বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঞ্চনাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

৪০তম প্রযোজনা নিয়ে এলো মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত হয়েছে মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2018, 01:17 PM
Updated : 12 August 2018, 01:17 PM

অধ্যাপক আনন জামানের রচনায় মঞ্চনাটক ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নির্দেশনা দিয়েছেন  অধ্যাপক আশিক রহমান লিয়ন।  জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার হলে ১৩ অগাস্ট সন্ধ্যা ৭টা ৩০মিনিটে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে। মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় জানায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত টানা তিনদিন মঞ্চস্থ হবে ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’।  এর মধ্যে ১৪ অগাস্ট ২য় মঞ্চায়ন হবে জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে এবং ৩য় মঞ্চায়ন হবে জাতীয় শোক দিবস ১৫ অগাস্ট পরীক্ষণ থিয়েটার হলে। 

মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের সভাপতি মীর জাহিদ নাটকটি প্রসঙ্গে গ্লিটজকে বলেন,  “দীর্ঘ নয় মাসের গবেষণালব্ধ এ পাণ্ডুলিপিতে জাতির জনককে হত্যার প্রত্যক্ষ পরিকল্পনাকারী রাজনৈতিক ও সামরিক বেনিয়াদের অংশগ্রহণ ও কার্যকারণ উন্মোচিত হয়েছে- যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের জানার অধিকার রয়েছে। একটি ভূখন্ডের স্থপতি মহান নেতার হত্যাকারীদের চেনবার, জানবার, ঘৃনা প্রকাশের অধিকার রয়েছে স্বাধীন নাগরিকদের। অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতিক- মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও সাধারণ মানুষের সাথে তার নিবিঢ় সম্পর্ক, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাষ্ট্র গঠনে তার সত্যনিষ্ট দুর্বার প্রচেষ্টা রচিত হয়েছে এ পান্ডুলিপিতে। ”

তিনি আরও বলেন, “মহান নেতার হত্যাকারী রাজনৈতিক ও সামরিক বেনিয়া আর খুনীদের মুখোশ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক করা এবং খুনীদের ও তাদের অনুসারীদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার প্রত্যয় তৈরীতে ভূমিকা রাখবে এ নাট্য প্রযোজনা। একটি স্বাধীন ভূখন্ডের মহান স্থপতির প্রতি নৈতিক, মানবিক ও রাষ্ট্রিক দায়বদ্ধতা থেকে নয়মাসের গবেষণালব্ধ এ পান্ডুলিপিটি মঞ্চায়নের জন্য আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।”

মীর জাহিদ জানান, দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ এ পান্ডুলিপি পর্যালোচনা ও পাঠচক্র এবং দেড়মাস যাবৎ একটানা এ নাটকের মহড়া চলেছে। চূড়ান্ত মঞ্চায়নের জন্য প্রায় ৪০জন নাট্যকর্মী নিয়মিত অভিনয় ও নেপথ্যে কাজ করেছেন।

নাটকটির নেপথ্য শিল্পীরা হলেন- মঞ্চ, আলো, পোষাক ও আবহসঙ্গীত পরিকল্পনায় আশিক রহমান লিয়ন, এ্যানিমেশনে সৈকত নাসির, আবহসঙ্গীত সম্পাদনায় কাজী মোহাইমিনুল হক, পোস্টার ডিজাইন দেবেন্দু উদাস, রূপসজ্জা শিল্পী শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, টিকেট ব্যবস্থাপনায় সৈয়দ লুৎফর রহমান, প্রচার ব্যবস্থাপনায় সৈকত নাসির ও কাজী সাইফ আহমেদ, প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় কানাই চক্রবর্তী ও বুলবুল আহমেদ, সেট ও প্রপস ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন, প্রযোজনা ব্যবস্থাপক ইকবাল চৌধুরী, মঞ্চ অধিকর্তা কবির আহামেদ, প্রযোজনা  সমন্বয়ক মো: শাহনেওয়াজ, প্রযোজনা অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান ও সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আফজাল হোসেন।

নাটকটিতে অভিনয় করছেন কবির আহামেদ, ফারুক আহমেদ সেন্টু, মোঃ শাহনেওয়াজ, মনিরুল আলম কাজল, পলি বিশ্বাস, সামিউল জীবন, রাজিব হোসেন, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, আহাদুজ্জামান কলিন্স, সুমাইয়া তাইয়ুম নিশা, আরাফাত আশরাফ, স্বপ্নিল, আজহার, পিয়াসী জাহান, কাজী তারিফ, তাজুল রনি, রেদোয়ান, সিয়াম রাব্বি, জুনায়েদ, নূর আকতার মায়া, রাফি, রিফাত হোসেন জুয়েল, ইকবাল চৌধুরী, মীর নাহিদ আহসান ও মীর জাহিদ হাসান।

নাটকটি নির্মাণে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

বাঙালির হাজার বছরের  সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চারত সংগঠন হিসাবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৯টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে তারা। এ পর্যন্ত প্রযোজনাগুলোর মোট ৯৯৯ টি প্রদর্শনী সম্পন্ন হয়েছে। নাটকগুলোর মধ্যে ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক এবং ১টি প্রযোজনার দেড়শতাধিক মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।