আসছে তানভীর মোকাম্মেলের ‘রূপসা নদীর বাঁকে’

নির্মাণ কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। ৯০ শতাংশ চিত্রধারণ শেষে জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ চলচ্চিত্রের ডাবিং।  সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শীতেই চলচ্চিত্রটি মুক্তি দিতে চান নির্মাতা।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2018, 02:14 PM
Updated : 25 June 2018, 02:14 PM

সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘রূপসা নদীর বাঁকে’র কাহিনী গড়ে উঠেছে একজন ত্যাগী বামপন্থি নেতাকে ঘিরে, যাকে ১৯৭১ সালে রাজাকাররা হত্যা করে।

বাম আন্দোলনের  এক সময়ের সংগঠক তানভীর মোকাম্মেলের ভাষ্যে, “দেশে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজপ্রগতির আন্দোলনে বামপন্থিদের অনেক ভূমিকা ছিল। কিন্তু তাদের কথা কেউ তেমন বলে না। কিছু কিছু বামপন্থি নেতার ত্যাগ-তিতীক্ষা ও সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল প্রবাদতুল্য।

“ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে এরা কেউ কেউ বিশ-পঁচিশ বছর জেল খেটেছেন। এ ধরনের কিছু পুরনো বামপন্থি নেতাকে আমি কাছ থেকে দেখেছি। তাদেরই একজনের কাহিনি এটি। এ মানুষটিকে ১৯৭১ সালে রাজাকাররা গুলি করে মেরে ফেলে।”

দুই ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ ছবিটিতে তিরিশ দশকের স্বদেশী আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে কমিউনিস্টদের হত্যাসহ বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য ঘটনা  বিপ্লবী জীবনের প্রেক্ষিতে উঠে আসবে।

বিভিন্ন বয়সে বামপন্থি নেতাটির চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান শোভন, খায়রুল আলম সবুজ ও তওসিফ সাদমান তূর্য। খুলনার বৈঠাঘাটা ও ফুলতলা উপজেলার গ্রামাঞ্চলে, দৌলতপুর স্টেশনে এবং কুমিল্লায় ছবিটির শুটিং হয়েছে। ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ ছবিটির চিত্রগ্রহণ করেছেন মাহফুজুর রহমান খান।

সরকারি অনুদানের পাশাপাশি গণঅর্থায়নের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন তানভীর মোকাম্মেল। ছবিটির বাজেট ৯৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সরকার ৫০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দিচ্ছে। যেহেতু এ ধরনের বিষয়বস্তুর একটি ছবির জন্যে তানভীর মোকাম্মেল কর্পোরেট পুঁজির দ্বারস্থ হতে চান না, তাই সরকারি অনুদানের বাইরের অর্থ ‘ক্রাউড-ফান্ডিং বা গণ-অর্থায়নের’ মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। 

তবে, গণ-অর্থায়নে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া না মেলায় কিছুটা চিন্তিত এ নির্মাতা।

এ প্রসঙ্গে তানভীর মোকাম্মেল সোমবার গ্লিটজকে বলেন, “নির্মাণ যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে আমি তৃপ্ত। পুরো ইউনিট যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে। অর্থ সংকটের কারণে যতটুকু আশা ছিল, তা হয়ত সম্ভবপর হয়নি। গণঅর্থায়ন নিয়ে আমরা যতটুকু প্রত্যাশা করেছিলাম তা হয়নি-সে কারণে কিছুটা চিন্তিত। এমনিতে ছবির নান্দনিক জায়গাটা নিয়ে আমরা বেশ তৃপ্ত। নতুন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছে, তারাও বেশ আন্তরিকভাবেই কাজ করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে শীতেই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে।”

চলচ্চিত্রটির দুটি গানের একটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন চিত্রলেখা গুহ ও অন্যটিতে শিশুশিল্পী বৃষ্টি।

চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিবা বাশার, রামেন্দু মজুমদার, চিত্রলেখা গুহ, ঝুনা চৌধুরী, আফজাল কবির, রাজীব সালেহীন, মাসুম বাশার, অলোক বসু, আবদুল্লাহ রানা, মহসিন শামীম, বৈশাখী ঘোষ, শরীফ হোসেন ইমন, মাহমুদ আলম, পার্থ প্রতিম, দেবাশীষ ঘোষ, খন্দকার সোহান, পংকজ মজুমদার, ইকবাল আহমেদ, ইব্রাহীম বিদ্যুৎ, মিলি বাশার, শ্যামল বিশ্বাস, সঙ্গীতা চৌধুরী, স্বপন গুহ, সুশীল সাহা, জাহাঙ্গীর হোসেন, আছিরউদ্দীন মিলন, মেহেদী আল আমীন, আবদুস সেলিম, নবকুমার সরকার, শিশু শিল্পী হিয়া, হিমু ও অন্যান্যরা।

এছাড়া বাংলাদেশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আটজন সাবেক শিক্ষার্থী চলচ্চিত্রটিতে নির্মাতার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন।