বছর দুয়েক ধরে তার ভক্তদের মনে সেই পুরানো শঙ্কা, আবারো হারালেন অর্ণব? বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাকে ঘিরে নানা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হলেন তিনি।
গ্লিটজ: ভক্তদের শঙ্কা, আপনি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছেন..
অর্ণব: আমার হারানোর স্বভাব আছে, মাঝে মাঝে একটু ডুব মারি। হারানোর সময় শেষ, এখন কাজের সময়।
গ্লিটজ: কবে নাগাদ কক্ষপথে ফিরছেন?
অর্ণব: ইতোমধ্যে কাজ তো শুরু করে দিয়েছি। কলকাতায় গিয়ে কাজ করব। কলকাতার মিউজিশিয়ানদের নিয়ে কাজের পরিকল্পনা আছে।
গ্লিটজ: ঢাকা ছেড়ে শান্তিনিকেতনে থিতু হওয়ার গুঞ্জনটা তাহলে সত্যি?
অর্ণব: নাহ; একদমই না! মোটেই একেবারে যাচ্ছি না। আমি ফিরবো।
গ্লিটজ: শান্তিনিকেতনে যাচ্ছেন কেন?
অর্ণব: কয়েক বছর ধরে নিকেতনে আমার স্টুডিও ছিল। সেখানে একা একা বসে বোতাম টিপে গান করতে ভালো লাগছে না। সোজা কথা, টাইপ করার মতো মিউজিক্যাল প্রক্রিয়াটাই ভালো লাগছে না; কাজটা তো অনেকদিন ধরেই করলাম। আমার মনে হলো, এবার মিউজিক করা দরকার। নতুন কিছু শেখা দরকার; শেখার শেষ নেই।
ঢাকায় তো বাসা থেকে বের হওয়া যায় না। সবমিলিয়ে ভাবলাম, শান্তিনিকেতনে নিজের মতো করে কাজ করা যাবে। মানুষজনের সঙ্গে মিউজিক করাটা গুরুত্বপূর্ণ।…
গ্লিটজ: সংগীত থেকে দূরে সরে যাওয়ার পেছনে নাকি অভিমানও ছিল?
গ্লিটজ: অভিমানের কারণ কী?
অর্ণব: একদম একঘেঁয়ে হয়ে গিয়েছিল সবকিছু। আগেও বললাম, নিকেতনেও স্টুডিওটাকে খাঁচা মনে হচ্ছিল ক্রমাগত। অনিচ্ছা সত্ত্বেও গান চালিয়ে যেতে হয়েছে আমাকে। জোর করে একটা জিনিস করছিলাম কিন্তু একদমই ভালো লাগছিল না।
টাকার জন্য করছিলাম, না কিসের জন্য করছিলাম- কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এই চাপগুলো এখন কমে গেছে; ফলে ঢাকা থেকে বের হতে পেরেছি। কলকাতায় গিয়ে অন্য মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে পারছি। স্টুডিওর মধ্যে একা একা বসে কাজ করাটা সত্যিই বোরিং।
গ্লিটজ: মাঝে এক স্টেজ শো’র আয়োজকদের সঙ্গে আপনার বিতণ্ডার খবর মিলেছিল…
অর্ণব:…ওটা আমার ভুল ছিল। মাথা গরম থাকলে মনে হয়, আমার কোনো দোষ নেই। আমি যেভাবে ভাবছিলাম, সেটা ঠিক ছিল না হয়তো। ওদের সঙ্গে এখনো কথা হয়। তোমরা সবাই আমাকে যেমন বোঝো; ওরাও আমাকে বোঝে।
গ্লিটজ: বছরখানেক আগে বলিউডে কাজের কথা বলেছিলেন; কাজটা কতটুকু এগোলো?
অর্ণব: নাহ! আমাকে ওরা একবার ডেকেছিল। কিন্তু আমি যাইনি।
গ্লিটজ: সুযোগ পাওয়ার পরও গেলেন না কেন?
অর্ণব: ভয়ে যাইনি। হিন্দিতে গান পারবো? অভ্যাস নাই তো! প্লেব্যাক করা কিন্তু অতো সোজা না। আমি নিজের মতো করে গান লিখে গাইতে পারি। কারণ অনেকদিন ধরে আমার সিস্টেমে বাংলা গান ছিল। কিন্তু প্লেব্যাকে গান রেডি করে তাৎক্ষণিক ইমোশনটা ডেলিভারি দিতে হয়; আর আমার জন্য হিন্দি ভাষা তো আরেকটা বিষয়। বোম্বে ইন্ডাস্ট্রি অনেক দ্রুত কাজ করে। এরকম না, আমাকে গান দেবে আর আমি সময় নিয়ে গাইবো।
ঢাকা আসার পর প্রীতম দা নিজেই ফোন দিয়েছিলেন, গানটা কী করবি? বললাম, ‘গানটা পাঠিয়ে দিন। আমি গেয়ে পাঠাই?’ উনি বললেন, ‘এভাবে কাজ হয় না।’
সেইবার হয়নি কিন্তু সামনে হবে নিশ্চয়ই। আমি যদি ঠিকঠাক থাকি; কাজের মধ্যে থাকি তাহলে আমার মনে হয়, কাজ আসবে।
গ্লিটজ: আপনার হাতে এখন কী কী প্রজেক্ট আছে?
অর্ণব: ‘নোনা জলের কাব্য’ চলচ্চিত্রের মিউজিক ডিরেকশন দিচ্ছি। সুস্মিতা আনিসের জন্য দুইটি নজরুল সংগীত করছি। এর বাইরে রবীন্দ্র সংগীতে আগ্রহী শান্তিনিকেতনের নতুন কিছু আর্টিস্টদের নিয়ে কাজ করব। আমারও শেখা হবে আর ওদেরও কিছু জানা হবে আরকি। ১ মার্চ কেআইবিতে একটি স্টেজ শো আছে।
গ্লিটজ: মাঝে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন; কবে নাগাদ প্রজেক্টটি শুরু করছেন?
অর্ণব: কলকাতায় ছবিটা নিয়েই কাজ করছি। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছি। সবশেষ দুই-তিন বছর তো কিছু করা হয়নি। বললাম না, যে লাইফস্টাইলে ছিলাম সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য টাইম পাচ্ছিলাম না।
দুইবছর ধরে সবকিছু গুছিয়ে অবশেষ মুক্ত হয়েছি; নিজের মতো করে এখন মুভ করতে পারব। চলচ্চিত্রটিও করতে পারব। এখন আমার পিছুটান নেই।
গ্লিটজ: ব্যক্তিগত জীবনে পুরোপুরি গুছিয়ে উঠেছেন?
অর্ণব: হ্যাঁ; নিজেকে নিয়ে আমি এখন পুরোপুরি সুখী।
গ্লিটজ: সবশেষে ভক্তদের জন্য কী বলবেন?
অর্ণব: ভক্তদের জন্যই নতুন করে কাজে নামলাম। নতুন কিছু কাজ নিয়ে শিগগিরই আপনাদের সামনে হাজির হচ্ছি।