আমাদের বিচ্ছেদ এখনও হয়নি: প্রসূন আজাদ

এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সম্প্রতি অভিনয়ে ফেরা ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পী প্রসূন আজাদ শোনালেন, নিজের ক্যারিয়ারের পরিবর্তনের গল্প। আলাপচারিতায় জানালেন, স্বামী মুহাইমিন সানের সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের চলমান প্রক্রিয়ার হালনাগাদ তথ্যও।

সাইমুম সাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2018, 04:21 PM
Updated : 6 May 2018, 10:28 AM

গ্লিটজ:  নিষেধাজ্ঞার এক বছর কাটিয়ে কাজে ফিরে নিজের মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন দেখছেন?

প্রসূন আজাদ: আমার ওয়েট বেড়ে যাওয়ায় অনেক ধরনের চরিত্র করতে পারছি। আগে আমাকে একটু পিচ্চি পিচ্চি লাগত। এখন যেটা লাগছে না। আগে সবাই প্রথমে ধরেই নিত, মেয়েটা আসলে অভিনয় পারবে না। (হাসি)

এখন সেটে যেরকম আপু ডাক শুনি আগে আপু বলে কেউ ডাকত না। বিষয়টা বেশ মজার লাগছে।

গ্লিটজ: ছয় বছরের ক্যারিয়ার অতিক্রমের পর আজকের প্রসূন আজাদকে কিভাবে মূল্যায়ণ করবেন?

প্রসূন আজাদ: আমি এখানে আসব -এটা ভাবনায়ও ছিল না কখনও। আমি এতো দূর আসতে পেরেছি সেটা নিয়েও আফসোস নাই কখনও। আমার মা-বাবাসহ হয়তো অনেকেই ভাবত, আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। সেই জায়গা থেকে বিভিন্ন রকমের চরিত্র ধারণ করতে হচ্ছে। মানুষের ইমোশন নিয়ে আমার কাজ। এটা খুব সহজ বিষয় ছিল না।

আমার ধারণা, যারা সৌভাগ্যবান তাদেরকেই হয়তো সৃষ্টিকর্তা আর্টিস্ট বানান। নিজেকে যথেষ্ট সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি হয়তোবা হতে পারি নাই, অভিনয়শিল্পী হওয়ার চেষ্টায় আছি। একদিন হয়ত হতে পারব।

গ্লিটজ: ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করেছেন কখন?

প্রসূন আজাদ:
আমার ক্যারিয়ারে কোনো খারাপ মুহূর্ত নাই। সবকিছুই আমার শিক্ষা ছিল।

গ্লিটজ: আপনাকে নিয়ে একাধিকবার সমালোচনা হয়েছে। এগুলো আপনার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলেছে কিনা?

প্রসূন আজাদ: আমার বাইরের জগতের থেকে ব্যক্তিগত আবেগের জায়গায় একটা প্রাচীর গড়া আছে। প্রাচীরটা বেশ পুরু। যেখান থেকে ঢিল ছুঁড়লে আমার প্রাচীরের ভেতর ঢুকতে পারবে না। ফলে আমার ক্যারিয়ার পুরোটাই আলাদা।

শৈশবের তুলনায় আমার এখন অবধি তেমন একটা তফাৎ নেই। আমি আসলে আগের মতোই আছি। ক্যারিয়ার নিয়ে খুব একটা তো সচেতন ছিলাম না আগে। ক্যারিয়ার কাকে বলে সেটা বুঝতেই তো অনেক সময় লেগে গেছে। তবে আগের মতো আর উদাসীনতা নেই আমার। এখন আমি বোঝার চেষ্টা করি, কী করতে যাচ্ছি, কেন করতে যাচ্ছি। কাজটা করে আমি সুখী কিনা-সেটাও ভাবি। সর্বোপরি এখন ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করি।

আমার বাবা একটা মজার কথা বলেন, ‘উত্তম কুমারের অনেক ছবিই সুপারহিট ছিল না। কিন্তু আজকের উত্তম কুমার হতে কাজগুলো করে গেছেন।’

কাজের মধ্যে থাকাটা কঠিন জিনিস। দশটা কাজ করলে তো দশটায় ভালো হবে না। কিন্তু একটা তো হবে। সেই একটার জন্যই কাজটা করে যেতে হবে।

গ্লিটজ: ২০১৪ সালে ‘সর্বনাশা ইয়াবা’ চলচ্চিত্র দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক আপনার। পরপর কয়েকটা সিনেমা করেও থিতু হলেন না কেন?

প্রসূন আজাদ: ২০১৪ সালে ওই সিনেমার গল্প, তখনকার প্রসূনের সঙ্গে সামঞ্জস্য ছিল। এখন যে সব গল্প আসছে সেটা আমার মনে হচ্ছে ২০১৮ সালে এসে এই প্রসূনের চরিত্রটা করা ঠিক হবে না। সেজন্যই সিনেমায় একটু বুঝে শুনে কাজ করা উচিত। আমি সিনেমার জন্য রেডি না।

গ্লিটজ: এবার ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ। গত বছরের অক্টোবরে গ্লিটজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বামীর সঙ্গে আপনার বিয়ে বিচ্ছেদ কার্যকর হবে। বিচ্ছেদ কি কার্যকর হয়েছে?

প্রসূন আজাদ:
বিয়ে বিচ্ছেদ এখনও হয়নি।

গ্লিটজ: কোন প্রক্রিয়ায় আছে?

প্রসূন আজাদ: তারপর ওর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আমি বলতে পারব না। বিষয়টি আমি শুনেছি আইনজীবীর কাছ থেকে।

গ্লিটজ: বিচ্ছেদ নিয়ে আপনার অবস্থান কী?

প্রসূন আজাদ: যা হচ্ছে ভালোর জন্যই হচ্ছে। আমি সানের (স্বামী মুহাইমিন সান) সাফল্য কামনা করি। সে জীবনে অনেক বড় হোক। আমাদের পথচলা, প্রেম-ভালোবাসার সময়টুকু ওভাবেই থাকবে। ওই সময়টুকু নষ্ট যেন না হয় সেজন্যই বিয়ে বিচ্ছেদটা হওয়া।

গ্লিটজ: নিজেকে কীভাবে গুছিয়ে নিচ্ছেন?

প্রসূন আজাদ: বিষয়টি কাটিয়ে উঠা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। আমার বন্ধু, ফ্যামিলির সবাই আমাকে যথেষ্ট সমর্থন করেছেন। এক বছর ধরে ভালো আছি।

গ্লিটজ: পরবর্তীতে প্রেমে জড়ানোর ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি সবার আগে ভাববেন?

প্রসূন আজাদ: প্রেম তো থাকতেই হবে। না হলে অভিনয় করব কিভাবে? ধরে দেখলে তো আর হয় না। যে যেমন তেমনটায় যদি আমার পছন্দ হয় তাহলেই হবে।

গ্লিটজ: আপাতত প্রেম নিয়ে ভাবছেন?

প্রসূন আজাদ: না, ভাবছি না। বন্ধুরা যারা আছে যাদের সঙ্গে আমার সময় কাটে । তাদের সঙ্গে আমি খুব সুখী।