গ্লিটজ: নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটছে আপনার। চারপাশ থেকে প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
রোদেলা জান্নাত: আগে খবরটি কাউকে জানাইনি। হঠাৎ করে শুনে সবাই অবাক হয়েছে। শুভেচ্ছা জানিয়েছে। আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ কেউ খুশি হয়েছে, কেউ কেউ হয়নি। আর চারপাশ থেকে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি পাচ্ছি। সবাই শুভকামনা জানাচ্ছে। কিন্তু এতো আমি আশা করিনি। এক রাতের ভেতরে সবকিছু পাল্টে গেল।
গ্লিটজ: আপনি নিউজ প্রেজেন্টার ছিলেন। ওই পেশা ছাড়লেন কেন?
রোদেলা জান্নাত: দেশের বাইরে যাবার আগে একটা বেসরকারি টেলিভিশনে তিন-চার মাসের মতো নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে কাজ করেছিলাম। আরো অনেকদিন কাজ করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু ওই মাসে স্কলারশীপ পেয়ে দেশের বাইরে চলে গেলাম। পরে আর হল না।
গ্লিটজ: ‘শাহেনশাহ’ চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হলেন কিভাবে?
রোদেলা জান্নাত: শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে অনেক আগে পরিচয় হয়েছিল; মালয়েশিয়াতে ওনার এক সিনেমার প্রমোশনের সময়। ওনার অনেক ফ্যানদের মধ্যে সেখানে আমিও ছিলাম। পরে বাংলাদেশে এসে মাঝে-মধ্যে দেখা হত। উনি আমাকে সবসময় অভিনয়ের জন্য উৎসাহিত করতেন।
কিভাবে আমাকে অভিনয়ের অনুশীলন করা উচিত-সেগুলো আমাকে জানাতেন। এগুলো মাথায় রেখেই আমি এগিয়েছি। তিন-চার মাস আগে উনি বললেন, ‘ক্ল্যাসিকাল ড্যান্সের ব্যাকগ্রাউন্ড দিয়ে তো ফিল্ম হবে না। তুমি চলচ্চিত্র নির্ভর নাচ কর।’
বেশ কিছুদিন প্রাকটিস করলাম। তারপর, কী মনে করে শাকিব ভাই এই সিনেমায় নিয়ে নিলেন।
গ্লিটজ: তাহলে শাকিব খানের উৎসাহেই অভিনয় জগতে আপনার পদার্পণ?
গ্লিটজ: শাকিব খানের হাত ধরে উঠে আসা নায়িকারা তার বলয় থেকে বেরুতে পারে না। আপনি পারবেন?
রোদেলা জান্নাত: আমি ইতোমধ্যে একটি আলাদা পেশায় আছি। আপাতত ফিল্ম মানে শুধু ‘শাহেনশাহ’ প্রজেক্ট। অনেক সময় দেখা গেল, আমি ভালো করলাম কিন্তু কেউ আমাকে গ্রহণ করল না। আবার অনেক সময় এড়িয়ে গেলাম কিন্তু সাধারণ মানুষ আমাকে খুব পছন্দ করল।
এই ছবিটার উপরই অনেক কিছু নির্ভর করছে। ফলে একটা মুভি করার আগেই আমি কিভাবে বলব, আমি কারো বলয়ে থাকব কিনা।
উনি আসলে এত বড়মাপের অভিনেতা যে অনেকের মনে হতেই পারে, ওনার সঙ্গেই সবসময় কাজ করব।
গ্লিটজ: ‘শাহেনশাহ’-কে তাহলে আপনি ‘পরীক্ষামূলক’ চলচ্চিত্র হিসেবে নিয়েছেন?
রোদেলা জান্নাত: কিছুটা এমনই। বাংলাদেশে অনেক মেয়ে পাওয়া যাবে, যারা শাকিবের সঙ্গে অভিনয়ের স্বপ্ন দেখেন। আমার কাছে এখন শুধু ‘শাহেনশাহ’-ই গুরুত্বপূর্ণ। এর পরে আমার ক্যারিয়ার কী হবে আমি বলতে পারব না। কিন্তু এই মুভিতে ভালো কাজ করতে হবে। আমার সর্বোচ্চটা দিতে হবে।
গ্লিটজ: চলচ্চিত্রে অভিনেয়শিল্পী কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে কাস্টিং ডিরেক্টর কিংবা ডিরেক্টর থাকেন। কিন্তু আপনি এসেছেন শাকিবের হাত ধরে। কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে তার প্রভাব কেমন দেখছেন আপনি?
গ্লিটজ: এবার অভিনয়ে ফেরা যাক। অভিনয়ের ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন?
রোদেলা জান্নাত: প্রত্যেকটা পেশার জন্য আলাদা আলাদা প্রস্তুতি লাগে। ফিল্মের জন্য বেশ লম্বা সময় ধরে আমি নাচ অনুশীলন করেছি। আজকে চিত্রনাট্য হাতে পেয়েছি। চিত্রনাট্য নিয়ে বসেছি; চরিত্র, কস্টিউম নিয়ে ভাবছি।
গ্লিটজ: অভিনয়ে আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড কী?
রোদেলা জান্নাত: আমার মঞ্চে কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। কিন্তু ছোট যখন ছিলাম তখন ক্লাসিক্যাল নৃত্য করতাম। ওই সময় বিটিভিতে ছোটদের অনুষ্ঠানে নাচতাম। ওটা ওই পর্যন্তই।
গ্লিটজ: তাহলে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করাটা আপনার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠার কথা।
রোদেলা জান্নাত: অনেক বেশি। বিশেষ করে এ চলচ্চিত্রে কিং খান আছেন। আর আমি সাহস করে এগিয়ে গেছি।
গ্লিটজ: দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার ধারণা কেমন?
মালয়েশিয়াতে যখন শাকিব খানের সিনেমার প্রমোশন দেখলাম, তখন আগ্রহী হলাম। যারা পড়াশোনা করি, তারা অভিনয়কে প্রায়োরিটি দেই না। আমরা প্রায়োরিটি দিলে অনেক ডেভলপ হত। সেই জায়গা থেকেই কাজ শুরু করি। আমি জানি না কী হবে কিন্তু আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করে যাওয়া উচিত। এখনকার মুভি আমার খুবই ভালো লাগে।
গ্লিটজ: অভিনয়ে কাকে অনুসরণ করেন?
রোদেলা জান্নাত: বাংলাদেশের অনেক অভিনেত্রীদের আমি ভালোবাসি। তার মধ্যে আছেন শাবানা ম্যাম, ববিতা ম্যাম, শাবনূর আপু।
গ্লিটজ: অভিনয়ে আপনার স্বপ্ন কী?
রোদেলা জান্নাত: সবাই শীর্ষেই নিজেকে চিন্তা করে। আমিও স্বপ্নে নিজেকে শীর্ষেই চিন্তা করি। আবার এটাও চিন্তা করি, আমার কাজের জায়গা ভালো থাকুক। সবাই যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে, সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে। ওর মাঝে একজন সুস্থ অভিনেত্রী হিসেবে বাঁচতে চাই। একদিন তো সবাই মরেই যাব...
ছবি: রোদেলার ফেইসবুক থেকে নেওয়া।