PM

বুধবার শিল্পকলা একাডেমীতে আয়োজিত সুবীর নন্দীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আশ্বাস দেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পরিবারের সহায়তায় সুবীর নন্দীর গানগুলো আমরা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।”

বরেণ্য এ শিল্পীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে শিল্পীর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানান তিনি।

এ শিল্পীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার কথা জানিয়ে বলেন, আগামীতেও অস্বচ্ছল শিল্পীদের পাশে থাকবে সরকার। সেই সঙ্গে শিল্পীদের কল্যাণে গঠিত ট্রাস্ট্রকে আরও কার্যকরী করে তোলা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

সুবীর নন্দীকে নিয়ে একটি স্মরণিকা প্রকাশের পরিকল্পনার কথা জানান লাকী। শিল্পকলার আয়োজনে আগামী সেপ্টেম্বরে তিন দিনব্যাপী সুবীর নন্দী সংগীত উৎসব করার ঘোষণাও দেন তিনি। পাশাপাশি এ শিল্পীর একটি পোট্রয়েট শিল্পকলা একাডেমিতে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সুবীর নন্দীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন অতিথি ও দর্শকরা।

সুবীর নন্দীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন আরেক বরেণ্য শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী।

তিনি বলেন, “সুবীর নন্দীর অনেক আগেই একুশে পদক পাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু সেই মহত্ব প্রদর্শন করতে পারিনি। সুবীর অনেক আত্মমর্যাদাবোধে সম্পন্ন একজন মানুষ ছিলেন। গানের জন্যই শ্রোতাদের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন তিনি।”

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুবীর নন্দীর অসংখ্য গানের সহশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, “সুবীর নন্দী সম্পর্কে, তার গান সম্পর্তে নতুন করে বলার কিছু নেই। তিনি কতটা মানুষ অমায়িক ছিলেন-সেটা সবাই জানেন। ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবিতে ‘রহমত ভাই, তোমায় নাম দস্তখত শেখাতে চাই’ গানে কণ্ঠ দিয়েছিলাম আমরা। তারপর অসংখ্য গানে কণ্ঠ দিয়েছি একসেঙ্গে।

“সুবীর নন্দীর গান যেন সরকারিভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। যাতে নতুন প্রজন্ম শুনতে পারে, আমাদের শিল্পীরা কেমন গাইতেন।”

সুবীর নন্দীর পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী পূরবী নন্দী ও মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী।

বাবাকে নিয়ে মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী বলেন, “একমাসও হয়নি বাবা চলে গেছেন। শুরুতে আমার মনে হতো বাবা কোথাও ঘুরতে গেছেন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, বাবা আর আসবেন না। ছোটবেলায় শিল্পকলায় আসতাম বাবার হাত ধরে। কিন্তু এবার এলাম বাবাকে ছাড়া। সেই সুযোগটা আর হবে না।

“বাবার অভিমান ছিল, একুশে পদক পাননি বলে। বাবা বলেছিলেন, মরণোত্তর কিছু পেলে সেটা নিস না। বাবা পেলেন পদকটা, কিন্তু মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে।”

স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, আবিদা সুলতানা, শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, মকসুদ জামিল মিন্টু, মানাম আহমেদসহ আরও অনেকে।