মস্কো’র উৎসবে ‘শনিবার বিকেল’-এর জয়জয়কার

মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দুটি পুরস্কার জিতলো মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’। মস্কো থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্লিটজকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা নিজেই।

রুদ্র হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2019, 11:31 AM
Updated : 25 April 2019, 11:31 AM

মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী দিনে দু’টি পুরস্কার জিতলো মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’। বাংলাদেশে হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনার অনুপ্রেরণায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি এ উৎসবে জিতে নিয়েছেন রাশিয়ান ফিল্ম ক্রিটিক ফেডারেশন জুরি প্রাইজ ও কমেরসান্ত প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড।

উৎসবে উপস্থিতি থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন নির্মাতা ফারুকী নিজেই। তার সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রটির দুই অভিনয় শিল্পী জাহিদ হাসান ও নুসরাত ইমরোজ তিশা, ছবির অন্যতম প্রযোজক আনা কাচকো এবং সিনেমাটোগ্রাফার আজিজ জাম্বাকিয়েভ।

প্রচলিত রীতি অনুযায়ী প্রতি বছর সকালবেলা ঘোষণা করা হয় বিভিন্ন ক্রিটিক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ইন্ডিপেন্ডেন্ট জুরিদের অ্যাওয়ার্ড এবং সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হয় অফিশিয়াল জুরিদের অ্যাওয়ার্ড। এই বছর ইন্ডিপেন্ডেন্ট জুরি অ্যাওয়ার্ড ঘোষনার আসর বসে মস্কো'র নভিআরবাত স্ট্রিট -এ অবস্থিত অক্টোবর সিনেমা হল -এ।

এখানেই উদ্বোধনী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রের। ফারুকী জানান, শো দেখতে বিদেশী দর্শকের পাশাপাশি বেশ কিছু বাংলাদেশীও উপস্থিত ছিলেন। এবং ছবি দেখা শেষে দর্শকরা মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে ছবির জন্য তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করেন। শো শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দর্শকরা ছবির পরিচালক এবং কলাকুশলীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

পুরস্কার জয়ের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় মস্কো থেকে ফারুকী গ্লিটজকে বলেন, “আমরা খুবই খুশী, কেননা এ ছবিটা আমাদের জন্য খুবই কঠিন ছবি ছিলো টেকনিক্যালি এবং ইমোশনালিও। আমরা খুবই আনন্দিত যে, ছবি দেখা শেষে যখন আমরা এক্সিট গেটে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখন রাশিয়ান দর্শকরা আমাদের চারদিকে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে হাতে তালি দিচ্ছিলো, তারা বলছিলো, ‘আমরা কেঁদেছি, খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম’। এ জিনিসটা খুব ভালো লেগেছিলো। একটা ছবি যখন দর্শকদের ইমোশনালি অ্যাটাচ করে, এর চাইতে আনন্দের আর কিছু নাই। এটা খুবই আনন্দের যে, শুধু দর্শক নয়, ক্রিটিকদেরও ছবিটা স্পর্শ করেছে। তারা আমাদের দুটি অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে। আমরা খুশী এবং কৃতজ্ঞ।” 

আন্তর্জাতিক আসরে চলচ্চিত্রটির এমন জয়জয়কার হলেও দেশের মাটিতে চলচ্চিত্রটির স্থান হয়নি প্রেক্ষাগৃহে। দেশের সেন্সরবোর্ড চলচ্চিত্রটিকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি এর সেন্সর সার্টিফিকেট স্থগিত রেখেছে।

চলচ্চিত্রটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফিলিস্তিনের অভিনেতা ইয়াদ হুরানি, অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, জাহিদ হাসান, মামুনুর রশীদ ও কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।

২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর ছবিটির মহড়া শুরু হয়। শুটিং শুরু হয় গত বছর ৫ জানুয়ারি। রাজধানীর কোক স্টুডিওতে চিত্রায়িত হয় চলচ্চিত্রটি। ছবিটি বাংলাদেশ থেকে প্রযোজনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ছবিয়াল এবং ভারতের শ্যাম সুন্দর দে।