মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে লাল সবুজের বেলুন উড়িয়ে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে মেলা’র উদ্ধোধন করা হয়। লাল সবুজ মঞ্চ, তোরণ, ফেস্টুন, সাত বীরশ্রেষ্ঠ্যর সাতটি স্তম্ভে সুসজ্জিত ছিলো মেলা প্রাঙ্গণ।
অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশন করেন ড. অরূপ রতন চৌধুরী, ফকীর আলমগীর, ফরিদা পারভীন, নীলু বিল্লাহ, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, দিনাত জামান মুন্নী, অনিমা রায়, কোনাল, সুর বিহার, সুরের ধারার শিল্পীরা। গাজী আবদুল হাকিমের বাঁশির সুরে ছিল দেশের গান।
রেজানুর রহমানের পরিচালনায় ‘পোস্ট মাস্টার’ নামের একটি মুক্তিযুদ্ধের নাটক মঞ্চস্থ হয়। আবৃত্তি পাঠ করেছেন মাহিদুল ইসলাম। আরো ছিল চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে শিশুকিশোরদের অংশগ্রহণে বিজয় দিবসের চিত্রাংকন পর্ব।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেছেন মেলায় আগত বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিশিষ্টজনরা। উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধাহত ও খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
নাট্যজন আতাউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “আমি বিজয় দেখেছি এবং আজও দেখেছি। এই হিসেবে আমি খুবই সৌভাগ্যবান। আমরা যখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানি শাসন দ্বারা নিষ্পেষিত তখন ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পরম্পরায় এক মহামানব এলেন। তিনি জাতিকে নিয়ে গেলেন হিমালয়ের শিখরে। তার নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেলাম। তার নেতৃত্বের প্রখরতা দেখলাম স্বচক্ষে। কিন্তু তারপর আবার শকুন পড়লো এই বাংলায়। হায়েনার চোখ পড়লো। শক্ত হাতে তা দমন করলেন তার সুযোগ্য কন্যা। আমরা দেখছি তার নেতৃত্বের প্রবলতা। সামনেও বিজয় দেখছি।”
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা অভিনেতা ও নাট্য নির্মাতা মামুনুর রশিদ বলেন, “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র সেইসময়ে সারা দেশের মানুষের মধ্যে এক অভূতপূর্ব প্রেণার সৃষ্টি করেছিলো। যারা যুদ্ধে গিয়েছিলেন তাদেরকে যেমন প্রেরণা যুগিয়েছে এমনকি যারা গৃহ অভ্যন্তরে ছিলেন তাদেরকেও। সেই প্রেরণা এতোদিনে অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে, আমরা আশা করবো আবার খুব দ্রুত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হতে পারবো।”
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, “এ বছর বিজয় দিবস সময়ের কারণেই একটু ভিন্ন এবং অর্থবহ। এ বছর জাতীয় নির্বাচনে যে সরকার আসবে, সেই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে দেশের অব্যাহত উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সেই সরকারের অধীনেই আমরা পালন করব বিজয়ের পঞ্চাশ বছর, সুবর্ণজয়ন্তী।”
অনুষ্ঠানটি বিকেল ২টা পর্যন্ত সরাসরি সম্প্রচার করেছে চ্যানেল আই।