জনপ্রিয়তার জন্য কাজ করি না: ইমরান

‘মধু হই হই আরে বিষ হাওয়াইলা’ গানের শিশুশিল্পী জাহিদসহ প্রত্যন্ত এলাকার অনেক শিল্পীকে প্রাদপ্রদীপের আলোয় তুলে এনেছেন তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পী ইমরান হোসেন।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2018, 01:09 PM
Updated : 11 Sept 2018, 01:46 PM

‘সুতরাং’ নামে একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সমসাময়িক ব্যস্ততা, সামনের পরিকল্পনা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্লিটজের মুখোমুখি হলেন তিনি।

গ্লিটজ: আপনার এখনকার ব্যস্ততা কী নিয়ে?

ইমরান হোসেন: আমাদের একটা টিম আছে; সেখানে কাজ করছি। টিমে আনিকা, মেহরাব, পিন্টু ঘোষ, অটামনাল মুনসহ আরো কয়েকজন আছে। আমরা মিউজিক্যাল ডকুমেন্টারি করছি। টিম নিয়ে সব জায়গায় মুভ করছি।

গ্লিটজ: ‘সুতরাং’ নামে নতুন ব্যান্ড গঠনের খবর মিলেছে। যাত্রা শুরু কীভাবে?

ইমরান হোসেন: আইয়ুব বাচ্চু ভাই ‘সুতরাং’ নামটা দিয়েছেন। এতে আমরা পাঁচজন আছি; পাঁচজনই নরসিংদীর। আমিসহ দলের অন্যান্য সদস্য হলেন- সোহাগ, সামি, লিংকন, তুহিন।

গ্লিটজ: কোন ধরনের ব্যান্ড ‘সুতরাং’?

ইমরান হোসেন: ফিউশন। ফোক নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছি। পাশাপাশি এখন রক নিয়ে কাজ করছি। এখানেও বৈচিত্র্য আনছি। মিউজিক ভিডিও নিয়ে কাজ করব। পাশাপাশি পথশিশুদের নিয়েও কাজ করছি।

গ্লিটজ: আপনি তো নিয়মিত পথশিশুদের নিয়ে কাজ করেন। শুরুটা কবে?

ইমরান হোসেন: ২০১৩ সাল থেকে শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করি।

গ্লিটজ: প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিশুদের তুলে এনেছেন আপনি। কীভাবে কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেন?

ইমরান হোসেন: ফেইসবুকে ইনবক্সে অনেক পিচ্চিদের গানের ভিডিও পাই। সেগুলো থেকে নির্বাচন করি, কাকে নিয়ে কাজ করব। পরে ওদের গ্রামে চলে যাই। লাইভে গিয়ে শুরুতে ওদের পরিচিত করাই। পরে গান শুনি। আমি পারফেকশন নিয়ে কাজ করি। এ পর্যন্ত যাদেরকে ধরেছি প্রত্যেককেই উঠানোর চেষ্টা করেছি। এই জন্যই গতানুগতিক খুব কম কাজ করা হয়। ইউটিউবেও কম ভিডিও আপলোড করা হয়।

গ্লিটজ: শিশুদের নিয়ে এ ধরনের কাজের ভাবনা কীভাবে এল?

ইমরান হোসেন: আমি যদি তিনবেলা ভাত খেতে পারি, তাহলে একবেলা ভাত অবশ্যই আরেকজন মানুষকে খাওয়াতে পারব। আমি যেহেতু মিউজিক করি; তাই আমি চাই, আমার থেকে যারা ভালো গান করে তারা আমার প্লাটফর্মটা নিক।

যে কাজগুলো গতানুগতিক মিউজিশয়ানরা করে না; ওদের চোখে আঙুল দেওয়ার জন্য কাজটা করি। মানে মুরব্বীরা বুঝুক বিষয়টা। তারা অনেক বেশি জনপ্রিয়। তারা কাজটা করলে আরো বেশি ছড়িয়ে যেত। আমি জনপ্রিয়তার জন্য কাজ করি না। নিয়ত থেকে কাজটা করছি।

গ্লিটজ: গ্রামে গিয়ে কাজ করতে গিয়ে তিক্ত কোনো অভিজ্ঞতা আছে?

ইমরান হোসেন: আমি একটা গ্রামে গিয়ে জানলাম, এক শিশুকে অ্যাবিউজ করেন সেখানকার জনপ্রতিনিধি। ওখান থেকে শিশুটাতে তুলে নিয়ে এসেছি। সেই জনপ্রতিনিধিকে একটা শিক্ষা দিয়ে এসেছি।

গ্লিটজ: সিনিয়রদের কারও কাছ থেকে কি কোনো সহযোগিতা পেয়েছেন?

ইমরান হোসেন: ‘বাহবা’ পেয়েছি। অনেক উৎসাহিত করেন পলক (জুনাইদ আহমেদ পলক) ভাই। পাশাপাশি আমার বন্ধু-বান্ধবরাও উৎসাহিত করে।

গ্লিটজ: আপনি ফোক সংগীত নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। বাউলদের সঙ্গে মিশেছেন। কী অভিজ্ঞতা হল?

ইমরান হোসেন: ছোটবেলা থেকেই অনেক ঘোরাঘুরি করি। আমি প্রায়ই বাউলদের বাসায় যেতাম। আমি নেশার বিরুদ্ধে কাজ করছি। তাদেরকে মোটিভ করতাম, ‘আপনারা সুন্দর লিখেন, সুর করেন। আপনাদের গান এতো মানুষ শোনে। আপনারা কেন নেশা করবেন?’

তাদের ছোট্ট একটা বাণী পরিবর্তন করে সমাজে পরিবর্তন আনে। একটা মানুষের দু’টো গান দিয়ে যদি সমাজে সত্য ছড়িয়ে যায়-তাহলে এর থেকে সুন্দর জীবন আর কীভাবে পাবেন?

গ্লিটজ: গানের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?

ইমরান হোসেন: ক্লাস ফোর থেকে। গানের পেছনে আমার নানী সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করেছেন। শিল্পকলা একাডেমিতে প্রণব ঘোষ, বাসন্তি ম্যাডামের কাছ থেকে গান শিখেছি। আমার বেসিকটা নজরুল গীতি। পরে একটু রকের দিকে গেছি, হিপহপের দিকেও গেছি। ২০১১ সাল থেকে কনসার্ট শুরু করি। ২০১৫ সাল থেকে পেশাদারভাবে পুরোদমে শুরু করি। পাশাপাশি ফটোগ্রাফিও করছি।

গ্লিটজ: ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

ইমরান হোসেন: ওদের (পথশিশু) নিয়ে স্ট্রিট ফেস্টিভাল করব। ওদেরকে একটা ভালো পজিশনে নিয়ে যাব। তারা বাংলাদেশকে লিড করবে। আর আমাকে নিয়ে যদি প্ল্যানের কথা বলি, ওদের নিয়েই থাকতে চাই।