গৌড়ীয় নৃত্যে ফুটে উঠল ‘বুদ্ধচরিত’

মধ্যযুগে বাংলার রাজধানী গৌড়ে যে নৃত্যকলায় উৎপত্তি, তার নতুন ধারায় ‘মহামানব’ গৌতম বুদ্ধের জীবনচরিত তুলে ধরলেন নৃত্যশিল্পী মহুয়া মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2018, 05:20 PM
Updated : 9 July 2018, 05:20 PM

ঋজু দেহভঙ্গির বিচিত্র চলনের সঙ্গে কখনও কবিতা, কখনও নাটিকা আর বাক্যালাপের ছন্দোবদ্ধ এই নৃত্যে ফুটে উঠল মানবমুক্তির পথে বুদ্ধের নানা পন্থা।

সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে মহুয়ার ‘বুদ্ধচরিত’ নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার (আইজিসিসি)।

৯ জুলাই বিশ্ব সংস্কৃতি দিবস উপলক্ষে এই নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছে আইজিসিসি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রবীন্দ্র চেয়ার’ মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নৃত্যনাট্য ‘বুদ্ধচরিত’ নির্মিত হয়েছে সংস্কৃত মহাকাব্য ‘বুদ্ধচরিত’ অবলম্বনে।

মহুয়া মুখোপাধ্যায় জানান, এ নৃত্যের মধ্য দিয়ে তিনি শিল্পী গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বেড়ে ওঠা, তার মাঝে মানুবের মুক্তির চিন্তার উদ্ভব, শান্তির সন্ধানে গৃহত্যাগ থেকে নির্বাণ লাভ পর্যন্ত নানা অধ্যায় তুলে এনেছেন।

বেশ ক’বছর ধরে গৌড়ীয় নৃত্যের বিকাশে কাজ করছেন মহুয়া মুখোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, “যেকোনো শাস্ত্রীয় সংগীতের ভিত্তি হচ্ছে সাহিত্য। তাই সংস্কৃতে লেখা এই মহাকাব্যকে যখন গৌড়ীয় নৃত্যে রূপান্তর করলাম তখন তা এক নতুন রূপে ধরা দিল।”

এর আগে ঢাকার শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘরসহ নানা মঞ্চে গৌড়ীয় নৃত্যের নানা অধ্যায় মঞ্চস্থ করেছেন মহুয়া মুখোপাধ্যায়। নৃত্যটি নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমিতে প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন তিনি।

ক্যানভাসে রোমান্টিসিজম

জীবনানন্দ দাশের কাব্যে রোমান্টিকতার প্রতীক ‘বনলতা সেন’। কাব্যের চরিত্রটি একদিন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠল এক চিত্র শিল্পীর। তাকে আকর করেই বঙ্গললনায় প্রেমময় রূপটি অবলোকন করেছেন শিল্পী সুশান্ত কুমার অধিকারী।

রঙ-তুলিতে মূর্ত বা বিমূর্ত ধারায় তিনি আঁকতে শুরু করলেন বঙ্গ ললনার রোমান্টিসিজম। আটপৌরে বাঙালি নারীর প্রেমময় এমন প্রতিরূপের দেখা মিলবে ‘বনলতা’ শিরোনামের প্রদর্শনীতে।

সোমবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শুরু হয়েছে এই প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ২৭টি ছবি স্থান পেয়েছে।

গ্যালারিতে ছবিতে দেখা গেল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’র ‘লাবণ্য’ ও ‘কেটি’, পরে ‘হৈমন্তী’, নজরুলের ‘নার্গিস’ , ‘সুলতানা’ কিংবা পথের ধারে ‘ঘুটে কুড়ানির’ মধ্যেও শিল্পী সুশান্ত খুঁজে নিয়েছেন প্রেমের আধার সেই নারীকে।

সুশান্ত করণকৌশলে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওয়াশ টেকনিকের ছোঁয়াও দিয়েছেন কিছু ছবিতে। প্রচলিত জলরংয়ে নারীকে না এঁকে তিনি ওয়াশ টেকনিকে তুলে এনেছেন নারীর আটপৌরে জীবনগাথা, ফুটিয়ে তুলেছেন নারীর পারিপার্শ্বিকতা।

সোমবার বিকালে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার।

সুশান্ত অধিকারী বলেন, “প্রেম সব কালে সব যুগে বিরাজমান। সময়ের নিরিখে শুধু বদলে যায় পাত্রপাত্রী। আমি তাই ‘বনলতাকে’ কেন্দ্র করে বাংলার নারীদের রোমান্টিক ও স্নিগ্ধ রূপটিকে তুলে ধরতে চেয়েছি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক সুশান্ত কুমার অধিকারী জানান, এই প্রদর্শনী চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রদর্শনীর দুয়ার।