প্রতিষ্ঠানটির ৫১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার রাতে ঢাকার ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর উদ্বোধনে এ আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত কবরীকে উত্তরীয় পরিয়ে এবং হাতে স্মারক তুলে দিয়ে বরণ করে নেন সঙ্গীত ভবনের সভাপতি এ কে এম শাহজাহান পাটোয়ারী।
পরে বক্তব্যে সঙ্গীত ভবনের ঐতিহ্য, প্রসার আর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে এ প্রতিষ্ঠানের অবদানের কথা স্মরণ করেন কবরী। বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী কবরী চট্টগ্রামেরই মেয়ে।
“অনেক দিন আমি চট্টগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন। তবে কেন আমাকে খুব ভাবায়, আমাদের সেনাপতি কাবেরীর কাণ্ডারি কে হবেন? কে দেবে আশা? কে দেবে ভরসা?”
১৯৬৬ সালে চট্টগ্রামে ওস্তাদ প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্ত ও তার স্ত্রী বনবীথি সেনগুপ্তা গড়ে তোলেন সঙ্গীত শিক্ষালয় 'সঙ্গীত ভবন'। তাদের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব নেন তাদের মেয়ে কাবেরী সেনগুপ্তা।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের আর নিজাম রোডে ৫১ বছর আগে সঙ্গীতালয়টি যে টিনের ঘরে যাত্রা শুরু করেছিল, এখনও সে অবস্থাতেই আছে। সেখানেই তারা নিরলসভাবে শুদ্ধ সঙ্গীতের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে শত শত ছেলে-মেয়েকে।
প্রতিষ্ঠানটির জীর্ণ দশায় হতাশা প্রকাশ করে কবরী বলেন, “সঙ্গীত ভবন নীরবে সয়ে যাচ্ছে অনেক ব্যথা। চারিদিকে নাগিনরা ফেলছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস। এই ধরনের সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে মাত্র কয়েকটি।
“আমি চট্টগ্রামে নিজে গিয়ে দেখেছি, জীর্ণ দুটি ঘর, ঘরের ছাদ মাথায় ভেঙে পড়ার উপক্রম...ছাত্রছাত্রীরা মেঝেতে বসে সঙ্গীত চর্চা করে। এই শতাব্দীতে এসে স্বাধীন দেশে এ রকম একটি প্রতিষ্ঠানের এই অবস্থা ভাবা যায় না।”
“আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন সঙ্গীত অনুরাগী। মুক্তিযুদ্ধে এই চট্টগ্রামের অবদান ছিল অপরিসীম। সুতরাং এই চট্টগ্রাম সঙ্গীত ভবনকে রক্ষা করতে সরকারকে বিনীতভাবে আবেদন জানাই।”
সঙ্গীত আসরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কয়েকটি রাগ ও তাল পরিবেশন করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।
রাগ ইমন পরিবেশন করেন তাসফিয়া হাসান ও অনিন্দিতা মুৎসুদ্দি। পারমিতা দেব পরিবেশন করেন দাদরা। এরপর কামোদ গেয়ে শোনান দীপ্ত মল্লিক আর মুলতানি পরিবেশন করেন তাওসিফ নূর। সব শেষে কবিরের ভজন গেয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন তুলিপ সেনগুপ্ত।