টিভি নাটকের ‘৮২ শতাংশ শিল্পী’ বেকার

টিভি নাটকের ‘রিমোট’ এজেন্সির হাতে চলে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে ছোটপর্দার শিল্পীদের জীবন যাত্রা; দেশের প্রায় ৮২ শতাংশ শিল্পী এখন বেকার বলে দাবি করেছে অভিনয় শিল্পী সংঘ।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2018, 03:21 PM
Updated : 17 July 2018, 06:38 PM

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও অভিনয়শিল্পী আহসান হাবিব নাসিম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্লিটজকে একথা বলেন।

তিনি জানান, টিভি নাটকে বর্তমানে সাড়ে ৮’শ নিবন্ধিত শিল্পী আছেন। এর মধ্যে সাড়ে ৭’শ শিল্পীই বেকার। কাজ করছেন মাত্র দেড়’শ শিল্পী। শতকরা হিসেবে যা ১৭.৬৪ শতাংশ। এর মধ্যেও সবাই নিয়মিত না, কেউ কেউ মাঝে মাঝে কাজ করছেন আবার কেউ অনিয়মিতভাবে কাজ করছেন।

শিল্পীদের দুর্দশার কথা তুলে নাসিম বলেন, “হঠাৎ করে অনেকে দেখছে কাজ নেই। সংসার চালাতে পারছে না, বাসা ভাড়া দিতে পারছে না। শত শত শিল্পী নাটক নিয়ে হতাশার মধ্যে আছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে অন্য কাজের পেছনে ছুটছে।”

গত দুই-তিন বছর ধরে টিভি নাটকের নিয়ন্ত্রণ ‘এজেন্সির হাতে’ চলে যাওয়ার পর থেকে চরিত্রাভিনেতারা কাজ হারিয়েছেন বলে দাবি করেন শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক।

“এজেন্সিই এখন ডিরেক্টর, প্রডিউসার, শিল্পী নির্ধারণ করছে। নাটকের চরিত্রও কমে গেছে। বিশেষ করে চরিত্রাভিনেতাদের কোনো চরিত্র থাকছে না। নাটকের গল্পগুলোতে বাবা-মা, ভাইবোন কিংবা পার্শ্বচরিত্রও নেই। ফলে অভিনয়শিল্পীদের কাজ কমে গেছে।”

ফলে ঘুরে ফিরে গুটিকয়েক অভিনয়শিল্পীই বার বার হাজির হচ্ছেন টিভির পর্দায়।

এজেন্সিগুলোর আধিপত্যের ব্যাখ্যায় নাসিম বলেন, “নাটকের মাঝে যে বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার হয়, সেগুলো মূলত এজেন্সি থেকে আসে। অথবা অনেক সময় চাংক ধরেই কিনে নেয় এজেন্সি। ফলে ওই সময়ে যে কোনো নাটক দেখাতে পারে তারা। চ্যানেলগুলো তো বিজ্ঞাপনের পেছনে ছুটছে। এই সুযোগে এজেন্সি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে প্রবীণ অভিনয়শিল্পী দিলারা জামান গ্লিটজকে বলেন, “আস্তে আস্তে চ্যানেল বাড়ার ফলে কাজের পরিধিও বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু নাটকে তৈরি হওয়ার সংকটের ফলে আলটিমেটলি তা হচ্ছে না। এই সংকট খুব সহজেই কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়, আরও সময় লাগবে।”

হুমকির মুখে থাকা এ শিল্প নিয়ে খুব শিগগিরই নাটককেন্দ্রিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসবেন অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতারা।

নাসিম আশা করছেন, নাটকের নিয়ন্ত্রণ নাটকের লোকের হাতেই ফিরবে। নাটকের মূল্যও নির্ধারিত হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব শিল্পীই কাজে ফিরবেন।