‘আন্দোলনের প্রভাবে’ হল বিমুখ দর্শক

দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মুখে ‘নিরাপত্তা জনিত’ কারণে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শক সংখ্যা উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমেছে বলে জানিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি ও হলের ব্যবস্থাপকরা।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2018, 02:22 PM
Updated : 7 August 2018, 02:22 PM

চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্লিটজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, আন্দোলনের প্রভাবে ন্যূনতম ৫-১০ শতাংশের মতো দর্শক কমেছে।

তার মতে, এ ধরনের আন্দোলন হলে তা চলচ্চিত্রে প্রভাব পড়া স্বাভাবিক।

দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে চলছে আমদানীকৃত তিনটি ভারতীয় চলচ্চিত্র। এর মধ্যে আছে শাকিব খান অভিনীত ‘ভাইজান এলোরে’, ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ‘ফিদা’ ও জিৎ-মিম জুটির 'সুলতান: দ্য সেভিয়র'।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর রাজপথে আন্দোলনে নামে ঢাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। ক্রমেই সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে।

আন্দোলনের সময় রাজধানীর সনি সিনেমা হলে চলছিল ‘সুলতান: দ্য সেভিয়র’। আন্দোলনের কারণে ছবিটির কাটতি অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে গ্লিটজকে জানিয়েছেন প্রেক্ষগৃহের কর্মচারী মো. কাশেম।

তিনি বলেন, “গণ্ডগোল মারামারিতে সবাই ভয় পায়। দর্শকরা ভয়েই হলে আসেনি। আমাদের হলে নিম্মশ্রেণীর দর্শক বেশি আসে। ওরা তো আন্দোলন দেখলে ভয় পায়। রাস্তায় বাস চলেনি। তারা ৫০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে আসবে না।”

মো. কাশেম আশংকা করছেন, আসছে ঈদুল আজহার আগে আর দর্শক সংখ্যা স্বাভাবিক হবে না।

দর্শকের অভাবে শিগগিরই ছবিটি নামিয়ে আরেক ভারতীয় ছবি ‘পিয়া রে’ প্রদর্শন শুরু করবে হল কর্তৃপক্ষ।

তার ধারণা, ‘পিয়া রে’ ছবিটিও দর্শকরা দেখতে হলে আসবে না। কারণ কলকাতায় অনেক আগে মুক্তি পাওয়ায় এখন ইউটিউবেও মিলছে ছবিটি। ফলে হলে চলতি সপ্তাহে দর্শক ফেরার সম্ভাবনা খুব কম।

ঢাকার বাইরের প্রেক্ষাগৃহেও ‘আন্দোলনের প্রভাবে’ দর্শক সংখ্যা কমে এসেছে। যশোরে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সিনেমা হল মনিহারের ব্যবস্থাপক আলী আকবর গ্লিটজকে জানান,  আন্দোলনের প্রভাবে পাঁচভাগের মধ্যে দর্শক সংখ্যা এক ভাগে নেমে এসেছে গত সপ্তাহে। প্রেক্ষাগৃহে শাকিব খানের ‘ভাইজান এলোরে’ চলচ্চিত্রটি চলছে।

মঙ্গলবার রাতে তিনি বলেন, “শুক্রবার থেকে দর্শক কমতে শুরু করে। একবার বাধা পেলে তো আর দর্শক ফিরে আসে না। সিনেমার দর্শকদের একটা রেশিও থাকে। দর্শকরা যখন আসতে ভয় পাবে তখন তো আর আসবে না। মানুষ তো সিনেমা হলে আনন্দ করতে আসে। কিন্তু পরিস্থিতি তেমন ছিল না।”

সম্প্রতি রাস্তায় গাড়ি নামলেও আগের মতো দর্শক আর ফেরেনি বলে জানান আলী আকবর। “কাটতি এখনও বাড়েনি। কাটতি কমতেই আছে।”

কাঙ্ক্ষিত দর্শক না পাওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিনেমাটি নামিয়ে ফেলছে হল কর্তৃপক্ষ। পরের সপ্তাহে মুক্তি পাবে ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘পিয়া রে’।

আলী আকবরও শংকা পোষণ করেছেন, ঈদের আগে হয়তো আর প্রেক্ষাগৃহে দর্শক ফিরবে না।